ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Wednesday, September 13, 2017

মেঘা, কই তুই মা,ঘুমিয়ে পরলি নাকি?

---- মেঘা, কই তুই মা,ঘুমিয়ে পরলি নাকি?
---- না বাবা,ঘুমাই নি, পড়ছি,এসো।
---- মা তোকে না জানিয়ে একটা কাজ করেছি মা।
---- কি করেছ বাবা।
---- আমার এক বন্ধুর ছেলের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি।ছেলে ভাল।ভাল জব করে।তুই সুখে থাকবি মা।তোর কোনো আপত্তি নেইতো মা।
--- আমার কোনো আপত্তি নেই বাবা।কিন্তু আমি আগে লেখাপড়া শেষ করতে চাই।
---- বিয়ের পর পড়বি। ছেলে বলেছে তোকে পড়াবে।
আর কথা বাড়ালাম না।বাবাকে কিছু বলে লাভ হবেনা।
---- মেঘা, উঠ, ৯টা বেজে গেছে।
---- হুম,আরেকটু ঘুমাই মা।
---- কাল বললি ক্লাশ আছে,ডেকে দিতে সকালে।
---- অহহহ আরো আগে ডাকলেনা কেন?
---- সেই কখন থেকে ডাকছি।
আজও দেরি হয়ে গেল।আজও বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবে ওই বজ্জাত স্যার।বিড়বিড় করে ফ্রেশ হতে গেলাম।
রেডি হয়ে নাস্তা না করেই কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
ধুর একটা রিক্সাও দেখা যাচ্ছেনা।তাড়াহু
রোর সময় কিছুই পাওয়া যায়না।অনেকক্ষন পরে রিক্সা পেলাম।
অবশেষে কলেজে পৌছলাম।
---- মে আই কাম ইন স্যার?
---- কটা বাজে মেম?
---- ইয়ে মানে ১০ টা বাজে স্যার।
---- আর কয় মিনিট বাকি ক্লাস শেষ হওয়ার?
----- ১৫ মিনিট স্যার।
----- মেম আপনি ১৫ মিনিট বেশি কেন ক্লাশ করবেন।আপনি একটু অপেক্ষা করুন।আমি যাওয়ার পর ক্লাসে আসবেন কেমন।
মুচকি হেসে উনি ক্লাস নিতে লাগলেন।
ধ্যাত,নাস্তা করে আসলেই ভাল হত।শুধু শুধু এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।আরেকটু দেরি করে আসলে এখানে দাঁড়াতে হতনা।বেটার নাম কত নরম।শুভ্র।কত শীতল নাম।আর উনি কঠোর টাইপের মানুষ।বেটাকে একদিন বাগে পাই,দেখাব কত ধানে কত চাল।
---- এইযে মেম, আপনি এখন ঢুকতে পারেন।আমার ক্লাস শেষ। আর কাল থেকে দেরি করবেন না কেমন।
মুচকি হেসে চলে গেল।রাগে গজগজ করে ক্লাসে গেলাম।
ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় ওদের বললাম
---- বাবা বলেছে আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
----- ওহ,গ্রেট নিউজ।ট্রিট বান্ধবী ট্রিট।< ( হেপি)
---- ছেলে কি করে?( সোহাগ)
---- তোর বিয়েতে পেট ভরে খাব।( সালমান)
----আমি আছি আমার যন্ত্রনায়,আর তোরা আছিস খাওয়া নিয়ে।
---- কেন তোর আবার কি হল?(নুসরাত)
----আমি বিয়ে করতে চাইনা।
---- কেন তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?(সোহাগ)
----- আরে ধুর,এরকম হলে তো তোরা জানতি।
---- তাহলে সমস্যা কি? (সালমান)
---- আমি আগে পড়াশোনা শেষ করতে চাই।নিজের মত করে জীবন সাজাতে চাই।এখন সংসারে জড়াতে চাইনা।
---- তুই ছেলেটার সাথে কথা বলে দেখতে পারিস।( সালমান)
----ওকে দেখি কি করা যায়।
ওদের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসি।
দুপুরে খেয়ে দিলাম এক ঘুম।বিকেলে ঘুম ভাঙল।ভাল লাগছিলনা তাই ভাবলাম একটু নদীর পাড় থেকে ঘুরে আসি।
ফ্রেশ হয়ে পছন্দের জামা পরলাম, হিজাব, হাতে কাচের চুড়ি,পায়ে নুপুর, চোখে কাজল মাখলাম।এগুলাই আমার পছন্দের জিনিস।এগুলার একটা কম হলে মনে হয় সাজ হয়নি।
নদীতে বাতাস বইছে।খুব ভাল লাগছিল।গরমের দিনে এরকম পরিবেশ খুব কম ই পাওয়া যায়।
---- তুমি গনিত বিভাগের মেঘা না?
---- আরে স্যার আপনি, আমার নাম জানলেন কেমনে? আমি তো ক্লাশে ঠিক সময় আসিনি একদিনও। নামতো বলা হয়নি কখনও।
---- মেঘলা রহমান।সবায় মেঘা ডাকে। রাইট?
---- হুম।
অবাক হয়ে গেলাম।মনে মনে সুযোগ খুজতে লাগলাম কিভাবে বেটাকে হেস্তনেস্ত করা যায়।ধুর বুদ্ধি আসছেনা।রাগ হল নিজের প্রতি।
----- স্যার, আপনি থাকেন আমি বাসায় যাব।
----- কেন মন খারাপ নাকি?
---- আপনাকে বলার ইচ্ছা নাই।
---- কেন?
----- এইযে হ্যালো,আমি আপনার ছাত্রী।বান্ধবী নই।যে সব আপনাকে বলতে হবে।যত্তসব।
আর হে শুনেন নেক্সটদিন যদি আমায় বাইরে দাঁড় করান খবর আছে আপনার।
বাসায় চলে আসলাম।ধুর গেলাম ভাল সময় কাটাতে।আর কি হল।অসহ্য।
পরেরদিন ও স্যার আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখলেন।খুব রাগ হল। ক্লাশ শেষ হওয়ার পর দেখি স্যারের গাড়ি রাখা।
---- ওই তোরা দাঁড়া আমি আসছি।
---- কই যাস?( নুসরাত)
----- চুপ করে দাঁড়া, আমি আসছি।
স্যারের গাড়ির কাছে গেলাম।সাইসাই করে বাতাস বের হচেছ। হিহিহিহিহি
---- কাজটা কিন্তু ঠিক করলিনা।(নুসরাত)
---- যা করছি ভাল করছি।প্রতিদিন আমায় দাঁড় করিয়ে রাখে আজ বুঝবে মজা।
ওই দিন মনের আনন্দে বাসায় ফিরলাম।
সন্ধার পর হঠাৎ মনে হল ছেলেটাকে কল দেই।ছেলেটার নাম ও জানিনা।ধুর নাম দিয়ে আমার কি।মায়ের ফোনে নাম্বার আছে।লুকিয়ে মায়ের ফোন থেকে নাম্বার এনে কল দিলাম।
----- হ্যালো,আমি মেঘা,আপনাকে আমার কিছু বলার আছে।
----- এত তাড়াহুরো কিসের আস্তে আস্তে বল।
---- আমি এখন বিয়ে করতে পারবনা।আমি লেখাপড়া আগে শেষ করতে চাই।
---- বিয়ের পর পড়বা।
---- বিয়ের পর না আমি আগেই পড়তে চাই।আপনি এ বিয়ে বন্ধ করেন প্লিজ।
---- ওকে, তোমার কথাই থাক।অনার্স শেষ হওয়ার পর বিয়ে।ঠিক আছে।
---- হুম।
মনে মনে খুশি হলাম যাক, বিয়ের চিন্তা আপাতত দুর হল।বন্ধুদের জানালাম।আর বললাম কাল দেখা করতে।
পরদিন ওদের সাথে দেখা করলাম।ডবল খুশির ট্রিট দিলাম ওদের।কিছুক্ষন আড্ডা দেওয়ার পর যে যার মত চলে গেল।
আমিও বাসায় যাব কিন্তু রিক্সা পাচ্ছিলাম না।হঠাৎ দেখি স্যার দাঁড়িয়ে।রিক্সা খুজছে হয়ত।একটা রিক্সা দেখে স্যার এগিয়ে আসলেন।উনার সাথে অনেক জিনিস পত্রও।আমিও এগিয়ে গেলাম।মজা নেওয়ার ধান্দা আসছে মাথায়।
রিক্সার কাছে যেতে দেখি উনি রিক্সায় উঠে গেছেন।
---- স্যার কেমন আছেন? গাড়ি থাকতে রিক্সায় কেন আপনি?
---- আর বলনা গাড়ির চাকা পাঞ্চার হয়ে গেছে।তুমি এখানে কেন এখন?
---- বাসায় যাব কিন্তু রিক্সা পাচ্ছিনা।আপনি যদি কিছু না মনে করেন তবে আমি যাই এই রিক্সায়।বাবা কল দিচ্ছে বাসায় যাওয়ার জন্য কিন্তু কি করব বলেন।আমার জরুরি দরকার বাসায়।
--- আচ্ছা, ঠিক আছে,তুমি যাও,আমি আরেকটা খুজে নেব।
--- ধন্যবাদ স্যার।
হিহিহিহি।বেটা এখন দেখ এই দুপুরে রিক্সা পাস কিনা।
খুশি মনে বাসায় আসলাম।
বাবা ডেকে বলল, ছেলে জানিয়েছে তোর অনার্স শেষ হওয়ার পর নাকি বিয়ে করবে।আর ওর নাকি খুব পছন্দ হইছে।
ওই ছেলে কখন দেখল আমায়।মনে হয় ছবি দেখছে।অনার্স শেষ করে বিয়ে করতে আমার আপত্তি নেই।
আজ কয়েকদিন দিন খেয়াল করছি শুভ্র স্যার আসছেনা কলেজে।প্রথম প্রথম স্যার না আসাতে ভালই লাগল।আমাকে আর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়না।
আজ প্রায় ১৫ দিন হয়ে গেল, স্যার আসেনা।মনে মনে খুব খারাপ লাগতে শুরু করে।মিস করতে লাগলাম ওই বজ্জাত স্যারকে।
সোহাগকে জিজ্ঞেস করলাম। ও বলল উনি নাকি অন্য কলেজে বদলি হয়েগেছেন।ওইদিন আর ক্লাস করিনি। বাসায় এসেও শুধু উনার কথা মনে হচ্ছে। উনার মুচকি হাসি বারবার মনে হচ্ছে। উনার দাঁড় করিয়ে রাখা কেও মিস করছি।
উনার সাথে কত খারাপ বিহেভ করছি।একবার স্যরি ও বলতে পারলাম না।মনের মধ্যে অপরাধ বোধ কাজ করতে লাগল।
এখন আর কলেজে যেতে ইচেছ হয়না। আমি কি তাহলে উনার প্রেমে পড়ে গেলাম।ধেত এসব কি ভাবছি।আমার বিয়ে ঠিক এইটা ভুলে যাচিছ কেন?
এখন কলেজে গেলে মনে হয় এই বুঝি কেউ বলবে এইযে মেম কটা বাজে,ক্লাস শেষ হওয়ার কয় মিনিট বাকি,বাইরে থাকেন।উফফ কিচ্ছু ভাল লাগছেনা।
একবার যদি উনার দেখা পেতাম।সরি অন্তত বলতে পারতাম।লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদি।হ্যাঁ ওই বজ্জাত কঠোর স্যারকে আমি ভালবেসে ফেলেছি।
কয়েকদিন পর
এক বিকেলে ঘুমিয়ে ছিলাম।মা দেখে বলল রেডি হতে।বাবার বন্ধুর বাসায় আজ নাকি দাওয়াত।কয়েকদিন বাইরে যাইনা,তাই আর না করলাম না।
আমার প্রিয় সাদা শাড়িটা পরলাম। দুহাতে কাচের চুড়ি পরলাম,নূপুর পরলাম,গাঢ় করে চোখে কাজল দিলাম।চুলে বেলিফুলের মালা গুজে দিলাম।
বাবা উনার বনধুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।উনারা গল্প করতে লাগলেন।আমি বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম।খুব সুন্দর বাসা।অনেক গুছাল।
হঠাৎ বাবা ডাকলেন।উনার কাছে যেয়ে আমি অবাক হয়ে যাই
---- এ হচ্ছে শুভ্র।আমার বন্ধুর ছেলে।যার সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছি।
শুভ্র, তুমি তো মেঘাকে চেন ই,
---- উনি মাথা শুধু মুচকি হাসি দিল।
তখন শুভ্রের বাবা বললেন
---- শুভ্র যা,মেঘা কে নিয়ে তোর রুমে যা,মেয়েটা একা একা বোর হচেছ।
শুভ্র আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল
---- চলেন।
---- হুম চলেন।
উনার পিছে পিছে উনার রুমে গেলাম।গিয়েই দরজা লাগিয়ে দিলাম।
---- এইযে, কি পাইছেন আপনি? হে যখন ইচ্ছা বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবেন আবার যখন ইচ্ছা না বলে চলে আসবেন?
---- আমি বদলি হয়ে গেছি তাই আর যাইনি ওই কলেজে।
---- একবার বলে আসার দরকার মনে করেন নাই।
---- আচ্ছা সরি।
--- নো সরি।আর আপনি জানতেন আমাদের বিয়ে ঠিক তারপরও আমাকে বলেন নাই কেন?
---- আসলে আমি শুধু তোমাকে দেখার জন্য ওই কলেজে ঢুকি।কিন্তু তুমি আমাকে সহ্য করতে পারনা বলেই চলে আসি।
---- কচু,আমার কত কষ্ট হইছে যানেন।কোনো ক্ষমা নাই আপনার।
---- এই দেখ কান ধরছি।প্লিজ ক্ষমা কর এবারের মত।
---- হুম ক্ষমা করব তবে
---- তবে আজকেই বিয়ে করতে হবে
---- তাই, অনার্স কি আপনার শেষ?
---- বিয়ের পরে শেষ হলেই চলবে।
---- কেন কেন?
---- আমি আর আমার বজ্জাত স্যারকে চোখের আড়াল করতে চাইনা।
---- আমিও না আমি সবচেয়ে দুষ্টু ছাত্রীকে সব সময় দেখতে চাই।
---- তাহলে ক্লাসের বাইরে রাখতেন কেন?
---- ক্লাস থেকে বাইরে দরজায় দাঁড়ানো আমার মেঘপরি কে খুব ভাল করে দেখা যায় তাই।
---- মেঘপরি কে?
---- কে আবার আমার বউ।ভালবাসি পাগলি
---- আমিও ভালবাসি।
.
.
লেখিকা:মেঘলা রহমান।(অপরাজিতা)

আজ আমার বিয়ে। কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা আমার কি করা উচিত..!

আজ আমার বিয়ে।
আর আমি রিজুর চিরকুটগুলো হাতে নিয়ে বসে আছি।
এই নিয়ে ১৫-২০ বার পড়া শেষ।
কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা আমার কি করা উচিত..!
.
রিজুর সাথে আমার পরিচয় আরো ৪ বছর আগে।আমাদের বাসার নিচের তলায় থাকে রিজুরা।
যেদিন প্রথম বাসায় উঠেছিলো।সেদিন আম্মু রান্না করে পাঠিয়েছিল আমাকে দিয়ে।যেহেতু তারা নতুন উঠেছে সব গুছিয়ে নিতে নিতে রান্না করতে পারেনি।
কলিং বেল চাপতেই একটা দুষ্টু চেহারার ছেলে দরজা খুলে দিলো।আমি খাবার হাতে না দিতেই ছো মেরে নিয়ে রাক্ষসের মত খাওয়া শুরু করলো।
কি অভদ্র ছেলে রে বাবা..! কেউ কিছু না বলে এভাবে খাওয়া শুরু করে নাকি।আমি যখন এসব ভাবছি তখনি সে বলে উঠলো
-কি চিন্তা করছো মিস চশমিস..?আমি পেটুক তাইতো..? শুনো আমি এমনই।
-এই ছেলে আমাকে চশমিস বললে কেনো..?
-তাহলে কি বলবো হুহ.? রুটির মত বড় বড় দুইটা চোখ লাগিয়েছো।আর সুন্দর ফ্রেমের চশমা কি দোকানে ছিলোনা..?
-একদম বাজে কথা বলবেনা বদ ছেলে।
-একশবার বলবো।কি করবে খুকুমনি.?
-আমি খুকুমনি না আমি রাইসা।
- হেহেহে..! রাইসা,,মাছ খায় বাইছা বাইছা।
.
আমার রাগ চরম পর্যায়ে উঠার আগেই আন্টি এসে বদের হাড্ডি টার কান মলে বললো,তোর জন্য কি কোথাও শান্তি পাবোনা.?যেখানে যাবে সেখানেই কারো না কারো পিছে লাগবে।
তারপর আন্টি ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।আমার চেয়ে ২ বছরের ছোট অথচ কেমন পাকা পাকা কথা।
আন্টির জন্য সেদিন বেচে গেছিলো সয়তানটা।
তারপর থেকে শুরু আমার পিছনে লাগা।আমার সাথে ঝগড়া করে কি মজা পেতো ছেলেটা জানিনা।
ওর সাথে ঝগড়া করতে করতে একসময় ভালোই লাগতো ওর ঝগড়া গুলো। ওকে না মারলে মনেহয় পেটের ভাত হজম হতোনা আমার। ওর জন্য আলাদা একটা টান তৈরি হচ্ছিলো আমার ।
সেবার যখন ওর জ্বর হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো আমরা কতটা কষ্ট হয়েছে বোঝাতে পারবোনা।সেই দিনগুলোতে আমি বুঝেছিলাম ও আমার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ আর আমি ওকে কতটা ভালোবাসি।
দিনদিন রিজু ছেলেটা আর ওর পাগলামীর অভ্যাস হয়ে গেছিলো আমার।কিন্তু ও তো আমার ছোট। সেটা ভুলে গেলে চলবেনা।
মুখে বলিনি ঠিকি কিন্তু সবসময় চাইতাম ও সব বুঝে নিক।আর ওর হাসিঠাট্টার আড়ালে সব চাপা পড়ে যেতো।
.
হঠৎ একদিন রিজু এসে লাবন্য নামের একজনের কথা বললো।আমার ক্লাসমেটের বোন।ওকে নাকি রিজু পছন্দ করে আর রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।
রাগে গা জ্বলে যাচ্ছিলো। 
আমি সোজা বলে দিলাম
- দেখ তুই এসব কথা আমাকে আর বলবিনা।এত যখন পছন্দ নিজেই পটা গিয়ে।
- হুহ..! বুঝছিতো তোর হিংসা হচ্ছে। লাবন্য তোর চেয়ে সুন্দরী। ও আমার গার্লফ্রেড হলে তোর তো হিংসা হবেই।
- তোর যা খুশি কর যা।তোর কপালে প্রেম নাই।
- আমি প্রেম করে দেখিয়ে দেবো তোকে।
চশমিশ পেত্নী।
- ওই কি বললি তুই..?? তোকে আজ খুন করেই ফেলবো।
- কচু করবি।হেহেহে
.
.
ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে ছিলাম।চিৎকার করে কাদতে পারলে হতো।কিন্তু সেটাও পারছিলামনা।
ওই হারামিটাকে ইচ্ছা মত কিল ঘুশি দিতে পারলে ঠিক হতো।
.
এই কয়দিন রিজু মনেহয় আমাকে এড়িয়ে চলছে।দেখা হলে আগের মত দুষ্টুমি করেনা। দুই একটা কথা বলেই চলে যায়।
মিস করছিলাম আগের রিজুকে।কিন্তু নিজে থেকে জিজ্ঞেস করে নিজেকে ছোট করতে পারবোনা আমি।
.
হঠাৎ একদিন আমার কাছে এসেই চুল টেনে বললো
- কিরে চশমিস? বলছিলি তো আমার কপালে প্রেম নেই।
- হ্যা বলেছিলাম।তো..?
- লাবন্যকে পটিয়ে ফেলেছি।আজ সারাদিন অনেক ঘুরেছি।একসাথে ফুচকা খেয়েছি।শপিং এ গিয়েছি।
- হাহাহা।একদিনের প্রেমে শপিং করিয়ে নিয়েছে।বাহ বাহ। জানতাম তোর জন্য এমন কেউই থাকবে।
- আরে প্রেম করলে একটু খরচ তো করতেই হবে।
তুই এসবের কি বুঝবি।জীবনে তো একটা প্রেম করতে পারলিনা।
- এসব ফালতু বিষয়ে আমি মাথা ঘামাইনা।
- হুহ আর বলতে হবেনা।কেউ প্রোপোজ করলে তো প্রেম করবি।হাহাহা...
.
রাগ করে চলে আসলাম সেদিন।তারপরে থেকে ওর সাথে দূরত্ব বাড়তে লাগলো।
আমার সাথে দেখা হলেই ওর প্রেমকাহিনী বলা শুরু করতো।তাই ওকে এড়িয়ে চলতাম।কিন্তু ওর আমাকে দেখলেই মনেহয় লাবন্য ছাড়া আর কথা খুজে পেতো না।
আমার শুনতে অসহ্য লাগতো।
এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিলো।আমি ওকে আস্তে আস্তে মন থেকে মুছতে শুরু করেছিলাম।
কিন্তু তখনি মনেহয় ও বেশী করে আমার পাশে ঘুরঘুর করতো।
.
.
ছাদে দাড়িয়ে আকাশ দেখছি।কখন আমার পাশে এসে দাড়িয়ে আছে খেয়াল করিনি।পাশে ফিরতেই দেখলাম রিজু হা করে দাঁড়িয়ে আছে।
- কিরে..! কিছু বলবি..?
- জানিস চশমিশ..? তুই যখন দুইটা বিনুনি করে থাকিস তোকে অনেক বাচ্চা বাচ্চা লাগে।
- তাই..? জানতামনা তো।
- জানিস তোর চশমার ভেতরের চোখ দুটো অনেক মায়াবী। এমনি বোঝা যায়না।কিন্তু অনুভব করা যায়।
- আচ্ছা...!!! তোর লাবন্য তো আমার চেয়ে অনেক সুন্দর।সবসময় তো ওর কথা বলে আমাকে খোঁচা দিস।আজ কি হলো..?
- হুমম ও অনেক সুন্দরী। কিন্তু মায়াবী না।ওর মধ্যে আমি মায়ার চেয়ে অহংকার বেশী খুঁজে পাই।
- কাহিনী কি বলতো..! অন্যকাউকে আবার পছন্দ হলো নাকি? তোর তো বিশ্বাস নেই।
- আরে ধুরর..! আমাদের সব ঠিকআছে। আর আমিতো ওকে ভালোবাসি।মাঝেমধ্যে একটু ঝগড়া হলেও পরে ঠিক হয়ে যায়।
- ও আচ্ছা।
.
.
এরমধ্যে আব্বু একদিন ডেকে বললো আমার জন্য ছেলে দেখেছে।অনেক ভালো চাকরী করে।ফ্যামিলিও ভালো।
আমার কিছু বলার থাকলে বলতে।
রিজুর চেহারাটা চোখের সামনে ভাসছিলো।তবুও বলা যাবেনা।
আব্বুকে বলে দিলাম তোমরা যা ভালো মনেকরো তাই করো।
তারপরে সব অনেক তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো।বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে গেছো।
এর মধ্যে অনেককিছু পাল্টে গেছে।রিজুর সাথে তেমন কথা হয়না।
একদিন কলেজে লাবন্যর সাথে দেখা হয়েছিল।
রিজুর কথা জিজ্ঞেস করতেই চোখেমুখে বিরক্তির ছাপ নিয়ে বললো
আর বলোনা আপু...! রিজু আজকাল আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যাবহার করছে।ইচ্ছা করে ঝামেলা করছে।
আমার সব অসহ্য লাগছে।ওর সাথে সম্পর্ক টা মনেহয় আর আগাবেনা।
সব শুনে আমি অনেকটা অবাক হলাম।রিজু আমাকে তো কিছু বললোনা।
.
.
বিয়ের দিনটা চলে এসেছে।আজ আমাকে অনেক সাজানো হয়েছে।ভারী গয়না আর মেকআপে দম আটকে আসছে।
রিজু একবার মাত্র এলো আমার কাছে।এসেই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে বললো, চশমিশ তুই এতো সুন্দর হলি কবে হুমম..?
আমি একটা বোতল ছুড়ে মারার জন্য তুলতেই দৌঁড়ে পালালো।
অনেকক্ষণ পরে রিজুর ছোটবোন কলি এসে আমার হাতে একটা বাক্স ধরিয়ে দিয়ে কিছু বলার আগেই চলে গেলো।
আমি অনেকটা অবাক হলাম।
আস্তে বাক্সটা খুললাম।
ভেতরে কয়েকটা চিরকুট।আর আমার চশমার একটা ভাঙা ফ্রেম।
একটা একটা করে চিরকুট গুলো পড়তে লাগলাম।
.
"আজ তোকে অনেক সুন্দর লাগছিলো।তোর কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু তুই মারবি তাই পারিনি।"
.
"জানিস চশমিশ, লাবন্যর সাথে থাকলেও আমার মন মনেহয় অন্য কোথাও থাকে।ওর মধ্যে আমি টান অনুভব করিনা।ওর কাছে থাকার চেয়ে তোর হাতে মার খেতেই বেশী ইচ্ছা করে।জানিনা এটা কেমন অনুভূতি।তবে আমি শুধু তোর কাছাকাছি থাকতে চাই।আর তোকে রাগাতে চাই।রাগলে তোর গাল টমেটোর মত হয়ে যায় জানিস?"
সবশেষে আজকের তারিখ লিখা চিরকুট টা খুললাম।আর লিখাগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়লাম।
.
"আম্মু যখন বললো তোর বিয়ের কথা চলছে আমার বিশ্বাস হচ্ছিলোনা।তুই দূরে কোথাও চলে যাবি আমি ভাবতেও পারিনা।আমি মনেহয় তোকে ভালোবাসি।জানি বলবি আমি তোর ছোট।তাইবলে কি ভালোবাসা যাবেনা।আমি তোকে ছেড়ে থাকতে পারবোনা।তুই আমার সামনে অন্য কারো হাত ধরে চলে যাবি।আমি মানতে পারবোনা।তুই বিয়ে করতে পারবিনা শেষ কথা।বিয়ে করলে আমাকে করবি অন্য কাউকে বিয়ে করলে তোর চুল সব ছিড়ে ফেলবো পেত্নী।
সত্যি অনেক ভালোবাসি তোকে।থাকতে পারবোনা আমি।প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাসনা।মরে যাবো আমি।
আমি বাসার পিছনে বসে আছি তুই চলে আয়।দুজনে পালিয়ে যাবো।কয়দিন পরে ফিরে আসলে সবাই মেনে নিবে দেখিস।
.
আমি কি করবো জানিনাহ। ওর কথায় ছেলেমানুষি করে পালিয়ে যাওয়া একদম ঠিক হবেনা জানি।তবুও যেতে ইচ্ছে করছে।
সবাই বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত।সব আয়োজন হয়ে গেছে।একটুপর বরযাত্রী আসবে।আমার হাত পা বাধা।চাইলেও রিজুকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলতে পারবোনা বকুরাম আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি।
কিছু ইচ্ছে সবসময় অপূর্ণ থেকে যায়।পরিবারের ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা একদম তুচ্ছ। আমাকে শক্ত হতে হবে।
নিজেকে সামলে রাখতে হবে।
বর এসে গেছে।সবাই চিৎকার চেঁচামিচি করছে।তাড়াতাড়ি চিরকুট গুলো বাক্সে ঢুকিয়ে জানালা দিয়ে বাইরের পুকুরটায় ছুড়ে মারলাম।
চোখমুখ মুছে আবার বসে পড়লাম।এতক্ষনে আমার চোখমুখ ফুলে গেছে।সবাই হয়ত ভাববে চেনা পরিবেশ ছেড়ে যাচ্ছি তাই। কিন্তু সাথে জীবনের প্রথম অনুভূতি আর ভালোবাসা ছেড়ে যাচ্ছি সেটা হয়ত কেউ জানবেনা।
দূর থেকেই নাহয় ভালোবেসে যাবো।

---চিরকুটের শব্দ------
#Bristi_patuiary
#colltect

১৫ বছর এর বড় হওয়া সত্ত্বেও রায়হান এর সাথে বিয়েটা হয়েই গেলো।

১৫ বছর এর বড় হওয়া সত্ত্বেও রায়হান এর সাথে বিয়েটা
হয়েই গেলো।
এই ঈদ আমার শ্বশুর বাড়িতে প্রথম ঈদ।
আম্মা শিখিয়ে দিয়েছিল,বাসায় গুরু জনরে সবাইকে
পায়ে হাত দিয়ে সালাম করবে।
গাড়ি থেকে নেমে যখন রায়হান আর আমি বাসার ভিতরে
ঢুকবো,দরজার সামনে প্রায় ৩০জন দাড়ানো,কয় জনকে
সালাম দিব এই ভেবে বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
সালাম দেয়া শুরু করলে রাত শেষ হয়ে যাবে।একদম
সামনে দুজন মহিলা দাড়ানো ছিল,রায়হান এর মা এবং
দাদি।
আগে মা কে সালাম দিলাম,সালাম দিয়ে উঠে
বললাম,ঈদ মোবারাক মা।
সে আমায় কিছু না বলেই ভিতরে চলে গেল।
কিছুই বুঝলাম না,হয়তো দাদির আগে তাকে সালাম দিছি
তাই রেগে গেছে।
যাক, দাদিকে সালাম দিয়ে বললাম,দাদি শরীর ভালো
আপনার?
দাদি ও কিছু না বলে হন হন করে ভিতরে চলে গেল।
চারদিকের সবাই হাসছে,ভাবলাম এ আমি কই আসলাম?
সবাই পাগল নাকি?
এর মাঝেই রায়হান আমার হাত ধরে রুম এ নিয়ে গেল।
আমিতো লজ্জা ই পেয়েছিলাম,বুড়া হলেও বউ এর প্রতি
কি টান।
আমি:- এই যে বুড়া লজ্জা নাই?সবার সামনে দিয়া নতুন বউ
কে নিয়ে রুম এ আসলা যে?
রায়হান:- রুম এ আসছি কি স্বাধ এ?
তুমি আমার বড় বোন কে মা বলছো
আমি:- তাহলে মা কই? :o
রায়হান:- তারে তো তুমি দাদি বানাইয়া দিছো। :/
আল্লাহগো,কি মসিবত এ পরলাম আমি।সালাম দিয়া কি
ভেজাল এ পরলাম।ওর বড় বোন তাই আমার মায়ের বয়সি।
আর ওই বুড়া মহিলা আমার শাশুড়ি।
বিয়ের আগে ছবি দেখা উচিৎ ছিল।
যাই শাশুরীর মান ভাঙিয়ে আসি।
গিয়ে দেখি সে রুম এ দরজা দিয়ে রেখেছে।
অনেক নক করার পর দরজা খুলছে।
-মা আপনি রাগ করেছেন?
না মা আমি রাগ করিনি।
মন খারাপ।
-কেন মা?
আসলে আমার নানু খুব অসুস্থ।
আমি কতক্ষন হা করে তাকিয়ে বলি আপনার নানু?
বলে হি হি করে হেসে দিছি। :D
শাশুড়ি আম্মা ক্ষেপে আমায় বের করে রুম দিয়া বের
করে দিলেন।
আমার কি দোষ,শাশুড়ি আম্মাই এক পা কবরে দেয়ার বয়স
তার মা ও না,তার নানু এখনো জীবিত।
বেশ বয়স পেয়েছে।
মন খারাপ করে রায়হান এর রুম এ যাচ্ছি, এমন সময় আমার
বয়সী কয়েকজন আমায় পা ধরে সালাম দিল।
আমি তাদের উঠিয়ে বললাম,ওঠো ভাইয়ারা।ভাবলাম
দেবর-ননদ।ওরা হেসেই বলে,মামি তুমি আমাদের ভাইয়া
কেন বলো?
খাইলাম আবার বিলা
ভাবছি আর মুখ খুলবো না।রায়হান এর কাছে
গেলাম,ভাবলাম আজ ঈদ এর দিন,রায়হান কে একটা
সালাম দেয়া উচিৎ।
একমাত্র ওরে সালাম দিয়াই লজ্জা পাবোনা।বুড়া
আছে। ;)
সালাম দিব বলে প্রস্তুত হচ্ছি,
ভাবলাম হয়তো ও সিনেমার মতন আমায় তুলে বলবে,ওগো
তোমার জায়গা আমার বুকে।নিচু করে বসে সালাম দিতে
নিলাম,রায়হান আটকাচ্ছে না।সালাম দিয়ে দেখি
সামনে রায়হান নাই,আছে একটা বাচ্চা।আনুমানিক ৫বছর
হবে।
রায়হান সামনে দিয়া চলে গেছে।আমি ভুলে ওই
বাচ্চারেই সালাম দিছি।
এই বাচ্চা আবার কে!
যেহেতু বুড়া বুড়া পোলাপান ই আমার ভাগ্নে -ভাগ্নি
তাহলে এ বাচ্চা মনে হয় আমার নাতি।
বিয়ে হতে না হতেই আমি নানী হয়ে গেলাম।
বাচ্চারে কোলে নিয়া বলি,কি বাবু নতুন নানী কে পছন্দ
হয়েছে?
ও বলছে তুমি তো আমার রাঙা ভাবি।
পরে জানি ও রায়হান এর চাচাতো ভাই। :3
কোন ঘরে আসলাম,বুড়া রা সম্পর্কে ছোট আর বাচ্চারা
সম্পর্কে বড়। :3
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,রায়হান কাঁদছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে?
ও বলে ওর বড় মা মারা গেছে।
বললাল,আমার শ্বশুর আব্বার দুটা বউ আগে জানতাম
নাতো।
রায়হান রেগে বললো,আমার মা এর নানীকে বড় মা বলি।
আমি আবার আহাম্মক হইলাম।  :( এখন সান্তনা দেয়ার
ভাষা
ই খুঁজে পাচ্ছিনা।নতুন বিয়ে স্বামীর প্রতি ই মায়া
হয়নায় তার উপর নানী শাশুড়ির প্রতি।
যাক একটা সান্তনা দেয়া উচিৎ। উঠেই বললাম,রায়হান,
সে মারা গেছে তুমি কিছু মনে করোনা।
ও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে,না কিছু
মনে করবো কেন,সে তো আমার বেয়াইন লাগে। >_<
রায়হান ও হন হন করে চলে গেল রুম থেকে।
শ্বশুর বাড়ি আমায় পুড়া বিলা বানাইয়া দিল। :(
.
# সম্পর্কের গোলকধাঁধা। ;)
.
Bristi Patuiary

Wednesday, September 6, 2017

M y maMy rriage love marriage. Ladka ladkor type jhgodrut, love love

M y maMy rriage love marriage. Ladka ladkor type jhgodrut, love love!
It was a lot of arguing before the wedding, I thought we should be marriage must be reduced. And what will be reduced, but increased Hari!!
Even before both were two-place "some relief, but after marriage together because of the rehytoukuk hapoosh! Argument ' quality ' and ' qozeranetus ' both continued to increase.

We have two polar inhabitants. According to one mill with anyone. I get my wife to North South. Surprised I thought this woman was married to? So big a mistake could! I'm so stupid man? Chi Chi Chi!

While my wife and similar charges. Marry me is the result of sin, of the birth of his seven or like me a disgusting animal on Earth, etc.

One argument in the extreme.
Then at 10:11. Up his fingers at me eyes, his wife said, "it is not possible for me to live with you. "I'm chewing said" it is not possible for me to live with. ' This is a place where both shall agree. There is the argument stop. Right is we both get different. Any person who does not see the face. Then a good seeing both go to court together with a mutual divorce.

My wife said, ' lawyers look? You didn't I? ' and I said, ' you look! Not my poshab of those searched everything. Where will we sign, sign up-wrong khals! "
"Don't eat the pulse again?"
"Of course not! Pulse is playing in my name bitch pusho. "But my wife is happy his father went home and packed suitcase.

I Pant left to save. At first, I did a huge jump, "Yahoo", then we go to my house about friends. Today all night mochaichab.
The next day, at khoraziadh, after a lot of whistling from the home started to be broken, and people saw two-hand said, "I am now free, hah hah hah!"

The free show in front of father-in-law after ten days the streets throughout and adds a cigarette after the walk.
People began to ask, "How is it?" and I said "nothing severe neck!"

Shaubshurmshai home the second day came out and said "Daddy don't go inside such madness. People say? "I'm hard neck than the day before, said" no!!! "

On the third day my wife came out. Told me said, ' what do you want? ' and I cry cry neck said "House Let's go. "Lifting the forehead eyes the wife said," go home? Jesus Christ? Lawyer system, two-four days of notice. Go home and go. "I have another cigarette get caught a second time in in said" House Let's go. "My wife ordered a bajkhari-" chopau! "I said" a third stop rickshaw moving house. "My wife disappointed voice said," do you have any time to fill? The clothes go? Clothes at least leave me! "

The together. It has a lot of jadarjhapa, but did not leave anyone. This does not mean that we should stop! Rather than dashgun.
My wife who is panting noise when I'm low tone say "How is breath?"
The same thing is breath work. Wife double encouraged starts again.

When does kordom teeth in extreme anger and say "look, I'll probably kill your ass out!"
It's reliable enough. This woman, it is not impossible. Don't need any assassin foon, he lived alone.

But the interesting thing is that such a terrible thing after hearing my particular fear fright. Teeth smiled and went, because I know this woman cannot even leave to kill me!

Then again, what fear! 😍❤😂

কাজী অফিসে আসার কারন দুটি। প্রথমত আমার আর সাহেদার ডিভোর্স, দ্বিতীয়ত সাহেদা আর আরিফের বিয়ে।

চার বছর সংসার করে আজ আমরা দুজন আবার কাজী অফিসে এসেছি। আজকের কাজী অফিসে আসার কারন দুটি। প্রথমত আমার আর সাহেদার ডিভোর্স, দ্বিতীয়ত সাহেদা আর আরিফের বিয়ে। এমন সময় ঠিক কেমন অনুভুতি হওয়া উচিত তা আমার জানা নেই। তবে আজ যা হতে যাচ্ছে অকল্পনীয় হলেও বাস্তব।
আজ থেকে চার বছর আগে আমার আর সাহেদার বিয়ে হয়। যে সময়টিতে আমাদের বিয়ে হয়, তখন আমরা একজন আরেকজন কে চিনতাম না। পরিবারের পছন্দে আমাদের দুজনের বিয়ে হয়েছে। এতগুলো বছরে অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে। এর মধ্যে সাহেদা কে আমি অনেক ভালোবেসেও ফেলেছি, তাকে ভালোবাসা টা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে, ভালো না বেসে থাকতেই পারিনা। আমি জানি সাহেদাও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আজ সাহেদার থেকেই আমি মুক্তি নিচ্ছি।
আমার এখনো মনে আছে যখন আমাদের বিয়ে হয়, সাহেদা তার কাছে আমাকে যেতে দিতে চায়নি। এক মাস পর্যন্ত সে আমার সাথে এক বিছানাতেও থাকেনি। আমিও সাধারন একটি বেপার ভেবে এড়িয়ে যেতাম, ভাবতাম সে হয়ত এখনো প্রস্তুত না। ধীরে ধীরে তার মন জয় করতে লাগলাম, আমার লুকানো ভালোবাসা তাকে প্রকাশ করতে লাগলাম। সময় যত বয়ে যেতে লাগলো, সাহেদা আমার তত নিকটে আসতে লাগলো। এক সময় সাহেদাও আমাকে ভালোবেসে ফেলে। আর তাকে তো আমি ভালোবেসেছিলাম সেই প্রথম দেখা থেকে।
মৃত্যু যন্ত্রনা আমি দেখেনি, কিংবা কখনো অনুভব করিনি, কিন্তু আজ সাহেদাকে কাজী অফিসে নিয়ে আসার সময় মৃত্যু যন্ত্রনার থেকেও যে ভয়ানক কষ্ট হতে পারে ভালোবাসার মানুষকে অন্যের হাতে তুলে দিতে আজ আমি তা বুঝেছি। যদিও আমার জানা আছে এই যন্ত্রনা খানিক সময়ের জন্যই। আজকাল সাহেদা আমাকে প্রচন্ড ঘৃনা করে, আমি নিজেই তার সামনে এমন কাজ করেছি যা কখনো কোন নারীই মেনে নিতে পারেনা। রোজ নাইট ক্লাবে মেয়েদের সাথে ফুর্তি করা, মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ঘরে ফেরা, এ ছাড়াও সব চেয়ে নিকৃষ্ট যে কাজ করেছি তা আমার স্ত্রী কে চরিত্রহীনা প্রমান করে তাকে ডিভোর্স দিতে যাচ্ছি।
আরিফ আর সাহেদা একই কলেজে পড়ালেখা করতো। কলেজ জীবনে তাদের মাঝে প্রেম হয়, যা সাহেদার পরিবার মেনে নেয়নি আর আমার সাথে বিয়ে দিয়েছে । সাহেদা আমাকে প্রায় আরিফের কথা বলতো, আমিও খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতাম, তাতে যতটুকু জানতে পেরেছি সাহেদার মনের অন্তগভীরে আজো কোথাও না কোথাও আরিফের প্রেমের ফুল ফুটে রয়েছে। পৃথিবীতে এমন কোন পুরুষ আছে যে নিজ প্রেমিকা, নিজ ভালোবাসা, নিজ স্ত্রীকে অন্যের হাতে তুলে দিতে চাইবে। কিন্তু আমার এই কাজটি আরো আগেই করা উচিত ছিলো, ভেবেছিলাম আমি ঠিক হয়ে যাবো। কিন্তু আমার ভাবনা আর বাস্তবতা কোনদিন আমাকে মেনে নিতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়েই আজ আমার এই কাজটি করতে হচ্ছে।
ছয় মাস আগে আমি জানতে পারি আমার হৃদয়ের মাঝে একটি ছেদ রয়েছে, যা ধীরে ধীরে আমাকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যাচ্ছে। একবার ডাক্তার আমাকে শান্তনা দিয়েছিলো অপারেশন করে হয়ত আমাকে ঠিক করা যাবে। কিন্তু শত চিকিৎসামুলক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তারের কথা একটাই, আমার রোগ শেষ পর্যায় আমাকে কোনভাবেই সুস্থ করা যাবেনা।
তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আমার স্ত্রীকে কখনো বিধবার বেশে ধুকে ধুকে জীবন কাটাতে দিবো না। অনেক খোজ করে আরিফের সন্ধান করেছি, এবং সব কিছু জানিয়েছে। সবচেয়ে আনন্দদায়ক যে খবরটি আমার কাছে ছিলো, আরিফ আজো সাহেদা কে ততটাই ভালোবাসে যতটা সে প্রথম যৌবন থেকে ভালোবেসেছিলো। আমার অক্ষমতার কারনে আমাদের কোন সন্তানাদি হয়নি। আর আরিফ আজো সাহেদাকে ফিরে পেতে চায়। আরিফের সাথে বুদ্ধি করেই আমার এই নতুন নাটক সাজানো। আমি সাহেদার চোখে খারাপ হবার কাজ করতাম, আর আরিফ তাকে শান্তনা দিতো, ধীরে ধীরে আমি সাহেদার থেকে দূরে যেতে লাগলাম, আর আরিফ কে সাহেদার কাছে আসার সুযোগ দিলাম। আজকের এই দিনে নতুন এক ইতিহাস রচিত হবে, এক স্বাক্ষরে তালাক, দ্বিতীয় স্বাক্ষরে বিয়ে।
আরিফ সাহেদা আমি তিনজন আরিফের এক বন্ধু কাজী অফিসে দাঁড়িয়ে রয়েছি। অনেক্ষন নিরবতা পালন করে কাজী সাহেব কে বললাম, 
০- কাজী সাহেব আর কতক্ষন। আমাকে বের হতে হবে, তাড়াতাড়ি আমাদের কাজ শেষ করুন।
ততক্ষনে কাজী সাহেবের দলিলপত্র লেখা শেষ, শুধু আমাদের দুজনের স্বাক্ষর বাকী। আমি কোনকিছু না ভেবে স্বাক্ষর দিয়ে সাহেদার দিকে এগিয়ে দিলাম, সে আড়চোখে আমার পানে একবার তাকিয়ে স্বাক্ষর দিলো। আমি সাহেদার চোখে স্পষ্ট আমার জন্য চরম ঘৃনা দেখতে পেয়েছি, যে ঘৃনা কোন নারীই পারে কোন চরিত্রহীন পুরুষকে করতে। সব কথা ভুলে গিয়ে মুখে চিলতে হাসি নিয়ে কাজী সাহেব কে বললাম,
০- আমি জানি তিন মাসের আগে আমি অথবা আমার স্ত্রী বিয়ে করতে পারবনা। কিন্তু কাজী সাহেব আমি আমার স্ত্রীর বিয়ে আরিফের সংগে করাতে চাই, এবং সেখানে স্বাক্ষী হিসেবে নিজেকে উপস্থিত করতে চাই। যদিও আমার তিন মাস পর আসা সম্ভব না, তাই আমি আজই স্বাক্ষীর জায়গায় সই দিয়ে যেতে চাই। তিনমাস পর আমার স্ত্রী যখন আরিফকে নিয়ে আসবে বিয়ে করতে তখন যেন আমার স্বাক্ষী দেওয়া কাগজের মাধ্যমেই তাদের বিয়ে হয়।
আগে থেকে কাজীকে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছিলাম, তাই এখন আর নতুন করে অবাক হলেন না। কিন্তু অবাক হলো সাহেদা, সে প্রতিবাদ করতে যাবে যাবে অবস্থা, নতুবা আমাকে কিছু শোনাতে যাবে, আরিফ তা হতে দিলোনা। আমি আরিফ কে আগেই জানিয়েছিলাম, আমার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আরিফ যেন কোন কিছু না জানায়। আরিফ সাহেদার হাত চেপে বারন করলো, কিছু জিজ্ঞেস করতে না। কিন্তু এখন সাহেদার চোখে ঘৃনার ছাপ পেলাম না, কৌতুহলের ছাপ পেলাম।
যাই হোক আমি স্বাক্ষীর স্থানে সই করে সোজা আমাদের গ্রামের বাড়ী দিনাজপুর চলে আসলাম। গ্রামে আসতেই আমার শরীর খারাপ হতে লাগলো, দিন যায় আমার অবস্থা বেহাল হয়। তিন মাসের আগেই আমার উপরের টিকেট কনফার্ম হয়ে গেলো। আজ আমার মরনের খবর পৌছে গেছে আমার ভালোবাসা সাহেদার কাছে। সাহেদা আর আরিফ ছুটে এসেছে আমার লাশ শেষবারের মত দেখতে। সাহেদার জন্য আমার লেখা ছোট্ট একটি চিঠি দিয়ে গেলাম, আমার ছোট ভাই রাতুলের কাছে। সাহেদ যখন চিঠিটা পড়বে তখন আমি অনেক দূরে থাকবো এই মোহময় জীবন থেকে অনেক দূরে।
প্রিয় সাহেদা,
আমি জানি তুমি হয়ত আমাকে অনেক ঘৃনা করো, কিন্তু আজ অনুরোধ করছি আমাকে আর ঘৃনা করিও না। মৃত মানুষের উপর নাকি রাগ পুষে রাখতে হয়না। এমন কথা বড়রা বলে। তোমাকে চরিত্রহীন বলার জন্য, আর সবার সামনে ছোট করার জন্য আমি সত্যি দুঃখিত। আমার হৃদয়ে ছেদ ছিলো, যা আমাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করতেছিলো। আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না, আমি চলে যাবার পর তুমি বিধবার বেশে সারাজীবন সন্তানহীন হয়েই কাটিয়ে দাও। আমি জানি তোমার একটি সন্তান কত প্রয়োজন। এতগুলো বছরে আমি এটা জেনে গেছি তুমি মা হবার জন্য সব ত্যাগ করতে রাজী কিন্তু আমার অক্ষমতা কোনদিন তোমাকে মা হবার সুখ প্রদান করবে না।
আমি কোন নেশাবাজ নই, তোমার সামনে মাতাল হবার নাটক করতাম যেন আমাকে তুমি ঘৃনা করো। আর যে সব মেয়েদের সাথে তুমি আমাকে দেখেছো, তাদের সবাইকে টাকা দিয়ে নাটক করিয়েছিলাম, যেন তোমার মন আমাকে ঘৃনা করতে বাধ্য হয়, নতুবা তুমি কোনদিন আমাকে ছেড়ে যেতে চাইতে না তা আমি খুব ভালোকরে জানি।
আরিফের সাথে কয়েকমাস আগে আমার দেখা হয়, ছেলেটা তোমাকে বড্ড ভালোবাসে, এত ভালো তো কোনদিন আমিও বাসতে পারিনি। আজো সে তোমাকে আপন করে পেতে চায়, তোমার কারনে সে আজো বিয়ে করেনি। আরিফের মা বাবা গত হয়েছে বছর দুয়েক হলো, সে আজ সত্যিই একা হয়ে গেছে শুধু কল্পনা করে তার জীবনে তুমি ফিরে আসবে। আমি বেচে থাকতে তোমাকে যে সুখ দিতে পারিনি, মরে যদি দিতে পারি সেটাই আমার জীবনের পাওয়া সবচেয়ে বড় উপহার।
বড্ড সাধ ছিলো তোমার আর আরিফের বিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে দেওয়া, কিন্তু আমার জীবন আমাকে সেই সময় দিবে না, তাই আগে থেকেই স্বাক্ষীর জায়গায় সই দিয়ে এসেছিলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিও, আর আরিফের সাথে নতুন সংসার করে জীবনে অনেক সুখী হও।
আর একটি কথা, আজ হয়ত তুমি কাদবে অনেক চিৎকার করে কাদবে, তা আমি দেখবো না তোমার চোখের পানিও মুছে দিতে পারবো না, কিন্তু তুমি কাদবে না আমাকে হাসি মুখে বিদায় দাও, আর পরজনম বলে যদি কিছু থাকে আমি তোমার স্বামীই হতে চাইবো। অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা রইলো।
কিছু ত্যাগ কিছু ভালোবাসা এমনি হয় যার কোন অন্ত নেই।


আপনার বাড়িতে অশুভ শক্তি রয়েছে কিনা বলে দেবে এই পরীক্ষা!

আপনি কি ভূত-প্রেত বা অশুভ শক্তিতে বিশ্বাস করেন? আপনার কি মনে হয় যে আপনার বাড়িতে সব কিছু স্বাভাবিক নেই, কোনও এক অশুভ কিছুর উপস্থিতি কি আপনাকে তাড়া করে? কয়েকটি পরীক্ষা থেকে কিন্তু জানতে পারেন এমন কিছু আদৌ ঘটছে কিনা৷ হয়ে যেতে পারেন সাবধানও৷ তবে সবই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের বিষয়৷ এ নিয়ে হাজার তর্ক-বিতর্ক রয়েছে৷ ইচ্ছে হলে একবার নিচের সহজ পরীক্ষাটি করে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন নিজের বাড়ি নিয়ে৷
১) একটি অক্ষত, পরিষ্কার কাঁচের গ্লাস নিন৷ তার গায়ে যাতে আপনার আঙুলের ছাপ না পড়ে তাই সেটি গ্লাভস পরে ধরুন৷

২) গ্লাসের এক তৃতীয়াংশ ভর্তি করুন সি সল্ট দিয়ে৷

৩) এরপর গ্লাসের আরও এক তৃতীয়াংশ ভর্তি করুন সাদা ভিনিগার দিয়ে, কিন্তু কোনওমতেই সি সল্টের সঙ্গে ভিনিগারটি মিশিয়ে দেবেন না৷

আরও পড়ুন: ব্যস্ত শহরের আনাচে-কানাচেই আছে হাড় হিম করা ভূতের বাস

৪) গ্লাসের বাকি অংশ পরিষ্কার জল দিয়ে পরিপূর্ণ করুন৷

৫) এবার এই গ্লাসটি বাড়ি ফাঁকা থাকা অবস্থায়, দিনের বেলা, সকলের অলক্ষ্যে এমন একটি জায়গায় রাখুন যেখানে আপনি নেগেটিভ এনার্জি অনুভব করছেন বলে মনে হয়৷

৮) টানা একদিন এভাবেই রেখে দিন৷ যদি দেখেন গ্লাসের জল পরিষ্কারই রয়েছে তাহলে ভয়ের কোনও কারণ নেই৷

৯) তবে একদিন পর যদি দেখে জলের রং-এ একটু হলেও পরিবর্তন এসেছে তাহলে, আরও একবার একই পরীক্ষা করুন বাড়ির অন্য কোন স্থানে গ্লাস রেখে৷ বারবার যদি জল রং পরিবর্তন করে তাহলে অশুভ শক্তি আপনার ধারেকাছে ঘোরাফেরা করলেও করতে পারে৷ তবে সমগ্র বিষয়টিই রহস্যে ঘেরা৷ তাই বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক রয়েছেই৷

Monday, September 4, 2017

ছেলের কান্না দেখে মাও তার চোখের পানি আড়াল করতে পারলেন না।

#মনে_পড়ে 

রাত অনেক হয়েছে..
শুভ্রর রুমের বাতি জ্বলছে।
ব্যাপার কি!! এত রাতে শুভ্রর
রুমে বাতি জ্বালানো কেনো!
মনে মনে ভাবছেন শুভ্রর মা।
নিজের রুমের বাতি জ্বালিয়ে দেখলেন
রাত
সোয়া দুইয়া প্রায়।
--কিরে, এত রাতে বসে বসে কি করছিস?
--কিছু না তো!
চমকে ওঠে জবাব দিলো শুভ্র।
--কিছু না হলে এত
রাতে বাতি জ্বালিয়ে বসে আছিস যে?
--আরে বললাম তো কিছু না। যাও তো এখান
থেকে।
অনেকটা রেগে চিৎকার করে উঠলো।
--কি ব্যাপার, এমন ভাবে কেউ মায়ের
সাথে কথা বলে? কি হয়েছে বল আমাকে।
শুনি আমার বাপটার কি হয়েছে..
--না মা কিছু হয়নি। এমনি বসে আছি। ঘুম
আসছিলো না। তাই।
--তাহলে কাঁদছিস কেনো?
--কই কাঁদলাম?! তুমি আসলেই বেশি বোঝো।
যাও
ঘুমাও গিয়ে।
--আমিতো বেশি বুঝিই। এটা আর নতুন কি.. এখন
বল
কি হয়েছে তোর?
--বললাম তো মা কিচ্ছু হয়নি।
--বন্যা কিছু বলেছে?
--আরে নাহ!
--মিথ্যে বলবি না। ওকে তুই আবার ফোন
দিয়েছিলি বুঝি?
--না গো মা।
--কিছু একটা তো হয়েছে। আমি মা,
আমিতো আর
ভুলভাল বুঝতে পারি না। বল শোনা আমার,
কি হয়েছে?
শুভ্রর
পাশে এসে বসে মা কথাগুলো জিজ্ঞাস
করছেন।
--মা, আমার ভাল লাগে না।
কথাটুকু বলেই মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ
করে কেঁদে ফেললো।
--বুঝতে পেরেছি, ওকে স্বপ্নে দেখেছিস,
তাই
তো?
--হুঁ। মাথা নাড়ালো শুভ্র।
--ওর সাথে কথা হয়েছে আজ?
--না।
--কেনো? আবার রাগ করেছে? নাকি তুই কিছু
উল্টাপাল্টা বল্রছিস?
--না।
--কাঁদে বাবা। তুই না ছেলেমানুষ..
ছেলেদের
এভাবে কাঁদতে নেই বাবা। প্লিজ কাঁদিস
না বাবা।
মা হাত দিয়ে শুভ্রর চোখের
পানি মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন।
--আচ্ছা ওকে ফোন দেই আমি?
আমি কথা বলিয়ে দেই?
শুভ্র জবাবে হ্যাঁ/না কিছুই বললো না।
--অপেক্ষা কর। আমার মোবাইল
ফোনটা আনছি।
শুভ্র চুপচাপ মাথা নিচু করে বসেই রইলো।
--দে, ওর নাম্বারটা বের করে দে।
ফোনবুক থেকে শুভ্র বন্যার নাম্বার বের
করে মায়ের হাতে ধরিয়ে দিলো।
ফোনে রিং হচ্ছে। টুঁট টুঁট...
ওপাশ থেকে ঘুমে জড়ানো গলায় আওয়াজ
আসলো। হ্যালো...
--বন্যা, আমি তোমার আন্টি।
বন্যা আর শুভ্রর মায়ের সাথে কথোপকথন
চলছে...
--তোমাকে এত রাতে বিরক্ত করার জন্য
আমি খুবই
দুঃখিত মামনি।
--ছিঃ ছিঃ আন্টি, কি বলছেন এসব। আমার
কোনো সমস্যা নেই। আপনি বলুন। কি হয়েছে?
--কি আর হবে! আমার ঘরে যে একটা পাগল
আছে না, সেই পাগল আবার পাগলামি শুরু
করেছে।
--কি হয়েছে শুভ্রর!!??
বন্যা অনেকটা আতংকিত স্বরেই বললো।
--কি আর করবে.. আমি ঘুম
থেকে উঠে দেখি বসে বসে কাঁদছে।
--কেনো! আংকেল
কি ওকে বকাঝকা করেছেন?
--আরে না। তোমার আংকেলের
সাথে তো তার কথাই হয় না। সে থাকে তার
মত
করেই।
কারো সাথে কি সে সেধেসেধে কথা বলে!!
কি একটা ছেলে যে জন্ম দিলাম, কিছু
হলে কাউকে কিছু বললবে না।
একা একা বসে শুধু
ভাববে আর কাঁন্নাকাটি করবে।
--আন্টি, আপনি মন খারাপ করবেন না প্লিজ।
দিন,
ওকে দিন। আমি ওর সাথে কথা বলছি।
আমি বুঝিয়ে বললে অবশ্যই কাজ হবে।
--আচ্ছা দিচ্ছি। দেখো কি বলে...
শুভ্র আর বন্যার কথোপকথন....
--কিরে শুভ্র কি হইসে তোর?
--কিছু না।
--আমাকেও বলবি না?
--কিছু হয়নি তো। কিছু হলেই না বলবো। আজিব
তো!
--ঢং করিস না।
--আমি কি মেয়ে মানুষ যে ঢং করবো?
--ইসস আসছে আমার পুরুষ মানুষ!!
তাহলে কাঁদছিলি কেনো?
--আমি কাঁদছিলাম তোকে কে বললো?
--ফাজলামি ছাড়। বল কেনো কাঁদছিলি?
--কাঁদিনি। চোখের এলার্জি বেড়েছে।
তাই
চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো।
--হুম। খুব পন্ডিত হয়েছিস, তাই না?!!? আজকাল
মিথ্যেও বলা শিখে গেছিস!
--আর কিছু বলবি? আমার ঘুম পাচ্ছে। ফোন
রাখবো।
বললো শুভ্র।
--হুম ঘুমা। নো মোর পাগলামি। ওকে!
--হুম।
--সকালে আমি আসছি।
--কোথায়?
--তোর বাসায়।
--সত্যি!!??
--হুম। সত্যি।
মাকে দেখে চাপা উত্তেজনাকে চাপাই
রাখলো শুভ্র।
--আচ্ছা রাখি এখন। বাই। গুড নাইট।
--হুম, গুড নাইট।
শুভ্রর মাঃ খুশি? এখন ঘুমান বাপজান।
শুভ মুচকি হেসে বললো, আচ্ছা ঘুমোচ্ছি। যাও
তুমি।
--সকালে ও আসবে?
--হুম।
--আচ্ছা, ঘুমা।
--যাওয়ার আগে লাইট অফ করে যেও।
--আচ্ছা করছি।
রাত ৪ টা.....
একবার বিছানার এপাশ থেকে ওপাশ। এই
চলছে গত দেড় দুই ঘন্টা যাবৎ।
এটা অবশ্য নতুন কিছু না। বন্যার সাথে যেদিন
দেখা হবে তার আগের রাত থেকে ঘুম বাদ।
এটা শুভ্রর সয়ে গেছে। তাই তেমন সমস্যাও
হচ্ছে না।
বেশি টেনশনেও মানুষ সুখের
নিদ্রা দিতে পারে না, আবার খুব খুশির সময়ও
না।
মানুষ বড়ই আজিব কিসিমের প্রানী।
মাঝে মাঝেঅদ্ভুত লাগে ভাবতে।
সকাল ৮:১০ মিনিট। ঘুম ভেঙেই মোবাইল
ফোনে টাইম দেখে নিলো শুভ্র।
আরে বন্যাকে তো ফোন দিলামই না।
রওনা দিলো কিনা আল্লাহ্ই জানেন।
--হ্যাঁ, কই তুই?
--এইতো আধা ঘন্টা পরই রওনা দেবো। তুই
ওঠে নাস্তা করে নে। শার্ট প্যান্ট
পড়ে রেডি থাকিস। বাইরে বের হবো।
--কোথায় যাবি?
--আগে আসি, তারপর বলি?
--আচ্ছা ঠিক আছে।
--ভাল কথা, আজকে কালো শাড়িটা পড়বি।
--তুই বললেই কি আমি পড়বো?
--হুঁ। পড়তে হবে। তার
সাথে কপালে কালো টিপও দিতে হবে।
বুঝেছিস।
--আচ্ছা ফোন রাখ শয়তান। আমি আসছি। জ্যাম
না থাকলে ঘন্টা খানিক সময় লাগবে।
--আচ্ছা। সাবধানে আসিস।
শাহবাগে বাস জ্যামে আটকে আছে।
বন্যা আর
শুভ্র পাশাপাশি বসে আছে। ইয়ারফোনের
একটা স্পিকার বন্যার ডান কানে, আর
দ্বিতীয়
স্পিকারটা শুভ্রর বাম কানে। দুজন খুব মনোযোগ
সহকারে গান শুনছে। শিরোনামহীন ব্যান্ডের
হাসিমুখ।
"তুমি যে আছো তাই আমি পথে হেঁটে যাই,
হেঁটে হেঁটে বহুদুর, বহুদুর যেতে চাই।"
গানটা দুজনেরই অসম্ভব প্রিয়। --এই শুভ্র, একটু
নীলক্ষেত যেতে হবে। যাবি?
--আচ্ছা ঠিক আছে চল।
তবে কেনো তা জিজ্ঞাস করলো না শুভ্র।
--ওখানে কাজ সেরে লাঞ্চ করে তারপর
মুভি দেখতে যাবো।
--ওকে। বলে মাথা নাড়ালো শুভ্র।
বন্যা বইয়ের দোকান থেকে IELTS এর কিছু বই
কিনলো। শুভ্র
পাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে বন্যার
কান্ড।
কিভাবে মেয়েটা বই দোকানির সাথে বই
দামাদামি করছে।
বই কেনা শেষ।
--চল।
--এবার কোথায়?
প্রশ্ন করলো শুভ্র।
--ক্ষুদা লেগেছেরে। খেতে হবে কিছু। চল,
আজকে ভারি কিছু
না খেয়ে হালকাপাতলা কিছু
খাই..
--হালকাপাতলা খাবার!!
হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ
--কিরে হাসছিস কেন?
--তোর কথা শুনে। হালকাপাতলা খাবার। খুব
মজা লাগলো শুনে।
--শয়তান.... শুভ্রর গাল টেনে এই
হাসিটা মাঝে মাঝে কই থাকে!!??
শুভ্র জবাব দিলো না।
--চল, ফুটওভার ব্রীজে উঠা যাক।
--উফ!! আবার এই প্যারা!! বন্যা খুব বিরক্ত হয়েই
বললো।
--কিসের প্যারা? বাসের চাকার
নিচে পড়ে আমার মরার ইচ্ছে নেই। আয় বলছি।
নিউমার্কেটের এখানে ভাল কিছু ফাষ্ট
ফুডের
দোকান আছে। ভাল বলতে তেমন ভাল না।
চলে আর কি। মোটামুটি সস্তাই।
একটা ফাষ্টফুড কর্নারে মুখোমুখি বসা দুজন।
--কি খাবি?
--পিৎজা।
--চিকেন নাকি বিফ?
--বিফ।
--আচ্ছা অর্ডার দে।
--পারবো না। তুই দে।
--তুই দিতে সমস্যা কি! আজিব ছেলে তো তুই!!
--আচ্ছা আচ্ছা দিচ্ছি।
--এই যে ভাইয়া, একটা পিৎজা। চিকেন
না কিন্তু।
বিফ বিফ।
বন্যা হাসছে।
--কিরে হাসছিস কেনো?
--না, এমনি হাসছি।
হাসি থামাতে পারছে না।
উল্টো হাসির পরিমাণ বেড়ে গেলো।
--কি রে!! কি হয়েছে!!
--তোর অর্ডার দেয়ার স্টাইল
দেখে হাসি পাচ্ছে।
--কেনো? এতে হাসির কি হলো?
--না কিছু হয়নি। এমনি। বাদ দে তো.. বলেই
এবার
খিলখিল করে হেসে উঠলো।
--হাস তুই। আমি গেলাম। বলেই শুভ্র চেয়ার
ছেড়ে উঠে দাড়ালো।
--কই যাচ্ছিস!!
শুভ্রর হাত ধরে বললো বন্যা।
আচ্ছা বাবা সরি। আর হাসবো না।
--একটা পিৎজা দুজন মিলে শেষ
করতে পারলাম
না এখনো! বললো বন্যা।
কথাটা শেষ হতে না হতেই দুই পিস
পিৎজা একসাথে হাতে নিয়ে মুখে পুড়ে দিলো।
খাবার মুখে নিয়ে চাবাচ্ছে আর বলছে,
এইবার
শেষ হলো তো?
--হুম শেষ। এইবার বন্যার হাসির লিমিট ক্রস
করলো।
পেটে খিল ধরে যাবার মত হাসি। এই
হাসিকে আমি বলি খিল হাসি।
--আমি খাবারের বিল দিচ্ছি। তুই
আমাকে মুভি দেখাবি।
--জ্বি ম্যাডাম। আপনার আর্জি বলে কথা।
মানতেই হবে।
--বাহ বাহ!! খুব ভাব দেখচ্ছিস দেখছি!
পকেটে আজ অনেক পয়সা মনে হচ্ছে?
--চল। এখান থেকে বের হই।
বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স এর
সামনে দুজন। দুটো প্রিমিয়াম ক্লাসের
টিকিট
শুভ্রর হাতে। টোয়াইলাইটঃ ব্রেকিং ডন (১)
এর
টিকিট। শো শুরু ১:৪০ মিনিটে। আরো ১৫
মিনিট
বাকি আছে শুরু হতে। তাই
উপরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে নিচের দৃশ্য
অবলোকন
করছে। সাথে বন্যাও যোগ দিয়েছে।
--কি দেখিস?
--মানুষ।
--নতুন দেখছিস?
--না।
--তো! মানুষ দেখার কি আছে?
--জানি না।
--পাগল একটা। চল টাইম আর বেশি নেই।
ভেতরে গিয়ে বসি।
--চল।
নিজেদের
আসনে পাশাপাশি বসে আছে দুজন।
মুভি প্রায় আধা ঘন্টা হলো চলছে।
শুভ্রকে দেখে মনে হচ্ছে না তার মন
মুভিতে আছে।
--কিরে? এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
না সূচক মাথা নাড়ালো শুভ্র।
--ভাল লাগছে না বুঝি?
শুভ্র আবারো না সূচক মাথা নাড়ালো।
কপালে হাত রেখে দেখলো শুভ্রর কপাল একটু
বেশিই গরম। হাত ছুঁয়ে দেখলো, হাত বেশ
ঠান্ডা।
--কিরে, জ্বর আসছে নাকি? খুব খারাপ
লাগছে বুঝি? চল বাসায় চল।
মুভি দেখতে হবে না।
--আরে না! কিছু হয়নি। এসির
বাতাসে বেশিক্ষণ
থাকলে আমার এমনই হয়। ওই যে কথায় আছে না,
কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না। সেরকম।
--থাপ্পর খাবি শয়তান। মুখে যা আসে তাই
বলতে হয় নাকি! তুই বড় হয়েছিস না এখন!
জ্বরে কপাল পুড়ে যাচ্ছে, আর
সে এখানে ঢং করছে।
বিকেল চারটা....
বসুন্ধরা সিটির বাইরে দুজন।
গন্তব্য বাসে উঠা। একটা ছোট
মেয়ে ছুটে এসে বললো, ভাইজান নেন
না ফুলগুলা। মাত্র দশ ট্যাকা। শুভ্র অবাক হলো।
এতগুলো গোলাপ দশ টাকা মাত্র! মানিব্যাগ
থেকে দশ টাকা বের করে মেয়েটির
হাতে দিতেই মেয়েটি দৌড়। ফুলগুলো বন্যার
হাতে দিলো শুভ্র।
বন্যাকে এত খুশি হতে খুব কমই দেখা যায়। ও
মাই
গড!! গোলাপ!! আমার খুব প্রিয়। অনেক থ্যাংক্স
তোকে। বলেই বন্যা শুভ্রর চিবুক
আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে বললো, আমার কিউট
বাবুটা।
বাবু বলাতে শুভ্র মনে হয় বেশ লজ্জাই
পেয়েছে। অন্তত তার হাসি দেখে তাই
বোঝা যাচ্ছে।
বাসে দুজন। বন্যা বসে আছে। পাশেই শুভ্র
দাঁড়িয়ে আছে। বসার জায়গা নেই।
দাড়িয়েই
যেতে হবে। কি আর করার। এ আর নতুন কি...
--আমাকে কিন্তু গুলিস্তান
থেকে বাসে উঠিয়ে তারপর বাসায়
যাবি তুই।
বললো বন্যা।
--আচ্ছা ঠিক আছে। এটা আবার বলার
কি হলো।
সবসময় তো তাই করি।
--না, এমনিই বললাম। ভাবলাম আবার
ভুলে গেছিস
নাকি।
গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের
সামনে বিআরটিসি এর কাউন্টারের
সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে শুভ্র। বন্যা পাশেই
দাঁড়ানো।
--যাবি তুই আর লাইনে দাঁড়ানো আমি।
বলছে শুভ্র।
বন্যা কিছু বলছে না। হাসছে। শুধুই হাসছে।
--একটু দাঁড়া। আমি আসছি।
--কই যাবি!!
--এইতো, যাবো আর আসবো।
--সিগারেট খাবি, এই তো!!
--আরে না। মুচকি হেসে জবাব দিলো শুভ্র।
--জদলি আসবি। বাস চলে আসবে।
--আচ্ছা।
এই তোর যাওয়া আর আসা তাই না!!
বললো বন্যা।
--দুইতিন মিনিটে একটা সিগারেট শেষ
করা কি সহজ ব্যাপার?
--চুপ কর শয়তান।
শুভ্র চুপ করে রইলো।
--আমি আর তোর
সাথে বন্যাঃ ঘুরাফেরা করবো না।
শুভ্রঃ করিস না।
ওই যে বাস চলে এসেছে। যা ভাগ।
--আমার বিয়ের কথা চলছে। আমি চাইলেও আর
আগের মত আসতে পারবো না। বাসে ওঠার
আগ
মুহূর্তে বন্যার শেষ কথা এটাই ছিল।
শুভ্র কিছু বললো না।
তাকে দেখে মনে হলো না যে সে কথাগুলো শুনেছে।
এভাবেই যাচ্ছে শুভ্র আর বন্যার দিনগুলো।
মাস খানিক পরের ঘটনা...
শুভ্রর মোবাইল বেজে যাচ্ছে।
--হ্যালো। বল।
--তুই বিকেলে নারায়নগঞ্জ আসতে পারবি?
ওপাশ থেকে বন্যা বললো।
--অবশ্যই পারবো। বান্দা এনিটাইম আজাইরা।
কখন
আসতে হবে?
--বিকেল ৫ টার মধ্যে।
--ওকে। আইএম কামিং মাই ডিয়ার।
বিকেল পাঁচটা.... নারায়নগঞ্জ শহীদ মিনার।
বন্যাকে আজ বিষন্ন মনে হচ্ছে।
--মন খারাপ?
বন্যার কোনো জবাব নেই।
--কি হলো? কথা বল। উফ কি গরম রে বাপ!!
আইসক্রিম খাবি? নিয়ে আসি?
বন্যার জবাব নেই।
শুভ্র আইসক্রিম নিয়ে হাজির।
--এই নে। খা। কিরে ধর!! কতক্ষণ ধরে থাকবো?
না খেলে বল, আমিই দুইটা সাবাড়
করে দিচ্ছি।
হাঃ হাঃ হাঃ
--তুই আমার বাসায় আর আসিস না। আমার
সাথে দেখা করার চেষ্টা করিস না।
ফোনে কনট্যাক্ট করার চেষ্টা করিস না।
গম্ভীর ভাব নিয়ে কথা গুলো বললো বন্যা।
শুভ্র তেমন পাত্তা দিলো না। এই আর নতুন কিছু
না। বন্যা মাঝে মাঝেই এমন করে। আবার
ঠিক
হয়ে যায়।
--এই নে গল্পের বই। তোর জন্য এনেছি।
পড়া শেষে দিয়ে দিবি। বললো শুভ্র।
--না। নিবো না। আমি চাই না তুই বইয়ের
বাহানা ধরে আমার
সাথে কোনো প্রকারের
দেখা করার চেষ্টা করিস। আমি যাচ্ছি।
একটা রিকশা করে দে তো।
শুভ্র কিছু বুঝে ওঠার আগেই বন্যা রিকশায়
ওঠে, হুড
উঠিয়ে চলে গেলো।
শুভ্র কিছুই বুঝতে পারলো না। বুঝবে কি করে!!
বেচারা বন্যার কথাগুলোই যে এখনো হজম
করতে পারলো না।
বাসে বসে বসে ভাবছে এমন আচরণ করার
কারন
কি? আমি কি কোনো ভুল করেছি? কেনো এমন
করলো? বাসায় গিয়ে ফোন দেবো। সব ঠিক
হয়ে যাবে।
ভাবতে ভাবতেই যাত্রাবাড়ী চলে এলো।
রাত
৮ টা বাজে। জলদি বাসায় যেতে হবে।
.
.
.
দুইদিন পর...
শুভ্রর বাবাঃ ওই মেয়ের সাথে তোর
ঘোরাফেরা বন্ধ। যদি না পারিস, সোজা ঘর
থেকে বের হয়ে যাবি। আমার সোজা কথা।
বলেই হনহন করে শুভ্রর রুম ত্যাগ করলেন।
শুভ্র কিছুই বুঝছে না। কি হচ্ছে এসব!! ২ দিন
ধরে বন্যাও ফোন ধরছে না। কি হচ্ছে এসব!
রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো শুভ্রর। অবশ্য
ইদানীং ঘুম তেমন হচ্ছে না।
ওঠে আগে ডাইনিং রুমে গিয়ে ফ্রীজ
থেকে এক বোতল শীতল পানি বের করে ডগডগ
করে খেয়ে নিলো।
নিজের রুমে এসেই ওয়ার ড্রব খুলে বন্যার
একটা ছবি বের করে চোখের
সামনে মেলে ধরে।
শুভ্রর চোখ বেয়ে টপটপিয়ে পানি পড়ছে।
আজ প্রায় ৬ মাস হলো বন্যার সাথে শুভ্রর
কোনো ধরনের দেখাসাক্ষাৎ
কিংবা কথাবার্তা হয় না। শুভ্র অবশ্য
চেষ্টা করেছে। গতকালও ফোন দিয়েছিল।
ওপাশ
থেকে কেউ সাড়া দেয়নি।
কিছুদিন পর.....
শুভ্র হাঁটছে। এখন কোথায় তা তার
জানা নেই।
সকাল থেকে থেমে থেমে হেঁটেই চলছে।
এখন
সন্ধ্যা প্রায়। পকেট থেকে বন্যার সেই
ছবিটা বের করে দেখলো। একটু পরপরই সে এই
কাজটি করছে।
সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে।
দোকানিকে বললো, ভাই একটা বেনসন &
হেজেস দেন। দোকানি বললো, বেনচন?
শুভ্রঃ হুম।
সিগারেট হাতে নিয়ে পকেটে হাত
দিয়ে দেখলো পকেট শূন্য।
মনে পড়েছে। আরে আমিতো কোনো টাকাই
আনিনি। মনে মনে হাসলো সে।
মামা সিগারেট
খাবো না। ফেরত নেন। পানি হবে?
দোকানিঃ হ হইবো। ওই যে ড্রাম
থ্যাইকা তুইলা গেলাসে ঢাইলা খান।
শুভ্রঃ টাকা লাগে নাকি?
দোকানিঃ না ভাই।
শুভ্রঃ তাহলে দুই গ্লাস খাই?
দোকানিঃ খান। আইচ্ছা ভাইজান, আপনে কই
যাইবেন?
শুভ্রঃ জানি না.....
দোকানিঃ কই থ্যাইকা আইসেন?
শুভ্রঃ কোথাও থেকে আসিনি। কোথাও
যাবো না।
প্রায় দেড় মাস পর...
শুভ্রর বাবার ফোন বাজছে। হ্যালো।
ভাইজান, শুভ্রকে পাওয়া গেছে। কুমিল্লার
লাকসাম রেলস্টেশনে পাওয়া গেছে। ও এখন
হসপিটালে। ডাক্তার বলছে উন্নত চিকিৎসার
জন্য
ঢাকায় নিয়ে আসতে। আমি আসছি।
সাথে আমার
এক বন্ধুও আছে। আপনি চিন্তা করবেন না।
আমরা এম্বুলেন্স নিয়ে এখনই ঢাকার
উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি।
এতক্ষণ কথাগুলো শুভ্রর ছোট চাচার ছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
বেডে শুভ্র শুয়ে আছে। দাড়িগোঁফ অনেক বড়
হয়ে গেছে। শরীরে হাড় ছাড়া আর কিছুই
দেখা যাচ্ছে না। শুভ্রকে চেনার
কোনো উপায়
নেই। একি হাল শুভ্রর!
দুর থেকে শুভ্রর মা ছেলেকে দেখে কাঁদছেন।
মাকে সান্তনা দিচ্ছে শুভ্রর ছোটবোন।
রোগীর সুস্থ হতে সময় লাগতে পারে।
আপনারা চাইলে বাসায়
নিয়ে যেতে পারেন।
বাসাই তার জন্য একমাত্র নিরাপদ আর ভাল
জায়গা।
একমাস হয়ে গেলো ছেলের
কোনো উন্নতি দেখছেন না তার বাবা মা।
কথা নেই বার্তা নেই। খালি ফ্যালফ্যাল
করে চেয়ে থাকে। চোখের পলকও ফেলে না।
এই কোন রোগ!! এভাবে কতদিন যাবে?
বসে বসে ভাবছেন শুভ্রর মা।
শুভ্ররে, ও শুভ্রর। কথা বল বাবা।
ছেলের মাথার পাশে বসে মা এভাবেই
বলছিলেন। শুভ্রর কোনো সাড়া নেই।
ফ্যালফ্যাল
চাহনি ছাড়া।
আরো বেশকিছুদিন পর...
শুভ্রর পাশে বন্যা। বসে আছে। কিছু বলছে না।
শুভ্রর সেই ফ্যালফ্যালানি চাহনি।
বন্যা কাঁদছে।
চোখের পানি তার গাল টপকিয়ে শুভ্রর
শরীরে পরার আগেই
ওড়না দিয়ে মুছে নিলো।
একি!! শুভ্রর চোখের কোনেও জল। চোখ
থেকে জল গড়িয়ে কান বেয়ে পড়ছে।
বন্যা দেখে সহ্য করতে পারলো না।
হয়তো তাই
না দেখার ভান করে ওঠে চলে গেলো।
সেদিনই ছিল শুভ্র আর বন্যার শেষ দেখা।
আজ বহুবছর পর.....
কারো জন্য কারো জীবন থেমে নেই। সবাই
নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। প্রকৃতির নিয়নেই
সবার
জীবন চলছে নিজ গতিতে।
শুভ্রর বাবা মার বয়স বেড়েছে। বৃদ্ধই বলা চলে।
ছোটবোনটা স্বামীর সংসার করছে। একটা ৮
বছরের মেয়ে আছে। নাম সোহানা। ক্লাশ
থ্রি তে পড়ছে।
বন্যা আর তার স্বামী দুজনই
একটা বেসরকারি ব্যাংকে জব করছে।
তাদেরও
দুটো সন্তান আছে। বড়টি ছেলে। আর
ছোটোটি মেয়ে। ছেলের নাম রুদ্র। মেয়ের
নাম তন্দ্রা। ছেলে ক্লাশ থ্রি তে পড়ছে। আর
মেয়েটার বয়স ৩ বছর।
আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই
বন্যা বাইরে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ
তার
কোনো কাজ নেই। আজ সে মুক্ত। কাজ
থাকলেও
আজকে সব বাদ। কারন আজ আজ ৪ঠা অগ্রহায়ণ।
শুভ্রর
মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনটায় বন্যা শুভ্রর পছন্দের
কালো শাড়ি আর কালো টিপ
পড়ে নারায়নগঞ্জ
শহীদ মিনারে একা একা কিছুক্ষণ
বসে থাকে।