ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Monday, August 28, 2017

ফারিয়া আমার সামনে দাড়িয়ে।আমি অবাক হলাম!

.⛤⛤⛤"আমি স্বার্থপর⛤⛤⛤

সেদিন রাস্তা দিয়ে হাঁটতেছিলাম হঠাৎ দেখি 
 ফারিয়া একা নয়,সাথে একটা ফুটফুটে মেয়েও দাড়িয়ে আছে। ও'র ডান হাতের আঙ্গুলগুলো ধরে।ফারিয়াকে প্রথমে কিছু জিজ্ঞাসা না করে বাচ্ছা মেয়েটাকেই জিজ্ঞাসা করলাম-আম্মু তোমার নাম কি? মেয়েটা জবাব দিল-অরনী।আমি বললাম-হুম খুব সুন্দর নাম মা'মনি।মেয়েটা একটু হাসল।হাসিটাও অনেক সুন্দর।তারপর ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে ফারিয়াকে জিজ্ঞাস করলাম।
-কেমন আছ?
-এইতো ভালোই।তোমার কি খবর?
-এইতো চলছে কোনরকম।তোমার মেয়ে কিন্তু দেখতে ভারী মিষ্টি।নামটা আরো বেশি।নামটা কে রেখেছে?
-আমি।তোমার নামের সাথে মিল রেখেই নামটা রেখেছি।
-এ তো তোমার পাগলামি।যাইহোক দেশে কবে আসছো?
-এই তো গতকাল।
-কতদিন আছো?
-এইতো একসপ্তাহের জন্য আসা।এক সপ্তাহ পরেই চলে যাবো।
-ও।তৌসিফ কোথায়?
-ও বাসায় আছে।বিশ্রাম নিচ্ছে।
-তাহলে একা বের হলে কেন? তুমিও বিশ্রাম নিতে।
-একা বের হলাম কোথায়? মেয়েকে নিয়েই তো বের হয়েছি।
-হুম।কোথাও যাবা?
-হুম একটু মার্কেটের দিকে যাব।অরনীর জন্য টুকটাক কিছু কেনা লাগবে।
-আচ্ছা তাহলে যাও।
-তোমার তাড়া আছে?
-তেমন না।তবে একটা টিউশনি ছিল।ওখানে পড়াতে যেতে হবে।কাল আবার স্টুডেন্টের পরীক্ষা।
-তুমি এখনোও চাকরি নাও নাই?
-না।
-তাহলে এখনো?.....
-হুম।
-চাকরির জন্য চেষ্টা কর নাই?
-করেছি।তিন-চার জায়গায় চাকরিও নিয়েছি তবে দু'তিন মাসের বেশি আর চাকরি করা হয়নি।
-কেন?
-অফিসের বস,অন্যান্য কর্মচারীদের আমার ভালো লাগত না।নিন্ম শ্রেণির মানুষদের উপর যারা অমানবিক অত্যাচার চালায়,যারা ক্ষণে ক্ষণে অন্যায় কাজ করে তাদের সাথে আমি কাজ করতে ইচ্ছুক নই।তাই চাকরিগুলো আর করা হত না। এখন তো আর চাকরির জন্য চেষ্টাও করিনা।
-তাহলে চলো কিভাবে?
-এইতো বাবার দোকানে একটু সময় দেই। দু'একটা টিউশনি করানো হয়।এভাবেই চলে যাচ্ছে।
-তুমি আর পরিবর্তন হলেনা।
-কি আর করার বল? প্রকৃতি কিছু মানুষকে এমন করেই রেখেছে।
-প্রকৃতির দোষ দিবেনা।দোষ তো তোমার নিজের।একগুঁয়েমির জন্য নিজের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছ।ভবিষৎ নিয়ে কোন চিন্তাই তোমার নাই!
-আবার শুরু করলে? আর রাস্তায় দাড়িয়েই কি সব কথা বলবে?
-না।
-তৌসিফকে সাথে করে বাসায় আইসো।
-আচ্ছা যাব।আংকেল আন্টি কেমন আছে?
-এইতো ভালোই।
-বিয়ে করেছো?
-না।
-কেন?
-আচ্ছা আমি তাহলে এখন যাই।পরে কথা বলি? তুমি তাহলে মার্কেটের দিকে যাও।ভালো থেকো।মা'মনি তুমিও ভালো থেকো।
ফারিয়ার সাথে দীর্ঘ ৭ বছর পর আবার দেখা হবে তা আমার কল্পনার বাহিরে ছিল।ফারিয়ার আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার পর আমি আর তাকে কখনো খুঁজিনি।শুনেছিলাম বিয়ের পর জামাই সহ অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছিল।খুঁজেও বা কি লাভ হত? আমি তো বয়স আর বেকারত্বের কাছে বন্দী ছিলাম;নিরুপায় ছিলাম।মেয়েটা আমায় খুব ভালোবাসত।সম্পর্ক চলাকালীন সময়ে আমায় কত কিছু বলত।আমাদের বিয়ের পর সংসার কেমন হবে? কিভাবে সাজাবে? এই নিয়ে কত পরিকল্পনা।ও'র কিছু দুষ্টামি বাচ্চাদের মত মনে হত।আমি ও'র কান্ড দেখে শুধু হাসতাম;মাঝে মাঝে বিরক্তও হতাম।প্রায় সময় আমায় বলত,আমাদের সন্তান ন'জন হবে এবং ও একটা ক্রিকেট টিম গঠন করবে।টিমের নাম থাকবে একক সংসার টিম।সে টিমের কেপ্টেন আমি আর ফারিয়া ভাইস কেপ্টেন।ভালোই লাগত।ফারিয়া যেদিন ও'র বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা আমায় জানিয়ে ছিল তখন আমার মনে হয়েছিল এই পুরো আকাশটা আমার মাথায় ভেঙ্গে পড়েছে।আমার নৌকা অন্যকেউ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।ফারিয়াও অনেক কেঁদেছিল।অনেক্ষন আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল।আমি নিরুপায়;নিশ্চুপ হয়ে শুধু কষ্টগুলো সয়ে যাচ্ছিলাম।ফারিয়া বলেছিল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি কিন্তু আমার নিরুপায়ের দৃশ্য দেখে ও বলে উঠল আমি নাকি খুব স্বার্থপর।তারপর ও চলে গেল।আমি বসে রইলাম।আর কোনদিন ফারিয়াকে খুঁজিনি।সত্যিই আমার কিছু করার ছিল না।মনে মনে ফারিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।সুখে থাকুক আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনাই করেছিলাম।
দু'দিন পর আমি বাহিরের থেকে এসে দেখি ফারিয়া মা'য়ের সাথে বসে কথা বলছে।বাবাও পাশে বসে আছে।আমি ভিতরে প্রবেশ করেই ফারিয়াকে জিজ্ঞাসা করলাম।
-কখন এলে?
-এইতো এক থেেক দেড় ঘন্টা হবে।
-ও।অরনী কোথায়? তৌসিফ ভাই?
-অরনী আন্টির রুমে ঘুমাচ্ছে।তোসিফ একটু কাজে এক জায়গায় গিয়েছপ।বলল কাজ শেষ করপ রাতে আসবে।
-আচ্ছা।তাহলে তুমি মা'য়ের সাথে কথা বল।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।তারপর অরনীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ও'র সাথে কথা বলব।বাবার দিকে তাকিয়ে বাবাকে বললাম-কি ব্যাপার বাবা,তুমি দোকান খুলোনি? বাবা জবাব দিল-খুলেছি তো।ফারিয়া মা'কে দেখে দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে এলাম।
বাবা এমনি করত।যখনি ফারিয়া আমাদের বাসায় আসত তখনি উনি দোকান বন্ধ করে চলে আসত।ফারিয়ার সাথে আড্ডা দিত।আমি ফ্রেশ হয়ে আমার রুমে ডুকতেই ফারিয়া ডাক দিল।
-আমিও তোমার রুমে যাব।
-কেন?
-কেন আবার? তোমার রুমে কি যেতে মানা?
-না।
-তাহলে? আন্টি বলল আমি যাওয়ার পর তুমি নাকি কাউকেই তোমার রুমে ডুকতে দাওনি? লক করে বাহিরে যাও।রুমে থাকলে দরজা লক করে থাক? তাছাড়া আমি বাসায় এসেও দেখি রুম লক করা।
- ও তেমন কিছুনা।দেখ তো অরনী উঠেছে কিনা?
-রুম খুলো আগে।তোমার রুমটা একটু দেখি।কতদিন হল তোমার রুমে যাওয়া হয়নি।তোমার বিছানায় শোয়া হয়নি।তোমার টেবিলে বসা হয়নি।বেলকোনিতে বসে গল্প করা হয়নি।
-পাগলামি করনা।তুমি অরনীকে জাগাও?
-কেন অরনীকেই শুধু তোমার রুমে ডুকতে দিবা নাকি? আমি ডুকতে পারব না?
নিষেধ আছে?
-তা তো বলিনি।
মা দূর থেকে ফারিয়াকে বলে উঠল,পাগলকে রাগাইসনা।ফারিয়া বলে উঠল,ওর রাগকে কে ভয় পায়? অরনীও ঘুম থেকে উঠে পরল।ফারিয়া জোর করেই আমার হাত থেকে রুমের চাবিটা নিয়ে দরজার লক খুলে ফেলল।মা এবং বাবা দূরেই দাড়িয়ে আছে।দরজা খুলে রুমে ডুকেই ফারিয়া কাঁদতে শুরু করল।ড্রিম লাইটের আলোতে সারা রুমের দেয়াল জুড়ে ওর ছবি আর ছবি আর ও'কে নিয়ে লিখা ছোট ছোট কবিতাগুলো।আমি রুমের দরজার সামনেই দাড়িয়ে ছিলাম। তারপর ও'র কান্নার আওয়াজ শুনে দরজার কাছ থেকে সরে এলাম।অরনীও ঘুম থেকে উঠে গেছে।আমায় দেখেই আবদার করে বসল গল্প শুনাতে।অরনীকে আমি গল্প শুনাচ্ছি।ফারিয়া কিছুক্ষণ পর রুম থেকে বের হয়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে আরো বেশি করে কাঁদতে শুরু করল।আমি আবেগীপ্রবন হয়ে পরলাম।আবেগ কে নিয়ন্ত্রণ করে ও'কে বলে উঠলাম,ফারিয়া ছাড়! এইসব কি হচ্ছে? অরনী,মা-বাবা সামনে আছে।ছাড়! মা-বাবার দিকে তাকিয়ে দেখি উনারা কাঁদছেন।আর অরনী হাসতেছে।শুধু আমার চোখেই জল নেই।ফারিয়ার কাঁদো কন্ঠে বলে উঠল।
-তুমি আমায় এখনো ভালোবাসো?
-এখন আর এইসব বলে কি লাভ?
-না তুমি বল, আমায় এখনো ভালবাসো?
-হুম অনেক ভালবাসি।
-তুমি বিয়ে কর নি কেন?
-একজনকে ভালবেসে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করব কিভাবে, বল?
-তাহলে সেদিন আমায় আটকালে না কেন?
কেন পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার জন্য রাজি ছিলেনা?
-আমি নিরুপায় ছিলাম।জানো ফারিয়া তুমি আমায় যেদিন ছেড়ে চলে গিয়েছিলে সেদিন মনে হয়েছিল আমি মনে হয় আমার তৃতীয় রত্নটা হারিয়ে ফেলেছি।তুমি আমায় বলেছিলে না আমি খুব স্বার্থপর? হুম ফারিয়া আমি স্বার্থপর; খুব স্বার্থপর।কারন যে নিজের সাথে স্বার্থপরতা করতে পারে তার চেয়ে বড় স্বার্থপর আর কে হতে পারে?
ফারিয়া নিশ্চুপ হয়ে গেল কিন্তু ও'র চোজের জল থেমে নেই।অরনী বসা থেকে হঠাৎ বলে উঠল-জানো আঙ্কেল আমি না তোমায় অনেক আগে থেকেই চিনি।বিদেশে আম্মু প্রায় সময় তোমার ছবি দেখিয়ে আমাকে আর আব্বুকে তোমাদের প্রেমের কথাগুলো বলত।আমিই তোমাকে দেখার জন্য আব্বুর কাছে বায়না করি আর আব্বু ছুটি পেয়েই আমাদেরকে দেশে নিয়ে এসেছে।আব্বুও তোমাকে দেখতে চেয়েছিল।অরনীর কথাগুলো শুনে ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে আমার কঠিন মনও কাঁদতে শুরু করে দিল।মেয়েটা এত ভালবাসে আমায়? একটুপর তৌসিফ সাহেব বাসায় আসল।তারপর সবাই একসাথে বসে খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম।তারপর ফারিয়া,অরনী,তৌসিফ সবাই চলে গেল।আর হয়ত দেখা হবেনা।ফারিয়া যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল যেন বিয়ে করে নেই।আমি আমার রুমে চলে গেলাম।দরজাটা লক করে দেয়ালে ও'র ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে আবেগ জড়িতে বলে উঠলাম,জানো ফারিয়া আমি স্বার্থপর।সত্যিই আমি খুব স্বার্থপর।তোমায় ভালবেসেও আজও আমি স্বার্থপর।

"#Bristi_patuiary
-