ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Tuesday, September 26, 2017

একজন খারাপ বাবার চিঠি.........


বাবু,
তুই হয়তো জানিস না অফিসের হাজার কাজের ফাঁকে একটুখানি অবসর পেলেই আমি তোকে চিঠি লিখতে বসি। কিন্তু কেনো যেনো একটি চিঠিও তোকে দেওয়া হয় না। সব জমা পড়ে থাকে আমার ডায়েরিতে। আমি চাই না তুই আমার ভেতরের আবেগ, অনুভূতিগুলো দেখ। তুই সবসময় আমাকে খুব নিষ্ঠুর ভাবিস, তা আমি জানি। মনে মনে অনেক গালি দিস তোর বাবাকে। কিন্তু তুই হয়তো এটা জানিস না যে তোর এই বাবাটা তোর শত গালি সত্ত্বেও তোকে ঠিক ততটাই ভালোবাসে ঠিক যতটা ভালোবেসেছিলো তোর জন্মের সময়।


তুই জানিস, তোকে যখন আমি প্রথম কোলে নিয়েছিলাম তখন তোর চেয়ে বেশি আমিই কেঁদেছিলাম। ডক্টররা আমাকে দেখে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, বেলাল সাহেব আপনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগে আপনারই জন্ম হল। আর কত কাঁদবেন? বেবিটাকেও একটু কাঁদতে দিন। তবুও আমি কেঁদে চলেছি ছোট্ট বাচ্চার মত আর কিছুক্ষণ পরপরই তোর ছোট্ট কপালে চুমু খাচ্ছি। তোকে আমি সবসময় আমার কোলে করে নিয়ে বেড়াতাম, মনে আছে? আর তুই কতবার যে আমার শার্টের বুকপকেট জলভর্তি করেছিস, তা তো গুনেও শেষ করা যাবে না।
শুধু কি তাই? তুই যে কত চঞ্চল ছিলি তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। খালি কোল থেকে নামতে চাইতি। আমি বারণ করতাম।আর তুই হাত পা ছুঁড়ে আমার গালে চড় মারতি। একবার তো আমার চোখে এমন গুতো দিয়েছিলি যে পরে চোখ ব্যান্ডেজ করতে হয়েছিলো।
তুই মনে হয় ভাবতি, তোর বাবাটা খুব খারাপ। কিন্তু তুই কখনো এটা ভাবতি না যে তোকে কোল থেকে নামালে তুই পড়ে যাবি, ব্যথা পাবি। কত শত ভয়ে তোর বাবার মনটা চুপসে যেতো! তাই তো তোর বাবাটা সারাজীবন তোর কাছে খারাপই থেকে গেলো রে!
তোর প্রথম স্কুলে যাওয়ার কথা মনে আছে, বাবু? তুই আমার কোলে উঠে কত প্রশ্ন করেছিলি— ‘বাবা, বাবা, স্যাররা আমাকে মারবে না তো, আমি পড়া পারবো তো?’ আর আমি একটু পর পর তোর গালে চুমু খাচ্ছিলাম আর বলছিলাম আমার বাবুটা সব পারবে।
তোর বয়স তখন তখন সাত বছর। তুই অনেক জেদ ধরলি ফুটবলের জন্য। আমি তো দিবোইনা। তুইও তোর জেদে অটল। শেষমেশ বাধ্য হয়ে একটা ফুটবল কিনেই দিলাম। সবসময় তোর সাথে সাথে থাকতাম। পাছে আবার ফুটবল নিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যথা পাস। এমনিতেই যে শুকনা ছিলি তুই। ছিলি কি এখনো তো শুকনাই আছিস। একদিন ফুটবল খেলতে খেলতে তুই মাথা ঘুরে পড়ে গেলি। আর আমার সে কি দৌঁড়াদৌঁড়ি! পরে আমি তো রাগ করে তোর ফুটবলটাই চাকু দিয়ে কেটে ফেলেছিলাম। আর আবারও তোর চোখে হয়ে গেলাম পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ বাবা। কিন্তু এই খারাপের মধ্যে একটা ভালো লাগা আছে, জানিস? আছে তোর প্রতি আমার অসীম ভালোবাসা। তাই তো আমি তোর কাছে সারাজীবন খারাপ বাবা হয়েই থাকতে চাই।
আস্তে আস্তে তুই বড় হতে থাকলি আর আমার ভয় আরো বেড়ে যেতে লাগলো। চোখের আড়াল হলেই হাজারো শঙ্কায় বুকটা কেঁপে ওঠে তোর কোন বিপদ হল না তো। আর আমার এই ভয়ের কারণে তুই বঞ্চিত হলি অনেক কিছু থেকে। আশেপাশের নানা ঘটনা দেখে অনেক শঙ্কিত হয়ে যেতাম, এই না এগুলো আমার বাবুকে স্পর্শ করে। তোকে সবসময় বিপদ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে আমার মনটা খালি আনচান করত। আর তোকে এই বিপদ থেকে দূরে রাখতে গিয়ে আমার মুখের কথা যথেষ্ট ছিল না, একদিন তোকে শাসন করা শুরু করলাম। আমি আরো খারাপ হয়ে গেলাম তোর কাছে। তুই যত বড় হচ্ছিস, আমি ততই খারাপ হচ্ছি। কিন্তু বিশ্বাস কর বাবু, এই খারাপ হওয়ায় আমার কোন দুঃখ নেই, নেই কোন আফসোস। তবে বুকটা কান্নায় ফেটে যেতে থাকে, যখন তুই আমার সাথে
অভিমান করে ভালো করে কথা বলিস না। কত রাত যে আমি তোর পাশে বসে কাটিতেছি, তুই হয়তো জানিসই না।
তুই তোর মাকে বলতি, ‘মা, মা, বাবা আমাকে মেরে কি খুব মজা পায়?’ আমি আড়ালে কথাগুলো শুনতাম আর চোখের পানি ফেলতাম। তুই কখনো আমার চোখে পানি দেখিস নি। ভাবতি তোর বাবার কোন মন নেই। কিন্তু তুই তো জানিসই না যে তোর বাবার মনটা এতো নরম যে সবসময়ই তোর বিপদের শঙ্কায় থাকে।
বাবু, তুই বড় হচ্ছিস। কিন্তু আজও আমার কাছে সেই ছোট্ট বাবুটিই আছিস। এখনও তোকে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে তোর হাতের আলতো চড় খেতে। ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলতে, ‘আমার বাবুটাকে আমি অনেক ভালোবাসি। পৃথিবীর সব ভালোবাসা এনে একখানে জড়ো করলেও আমার ভালোবাসার সমতুল্য হতে পারবে না। অনেক ভালোবাসি বাবু তোকে! অনেক ভালোবাসি!’
ইতি,
তোর খারাপ বাবা