ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Sunday, August 6, 2017

সিনিয়র বউ

----------:সিনিয়র বউ:----------
:
:
:
দেখুন আমি কান্না করা পছন্দ করিনা..দয় করে আর কান্না করবেন না..আপনি খাটে শুয়ে পড়ুন আর আমি ফ্লোরে ঘুমাচ্ছি..<আমি>
.
মেয়েটা কান্না করেই চলছে..
এদিকে মেজাজ খারাপ হয়ে আছে । এভাবে অপ্রস্তুত ভাবে করে আমাকে বিয়ে করতে হবে আমি ভাবিনি..তার উপর মেয়েটার কান্না..
লাইট অফ করে শুয়ে পরলাম ।
.
»আপনার কান্না করতে মন চাইলে বাইরে গিয়ে কান্না করেন ।
». . . .
.
কান্নার আওয়াজ কিছুটা কমে আসছে বুঝতে পারছি.
.
সকাল বেলা উঠে গোসল করলাম.সে মনে হয় আমার আগেই উঠে গোছল করেছে. যাক ভালো.
.
খাবার টেবিলের দিকে গেলাম । যাওয়ার সময় শুনতে পেলাম আব্বা মনে হয় কারো সাথে কথা বলতেছে ফোনে..

কথাগুলো ঠিক এইরকম. আব্বা: না,তোমার মতো ছেলের যায়গা হবেনা কোনদিন এইবাড়িতে.তুমি আমার মানসম্মান ডুবিয়ে দিয়েছো.কাল আশিক ছিলো বলে পার পেয়েছি.
.
ফোনের ঐপাশে আমার ভাইয়া কথা বলছে বুঝতে পারছি.কিন্তু তার কথা তো আর আমি শুনতে পাচ্ছিনা..
কথায় আর তাল দিয়ে খাবার টেবিলের দিকে ছুটলাম.উনার পাশে মানে আমার বউয়ের পাশে বসতে হলো.

কোন রকম খাওয়াটা শেষ করে বাইরে গেলাম বন্ধুদের কাছে আমার মর্মান্তিক খবরটা শেয়ার করতে ।
.
আজ ভাইয়ার বিয়ে..মা বাবার পছন্দের পাত্রীর সাথে..
অনেক ব্যস্ততা আজ বাড়িতে..
সবাই যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠছি..বরের গাড়িতে ভাই আর তার বন্ধু,ঐ গাড়িতে সে আর কাওকে নেবে না বলছে..

আবার আমাদের গাড়ির পিছনে বরের গাড়ি আসবে এটা ভাইয়া বলছে..
অবশেষে গাড়ি ছারলো.কনের বাড়িতে পৌছাতে প্রায় ৪৫ মিনিট লাগবে..
.
.
আমরা কনের বাড়িতে চলে এসেছি..কিন্তু বরের গাড়ি এখনো আসছে না..গাড়িতো আমাদের গাড়ির পিছনেই ছিলো..এত্ত লেট তো হওয়ার কথা না..

ভাইয়ার নাম্বারে কল করার জন্য ফোন হাতে নিলাম তখনি ভাইয়ার কল..
--হ্যালো..<আমি>
--আব্বাকে ফোনটা দে তো..
আব্বার সাথে কি কথা বললো ভাইয়া? আর আব্বার মুখটা এতো গম্ভীর দেখাচ্চে কেনো!
.
ফোনে অটো কলরেকর্ড করা আছে..তাতে আব্ভার আর ভাইয়ার কথা শুনে আমারই গলা শুকিয়ে গেলো..কারন ভাইয়া এই বিয়ে করবেনা,সে পালিয়েছে.তার গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করবে..

ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড আছে এই কথাটা আগে বললে কি হতো..
আব্বাকে মামার সাথে আর কনের বাবার সাথে কথা বলতে দেখলাম..
.
একটু পর আব্বা আর মামা আমার কাছে এগিয়ে আসলো..
.
--চলো আশিক এই বিয়ে তুমি করবে..তোমার ভাই তো পালিয়েছে..<আব্বা>
--আমি!!! কি বলছেন আব্বা! আমারতো বিয়ের বয়স হয়নি..
তাছারা বিয়ে করে বউকে খাওয়াবো কি?

--সেটা আমি দেখবো..চলো তারাতারি ।
.
আমি জানি আব্বা যা বলেন তাই করেন..এখানে যদি না করি তাহলে আমাকে মেরে হাড্ডি মাংস এক করে ফেলবেন ।
.
.
বাধ্য হয়ে আমাকে বিয়েটা করতে হলো ।
.
বউটা এত্তো কাঁদছে কেনো? বউ নিয়ে বাড়ি আসার সময় তার মাকে জরিয়ে ধরে সেকি কান্না..আবার গাড়ির ভিতরেও কান্না..
.
অতঃপর বউ নিয়ে বাড়ি আসলাম..
..
আমি আশিক । অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ি..আর আমার বউ পড়ে আমার এক ক্লাস উপরে..
এজন্যই বউকে মেনে নিতে পারছিনা..আর এদিকে বউ ও আমাকে মেনে নিতে পারছেনা..
.
ভাইটা যে কি.আমাকে বিপদে ফেলে উনি গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে দিছে..
.
বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেলো..বউয়ের সাথে খুব একটা কথা হয়না....
.
--শোন আজ থেকে আমি তোমাকে তুমি করে ডাকবো..আর তুমি আপনি করেই ডাকবে..<বউ>
--কেনো!

--কারন আমি তোমার সিনিয়র..
--তো কি হইছে? মনে রেখো তুমি সিনিয়র হলেও আমার বউ"জুনিয়র হলেও আমার বউ..
--হা হা হা..
--হাসলে কেনো?

--এইযে আমাকে তুমি করে বলছো..তাই হাসলাম..
--তো কি হইছে..তুমি আমার বউ.বুঝছো..
--বাব্বাহ.বলদের মুখে আবার কথা ফুটছে!

--কিহ? আমি বলদ!
--নয়ত কি,যে নিজের বউকে আপনি করে বলে.
সে বলদ নয়ত কি?
.
বাহ.আমার বউটা হাসলেতো দারুন সুন্দর দেখা..
আমি মনে হয় এরকম হাসি প্রথম দেখলাম..এরকম সিনিয়র একটা বউ পেয়ে বিরক্ত হইছিলাম..এখনতো ভাইয়াকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করছে..
--আমিতো তোমার প্রেমে পরে যাচ্ছি..(আমি)

--মানে!!
-{একি বলে ফেললাম আমি!!}
না কিছুনা..<তারাতারি চলে আসলাম>
°°
°°
--তোর ভাবি ফোন করেছিলো আমায়..তারা এই বাড়িতে আসতে চায় । (আব্বা)
--আপনি কি তাদের মেনে নিয়েছেন?
--হ্যা,বৌমা কান্না করছিলো..তাছারা সব ঠিক হয়ে গেছে তো।
--আচ্ছা ঠিক আছে..
..
..
৬ মাস পর___
--এই ওঠো ওঠো.আযান হচ্ছে,যাও নামায পরে এসো..(বউ)
--হুম
--উঠবা, নাকি পানি আনবো?
--হুম
.
দারাও তোমায় ঘুম পারাচ্ছি..এই বলে যখনি আমর উপর থেকে চাদর তুলতে আসলো.তখনি ধরে ফেললাম..

--ছারো..আমি নামাজ পরবো..এখন কোনো দুষ্টামি নয়..
--উম্মম্মম্মাহ.
--এটা কি হলো! বললামতো নামায পরবো..এখন দুষ্টামি করা যাবেনা। ওঠো,তুমিও নামায পড়তে যাও..
··
..
অতঃপর ওযু করে নামায পড়তে গেলাম...
..
যাওয়ার সময় দেখি ভাইয়াও বের হচ্ছে চোখ ডলতে ডলতে..
.
ভাইয়াকে দেখে গান ধরলাম___
-তুমি না থাকলে সকালটা এতো মিষ্টি হতোনা..তুমি না থাকলে মেঘ করে যেতো বৃষ্টি হতোনা।
--চোপ.দুরে গিয়া বক বক কর.(ভাইয়া)

--আমিতো গান গাচ্ছিলাম.,তাছা
রা কথাটা কিন্তু সত্যি..তুমি পালিয়ে ছিলে বলে এমন একটা মিষ্টি বউ পেয়েছি.
--তো আমি কি ঝাল বউ পাইছি নাকি!
-আমিতো তা বলিনাই..আসলে তোমার কারনে এই বয়সে বউ পাইছি।

--আজাইরা প্যাচাল রাখ.চল নামায পড়ে আসি।
--হুম চলো।
:
     ----------:সমাপ্ত:----------

clt #Bristi
S+R.tv

ভালোবাসার গল্প

মোটরসাইকেলের পেছনে বসে বসে
ভার্সিটিতে যেতে ভালই লাগে ত্রিণার । যদিও
বান্ধবীরা অনেকভাবে ঠাট্টা করে ওকে পঁচায় ।
পঁচানোর কারণ অবশ্য ও নিজে একটা বের করে
নিয়েছে । কারণটা হল মোটরসাইকেলে ওর
সামনে বসা মানুষটা , যাকে অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও ত্রিণার
বড়ভাইয়া বলে ডাকতে হয় ...
...
মায়ের মতে এই ম
কারণে অকারণে বকাবকি করে । বলতে গেলে
ত্রিণার ভাল-লাগার সবকিছুতেই বাধ সাধে । এই যেমন
কদিন আগে ত্রিণার বান্ধবীরা সবাই মিলে একটা
ট্যুরে গিয়েছিল । ত্রিণার খুব ইচ্ছে ছিল ওদের
সাথে যাবার , কিন্তু একমাত্র ভাইয়ার কারণে যাওয়া হল না
কি বলল?
বলল , “তোর যদি যেতে এতোই ইচ্ছে হয়
তাহলে আমার সাথে যাবি । আমি তুই আর মা , আমরা
তিনজন মিলে ঘুরতে যাব ওই একই জায়গায় । ”
ভাইয়ার কথা বিশ্বাসযোগ্য । এই একটা ব্যপারে ত্রিণা
দ্বিমত পোষণ করতে পারে না যে, এই ভাইয়াটা এক
কথার মানুষ । জীবনে কখনও ভাইয়া নিজের কোন
কথার বরখেলাপ করেনি , তা যত ছোট ব্যাপারই
হোক না কেন ।
আর ত্রিণার ব্যাপারে ?
পুরো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে , কিন্তু ত্রিণা যদি
একটা কিছু চায় সেটা একেবারে সময়মত ওর কাছে
পৌঁছে যাবে ।
কিন্তু অতকিছু ওর লাগবে না । ওর দরকার একটু
হেসে 
যেমনই হোক বাইরে লিমার সাথে সবসময়ই ভাল
ব্যবহার করে , হেসে কথা বলে । অন্তত
বান্ধবীদের সামনে ওর মান-সম্মানটুকু রাখে ।
কিন্তু ওর বড়ভাই ?
কোনদিন ওর বান্ধবীদের সাথে একটু হেসে
কথা বলেছে , এমন কাহিনী ঠাকুরমার ঝুলিতেও
পাওয়া যাবে কিনা স্বন্দেহ আছে । এমনকি সালাম
দিলে তার উত্তরেও শুধু মাথাটা উপর নিচ করে চলে
যায় ।
...
যাই হোক, ভাইয়ার কথা বলতে গেলে শুধু বলতেই
হবে । আর শেষ হবে না । প্রতিদিনের মত আজও
ভাইয়ার সাথে ভার্সিটি গেট পর্যন্ত দিনের সবচেয়ে
বোরিং জার্নিটা শেষ করল ত্রিণা । মোটরসাইকেল
থেকে নেমে যাওয়ার সময় ভাইয়া হঠাৎ ডাক দিল ,
-“ত্রিণা”
-“জ্বী ভাইয়া”
-“এদিকে আয়”
... ত্রিণা ভাইয়ার সামনে গেল । তারপর ভাইয়া ত্রিণার
ডানপাশের ঝুঁটিটা ধরে টেনেটুনে ঠিক করে দিল ।
আর বলতে লাগল , “ভার্সিটিতে উঠে গেলি এখনও
চুলের ঝুঁটিটাও ঠিকমত বাঁধতে শিখলি না”
ওহ! বলতে ভুলেই গেছি । ত্রিণাকে একমাত্র ওর
বড়ভাইয়ের জন্যই এখনও এই বয়সে চুলে ঝুঁটি
বেধে ভার্সিটিতে আসতে হয় । এটাও বলা চলে
ভাইয়ার এরেকটা অত্যাচার ওর উপরে । ক্লাসের
ছেলে গুলো রীতিমত ওকে “লাল ঝুঁটি কাঁকাতুয়া”
নাম দিয়ে দিয়েছে । তাই একটা উপায় বের করে
নিয়েছে ও । প্রতিদিন ভাইয়াকে দেখিয়ে
দেখিয়ে ঝুঁটি করে ভার্সিটিতে আসে আর ঠিক তার
পর পরই ওয়াশরুমে গিয়ে চুল ছেড়ে দেয় । কিন্তু
জমের মত ভয়ঙ্কর ভাইয়াকে কি এসব বলা যায়? তাই
মুখ বুজে সহ্য করে নিয়েছে ।
...
যাই হোক , ঝুঁটি ঠিক করে দিয়ে ভাইয়া একটা একহাজার
টাকার নোট ধরিয়ে দিল । তারপর বলল , “আজকে
তো মা দিবস । দুপুরে ভাল কোন রেস্টুরেন্টে
গিয়ে মা-মেয়ে ভাল কিছু খেয়ে নিস । আমার
অফিসে আজকে অনেক চাপ থাকবে । নাহলে
আমিই সময় করে চলে আসতাম । কি ! পারবি তো ?”
“হ্যা পারব।”
ভাইয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটু
অবাক হল ত্রিণা । ভাইয়া কোন ফেসবুক টেসবুক
চালায় না । তেমন কোন সোশাল মিডিয়ার সাথেও
যুক্ত না যেখানে ত্রিণা নিজে ফেসবুক টুইটার সব
খুলে বসে আছে । কিন্তু আজ যে মা দিবস এই
ব্যাপারটা ওর আগে ভাইয়াই বলে দিল ! ব্যাপারটা কিরকম
না !
নাহ! এতো নতুন না । বলতে গেলে প্রায়
প্রতিবপছর ভাইয়া এইদিনটা পালন করে এভাবেই ।
এভাবে বলতে , ত্রিণাকে টাকা দিয়ে দেবে অথবা
কোন কোন বছর রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার
কিনে এনে বাসায় দিয়ে যাবে । কিন্তু সরাসরি মাকে
কখনও বলতে দেখা যায় নি “হ্যাপি মাদারস ডে , মা” ।
এক মিনিট ! এই কাজটা ভাইয়া সবসময়ই করে ।
সবধরনের অনুষ্ঠানে ও কেমন জানি পেছনে
থাকতে চায় । মায়ের জন্মদিন এমনকি ত্রিণার নিজের
জন্মদিনগুলোতেও ওর বার্থডে গিফটটা কখনওই
ভাইয়া নিজের হাতে ওকে দেয় নি । সবসময় মা দিয়ে
এসেছে । সবকিছু নিজে করে , কিন্তু কাউকে
বুঝতে দেয় না আসলে ও-ই যে করে এসব ।
কিরকম যেন নিজেকে লুকিয়ে রাখার স্বভাব ওর । কি
যে সুবিধা আছে এতে , একমাত্র ভাইয়া নিজেই
জানে !
...
যাই হোক , এক্সাইটেড হয়ে ত্রিণা ওর সব
বান্ধবীকে মা দিবসের কথা বলে । সবাই ওর কথা
শুনে এক্সাইটেডও হয় । কিন্তু সেই
এক্সাইটেডনেস ফেসবুকে মায়ের সাথে ছবি
অথবা প্রোফাইল পিকচার আপলোড করা পর্যন্তই
থাকে । এরপর “মা দিবস” বছরের বাকী তিনশো
চৌষট্টি দিনের মতই হয়ে যায় ।
দুপুরে কোনভাবেই মাকে ঘর থেকে বের করা
গেল না । অনেক জোর-জবদ্দস্তি করেও মাকে
বের করতে পারল না ত্রিণা । কারণ একটাই ! তার গুণধর
ছেলেকে ছাড়া তিনি বাইরে খাবেন না । শেষ
পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে ভাইয়াকে কল দিল ত্রিণা । একবার
রিং পড়ার সাথে সাথেই কল রিসিভড । এই ব্যাপারটা
সম্পর্কেও একটু না বললেই নয় । বাসায় থাকার সময়ও
অনেকবার দেখেছে ত্রিণা , অনেক গুরুত্বপূর্ণ
কল আসলেও ভাইয়া হেলেদুলে ওগুলো রিসিভ
করে । এমনকি বসের কল হলেও এর ব্যাতিক্রম হয়
না । অনেকসময় তো রিং হয়ে হয়ে কলগুলো
কেটেও যায় । কিন্তু ত্রিণার ব্যাপারটা পুরোই
উল্টো । এপর্যন্ত জীবনে কখনওই ভাইয়াকে
কল করে এক থেকে দুই রিং এর বেশি অপেক্ষা
করতে হয় নি ওকে । বিদ্যুৎ বেগে কল রিসিভ
করে ফেলে ভাইয়া । মাঝেমাঝে বিরক্ত হয় ত্রিণা ।
কারণ ফোনে ব্যালেন্স না থাকলে অথবা কম
থাকলে মিসকলটাও দেয়া যায় না ওকে । পরে যদিও
সাথে সাথেই ফোনে ব্যালেন্স চলে আসে ।
তারপরেও এই একটা “ভাইয়া” নামের পেইনটা ওর
জীবন থেকে আর গেল না ।
...
...
যাই হোক ভাইয়াকে ফোন করে মায়ের সকল
বৃত্তান্ত বলল ত্রিণা । শুনে ভাইয়া এমন একটা সমাধান
বের করল যেটা শুনে ত্রিণার রাগের পরিমাণটা
আরোও বেড়ে গেল । সমাধানটা হল , ত্রিণা এখন
আবার বের হয়ে কিছু কিনে নিয়ে আসবে । তারপর
মা-মেয়ে বসে ঘরেই লাঞ্চ করবে । কিন্তু
এরপরের কাহিনী শুনে অবশ্য আবার নিজেকে
শান্ত করে রাখল ত্রিণা । কারণ ভাইয়া বলেছে
বিকেলে অফিস থেকে এসে ওরা তিনজন মিলে
শিশুপার্কে যাবে , রাত পর্যন্ত ঘুরবে তারপর বাইরে
খেয়ে একসাথে বাসায় ফিরবে ।
শিশুপার্ক ! ত্রিণার খুব প্রিয় একটা জায়গা । বয়সটা
অনেক বেড়ে গেলেও এখনও এটার প্রতি
লোভ সামলাতে পারে না ও । আর ভাইয়াও জানে
ব্যাপারটা । তাই মোক্ষম সময়ে এই অস্ত্রটা সবসময়
ব্যবহার করে ।
যাই হোক ভাইয়া যেহেতু এক কথার মানুষ , সুতরাং
সেদিন সত্যি সত্যিই যা যা বলেছে সবই করেছে ।
বলা যায় জীবনের অন্যতম একটা সেরা দিন পার
করেছিল ত্রিণা ।
এভাবেই দিনগুলো কাটতে লাগল ভালভাবেই ...
তারপর একসময় রমজান মাস এল । ঈদের অপেক্ষায়
অপেক্ষায় প্রায় অর্ধেক মাস চলেও গেল । ঠিক
এমন সময় হঠাৎ ভাইয়ার অফিস থেকে অর্ডার এল
ভাইয়াকে এক সপ্তাহের জন্য ঢাকার বাইরে যেতে
হবে । অর্ডার যখন এসেছে তখন তো যেতেই
হবে । মনে মনে একটু খুশিই হল ত্রিণা । যাক অন্তত
এক সপ্তাহের জন্য হলেও ভাইয়ার হাত থেকে
মুক্তি পাওয়া যাবে । কিন্তু এদিকে মা রীতিমত কানাকাটি
শুরু করে দিয়েছে । কিছুই বুঝতে পারল না ত্রিণা ,
জীবনের জন্য তো আর চলে যাচ্ছে না , মাত্র
তো একটা সপ্তাহ । কিন্তু কে শোনে কার কথা ...
যাই হোক , হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে ওঠার আগেই
ভাইয়া ফুরুৎ করে চট্টগ্রাম চলে গেছে ত্রিণার
খেয়ালই নেই । ভাইয়া অবশ্য এরকমই । কখন কি
করে না করে কেউই জানে না একমাত্র মা ছাড়া ।
আচ্ছা মা ছাড়া জানার মত আর আপন কে আছে ?
ত্রিণা নিজেই!
কিন্তু সেই সুযোগ কি ভাইয়া দেয় ওকে ?
নাকি ত্রিণা নিজেই ইচ্ছে করে দূরে সরে থাকে !
অনেক কঠিন কঠিন প্রশ্ন । ধুর ! এসব বাদ এখন ।
এখন শুধুই মুক্তি আর স্বাধীনতা । প্রথম কয়েকটা
দিন অনেক মজায় কাটাল ত্রিণা । যখন ইচ্ছে তখন
বের হয় , বান্ধবীদের সাথে শপিংএ যায় । কোন
বাধাই নেই বলা যায় । মাঝেমধ্যে মা একটু আধটু
বলে বৈকী কিন্তু মা তো! মেনেজ করে ফেলা
যায় ।
কিন্তু ধীরে ধীরে আনন্দের পরিমাণ কেমন
যেন কমে যেতে লাগল ! ত্রিণা নিজেই বুঝতে
পারল না এর কারণটা কি ! কেমন যেন ঘরটা ফাঁকা ফাঁকা
লাগতে শুরু করল । বাবা মারা যাবার পর ভাইয়াই একমাত্র
পুরো ঘর সামলে রাখত । কোনদিন বাবার অভাব
বুঝতে দেয় নি ত্রিণাকে । সবসময় সব ধরনের
সমস্যা থেকে ওকে এমনকি মাকেও দূরে
রেখে নিজে নিজে সেটা সমাধান করার চেষ্টা
করত । বাইরে অনেক কঠিন একটা মানুষ হলেও ,
সবার সাথে একটা দূরত্ব রেখে চললেও
ভেতরে ভেতরে কিন্তু ভাইয়া একটা ছোট্ট শিশুর
মতন । এই একটা ব্যাপার ত্রিণা বুঝতে পারে । এজন্যই
মাঝেমাঝে এই অসহ্য মানুষটাকে মিস করে প্রচুর ,
যেমন এখন করছে ...
হাঁটতে হাঁটতে একসময় ভাইয়ার রুমে ঢুকে পড়ল
ত্রিণা । কখনও কোন ব্যাপারে ভাইয়া ওকে
সীমাবদ্ধতা দেয় নি । এমনকি ওর কম্পিউটারের
পাসওয়ার্ডও ত্রিণার জানা । সামান্য অগোছালো রুমটায়
তেমন কিছুই নেই বলা যায় । দেয়ালে একটা ছবি
আছে , তাও মা-বাবার ।
হাঁটতে হাঁটতে কম্পিউটারের কাছাকাছি গেল ত্রিণা ।
কোনকিছু চিন্তা না করেই ওপেন করে বসল সেটা
। ডেক্সটপে ওয়ালপেপারে একটা চৌদ্দ-পনের
বছর বয়সের মেয়ের ছবি । এই মেয়েটাকে
ত্রিণা চেনে । কারণ ও নিজেই এই মেয়েটা ।
“পিকচার” নামের ফোল্ডারটায় সব ত্রিণার ছবি নয়ত
মায়ের ছবি অথবা কয়েকটা বাবার ছবি । কিন্তু ভাইয়ার
নিজের কোন ছবি নেই ।
হঠাৎ ওকে অনেক দেখতে ইচ্ছে হল ত্রিণার ।
পুরো কম্পিউটার ঘেঁটে একটা ছবি বের করা যাবে
, এই চিন্তা প্রথমেই বাদ দেয়ার ইচ্ছে ছিল । কিন্তু
তারপরেও একবার চেষ্টা করে দেখল , একটা
হলেও যদি পাওয়া যায়...
নাহ! শেষ পর্যন্ত একটা ছবিও পেল না । মাথায় একবার
চিন্তা আসল ভাইয়াকে একটা ভিডিও কল করার ।
কিন্তু কি বলবে কল দিয়ে ?
আর ব্যাপারটা কেমন যেন !
অথবা এই মুহূর্তে ভাইয়া ব্যস্তও থাকতে পারে ,
কে জানে !
তাই এই চিন্তাও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলল ত্রিণা ।
তারপর একটা দারুন বুদ্ধি আসল মাথায় । মায়ের থেকে
এলবামটা নিয়ে আসল ও । এটাতে অনেক ছবি আছে
ভাইয়ার । ছোটকালের , বড়কালের সব ছবি আছে ।
অনেক হাস্যকর আর মজার কিছু মুহূর্তের ছবি
আছে । এলবামটা দেখতে দেখতে বুকের উপর
নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ল ত্রিণা ...
...
...
আগামীকাল ঈদ । আজকে ভাইয়া আসবে । কোন
ঝামেলা না হলে দুপুর নাগাদ চলে আসার কথা । তারপর
ইফতার করবে সবাই মিলে । মনের মধ্যে কেমন
যেন একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে ত্রিণার ।
কেউ না বলে দিলেও ও জানে ভাইয়া কখনও খালি
হাতে আসবে না । কিছু না কিছু নিয়ে আসবেই । কি
হতে পারে ! কি হতে পারে ! চিন্তা করতে করতে
কখন যে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল খবরই
নেই ।
টনক নড়ল যখন মা এসে বলল ভাইয়াকে একটা ফোন
দিতে কোন আপদ-বিপদ হল কিনা , ইফতারের সময়
তো প্রায় হয়ে এল ।
আপদ-বিপদ ! কি যে বলে মা মাঝেমাঝে । ভাইয়াকে
এখনই একটা ফোন দিলে দুবার রিং পড়ার আগেই
রিসিভ করবে সেই মানুষ ।
এখনই একটা কল দিয়ে মাকে চিন্তা মুক্ত করার জন্য
ত্রিণা মোবাইলটা হাতে নিল । তারপর ভাইয়াকে কল দিল
একবার , দুবার , তিনবার , চারবার , এভাবে অনেকবার রিং
হল , কিন্তু কেউই রিসিভ করল না । শেষ পর্যন্ত
কলটা কেটেই গেল । নিজের কানকে যেন
বিশ্বাসই করতে পারল না ত্রিণা । আরেকবার কল করল
ভাইয়াকে । আবার বারবার রিং পড়ে কল কেটে গেল
, কোন উত্তর এল না ...
একটা শীতল রক্তের স্রোত যেন ত্রিণার শিরদাঁড়া
বেয়ে চলে গেল । সারাদিনের রোজায় নাকি
অন্যকারণে কে জানে ! গলাটা শুকিয়ে গেল যেন
ওর ।
জীবনে এই প্রথমবারের মত ভাইয়া কল রিসিভ করল
না ।
কিন্তু কেন?
রাগ করেছে কোন কারণে ?
হতে পারে ও চলে যাবার সময় ওকে বিদায় দেয় নি
, সেজন্য রাগ করেছে । মা বলেছিল , রাতে ভাইয়া
নাকি ওর বিছানার পাশে অনেক্ষণ বসে ছিল । তারপর
যাবার আগে আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে একটা
ছোট চুমু দিয়ে চলে গিয়েছিল । চুমু দিলে ত্রিণা
অনেক রাগ করে সেই ছোটকাল থেকেই ।
একবার নাকি ভাইয়া ওকে জোর করে চুমু দেয়াতে
ভাইয়াকে এমনভাবে কামড় দিয়েছিল যে , পুরো
রক্তই বের করে ফেলেছিল । যাই হোক ,
সেদিন ভাইয়ার উপর রাগ হচ্ছিল , কিন্তু এখন কেমন
যেন লাগছে ।
না! ভাইয়ার কিছু হয়নি , এটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে
ত্রিণা । কিছু হতেই পারে না । কিভাবে হবে?
কোনভাবেই সম্ভব না !
কোন যুক্তি নেই কিন্তু ভাইয়া ঠিক আছে , এটা
অন্তত ত্রিণা নিশ্চিৎ ...
...
কিছুক্ষণ পর ভাইয়ার নাম্বার থেকেই কল আসল
ত্রিণার মোবাইলে । পড়িমরি করে কলটা রিসিভ
করেই বলল , “ভাইয়া”
-“না আমি মিস্টার অমিত না । আপনি কি উনার বোন
বলছেন?”
-“জ্বী বলছি”
-“কাইন্ডলি একটু তাড়াতাড়ি মেট্রোপলিটন হসপিটালে
আসুন ।”
-“মেট্রোপলিটন হসপিটাল? কেন? ওখানে কেন?
আর আমার ভাইয়ার মোবাইল আপনার কাছে কেন?”
কিন্তু ততক্ষণে ওপাশ থেকে কল কেটে দেয়া
হয়েছে । কিছুক্ষণ হ্যালো হ্যালো করল ত্রিণা ।
তারপর এই অবস্থাতেই মাকে নিয়ে হাসপাতালের
দিকে রওনা দিল ও ।
...
ঠিক কিসের উপর এসেছে জানে না । আসতে খুব
বেশি হলে দশ মিনিট লেগেছে । কিন্তু ত্রিণার
কাছে এই দশ মিনিট যেন মনে হয়েছে দশ ঘন্টা ।
যাই হোক , হাসপাতালে গিয়ে মাত্রই লোকটাকে
খুঁজে বের করে নিল ত্রিণা । তারপর লোকটা
ওকে আর মাকে সাথে করে নিয়ে একটা বিশাল
রুমে ঢুকল ।
রুমটায় অনেকগুলো মানুষ শুয়ে আছে যাদের
উপরে সাদা কাফনের কাপড় দেয়া । ত্রিণা আর মা ওই
লোকটার পিছন পিছন হাঁটতে লাগল লাশগুলোর মাঝে
হঠাৎ এক জায়গায় এসে লোকটা থেমে গেল ।
একটা লাশের সামনে । তারপর খুব স্বাভাবিকভাবেই
উপরের কাপড়টা সরিয়ে নিল । তারপর ত্রিণা আর ওর
মাকে ওখানে রেখেই ওখানে থেকে চলে
গেল …
খুব শান্ত অবস্থায় ভাইয়া শুয়ে আছে । একদম একটা
ছোট্ট শিশুর মতন । চেহারায় কেমন যেন
একধরনের প্রশান্তি । সেখানে নেই কোন চিন্তা
, নেই কোন রাগ , নেই কোন ধমক । ভাইয়াকে
ঘুমন্ত অবস্থায় খুব কমই দেখেছে ত্রিণা । বাবা মারা
যাবার পর তো ঘুমাতেই দেখে নি ভাইয়াকে বলা যায়
। হয়ত ওর আর মায়ের চিন্তায় চিন্তায় ঘুমাতো না ।
কিন্তু এখন কেন এভাবে ঘুমাচ্ছে ?
সব চিন্তা শেষ?
হঠাৎ করে চিৎকার করে “ভাইয়া , ভাইয়া” করে ডাকা শুরু
করল ত্রিণা । শরীরে যত শক্তি আছে সবটুকু
দিয়ে ধাক্কা দিতে দিতে ডাকতে লাগল । কিন্তু
কিছুতেই কিছু হল না । তারপর হঠাৎ মায়ের দিকে
চোখ পড়ল ওর । একটা মুর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে
যেন । তারপর পাগলের মত মাকে বলল , “মা, ওমা ,
ভাইয়াকে একটু ডাকো না , আমার উপর রাগ করে
আছে । কথা বলছে না । আমি সরি তো । আর
কোনদিন ঘুমাব না । প্রতিদিন জেগে থাকব । ওমা ,
ডাকো না ভাইয়াকে …”
মা নিরব …
আবার ভাইয়ার কাছে গিয়ে বলতে শুরু করল , “ও ভাইয়া
, একবার তাকাও না । সরি বললাম তো । আর করব না ।
এবারের মত মাফ করে দাও । এই দেখো আমি
চুলে ঝুঁটি করেছি । বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে যাব
না । তোমার সব কথা শুনব , একবার তাকাও না ভাইয়া ,
ভাইয়া , ও ভাইয়া …”
অনবরত ডেকে যেতেই থাকল ত্রিণা । কিন্তু ভাইয়ার
ঘুম আর ভাঙে না ।
তারপর দুটো মহিলা এসে ত্রিণা আর ওর মাকে নিয়ে
যেতে লাগল । ওরা যেতে চাইল না , তাই জোর
করে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে লাগল ওদের
। কিন্তু তারপরেও ত্রিণা ভাইয়াকে ডাকা থামালো না ।
ডাকতে ডাকতে একসময় গলাটা যেন ধরে এল ।
চোখদুটো কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসতে
থাকল । আবছা চোখে খালি ভাইয়ার প্রাণহীন নিথর
দেহটা পড়ে থাকতে দেখল ।
“কিরে দিনের বারটা বাজে , এখনও ঘুমোচ্ছিস , উঠ
উঠ , এতোদিন পর ছেলেটা ঘরে আসবে । আর
তুই এখনও ঘুমাচ্ছিস ?”
… লাফ দিয়ে উঠল ত্রিণা । সাথে সাথেই বুকের উপর
থাকা ছবির এলবামটা বিছানার উপর পড়ে গেল ।
সেখানে একটা ছবি দেখা যাচ্ছে যেখানে ভাইয়া
ত্রিণাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুখে
একটা অমূল্য হাসি নিয়ে ।
খুব ঘেমে গেছে ত্রিণা । এরকম উলটোপালটা
স্বপ্ন গুলো যে কোথথেকে আসে কে
জানে !
যাই হোক , নিজেকে সামলে নিয়ে মাকে
জিজ্ঞেস করল ,
“মা ভাইয়া কয়টা নাগাদ পৌঁছবে?”
-“কোন ঝামেলা না হলে একটা নাগাদ”
-“ঝামেলা মানে?”
-“আরে কত ধরনের ঝামেলা আছে না ? ওইসব
আরকি !”
-“কিসের ঝামেলা ?”
-“আরেহ পাগলি ! ট্রেন লেট করতে পারে ,
রাস্তায় জ্যাম পড়তে পারে । এসব ঝামেলা আরকি”
-“ওহ!”
কিছু না বলেই ওয়াশ রুমের দিকে চলে গেল ত্রিণা
ত্রিণার হঠাৎ এরকম আচরণে একটু অবাকই হলেন মা ।
তারপরেও কিছু বললেন না ।
...
দুপুর দুটো বেজে পাঁচমিনিট ...
ঘরের একোণা থেকে ওইকোণায় পায়চারী
করছে ত্রিণা । সেই একটা থেকে শুরু করে
এতোক্ষণ পর্যন্ত প্রায় একশো বারের মত
জিজ্ঞেস করেছে মাকে , ভাইয়া কেন আসছে না
। উত্তরে মা ভাইয়াকে ফোন দিতে বলে । আর
তখনই আবার লাফিয়ে উঠে বলে , না ! ফোন দেয়া
যাবে না ।
এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় আড়াইটা বেজে
গেল । এখনও ভাইয়ার কোন খোঁজ নেই । এবার
মা নিজেই ফোনটা হাতে নিলেন , ভাইয়াকে কল
করার জন্য । ত্রিণা আবার লাফিয়ে উঠে মায়ের হাত
থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলল , “আমি করছি”
। তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে ভাইয়াকে ডায়াল করল ...
রিং পড়তে হয়ত দশ সেকেন্ডের মত সময়
লেগেছে , এতোটুকু সময়ের মধ্যেই ত্রিণার
হার্টবিট যেন দশগুণ বেড়ে গেছে ।
একবার রিং পড়ল ,
ত্রিণার শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে গেছে ,
দ্বিতীয়বার রিং পড়ল ,
ত্রিণা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল । তৃতীয়বার আর রিং
এর অপেক্ষা করল না , মায়ের দিকে তাকিয়ে , “ওমা”
বলে আবার ঠাই দাঁড়িয়ে রইল ।
এদিকে মা “কি হয়েছে কি হয়েছে” বলতে পাগল
হবার দশা , কিন্তু ত্রিণার মুখে আওয়াজ নেই ।
...
ঠিক এমন সময়ে দরজা দিয়ে ঢুকলো ভাইয়া । ঢুকেই
ত্রিণার দিকে এগিয়ে এসে বলল , “কিরে ফোন
দিয়েছিলি ? আমি বাড়ির সামনেই ছিলাম । তাই রিসিভ করিনি ,
ভাবলাম এখনই তো দেখা হবে ...”
ভাইয়া কথা শেষ করার আগেই ত্রিণা যেন লাফ দিয়ে
ভাইয়ার বুকে ঝাপিয়ে পড়ে হুহু করে কান্না জুড়ে
দিল । একেবারে ছোট বাচ্চারা যেভাবে কাঁদে ঠিক
সেভাবেই যেন কান্না করতে লাগল ।
ত্রিণার এমন আচরণে ভাইয়া একটু অবাক হলই বটে
তারপরেও কিছু বলল না । যেন ভাইয়াও বুঝতে পারল ,
কলিজাটাকে সাতদিন দূরে রেখে যাওয়াটা ওর
মোটেও ভাল কাজ হয়নি ...
Like share followers page and subscribe my YouTube channel 
https://www.youtube.com/channel/UCfe8n5UGJfqkCNijyYrvHLg/feed
https://www.facebook.com/shimunrube/
ভালোবাসার গল্প