ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Wednesday, August 16, 2017

ঢাকা থেকে কলকাতা যাচ্ছিলাম আমি।

স্কিন ডিজিজের উপর একটা
সেমিনারে যোগ দিতে ঢাকা
থেকে কলকাতা যাচ্ছিলাম আমি।
এরকম ট্যুর পেলে সবাই বউ নিয়ে যায়,
আমিও যেতাম, কিন্তু শেষ মুহূর্তের
ঝগড়াটা মাটি করে দিল সব।
ঝগড়াটা বেঁধেছিল ওর মামাতো
বোনের বিয়ে নিয়ে। ও বলেছে
যাবে, আমি বলেছি সময় নেই। ব্যস,
এখান থেকেই বেঁধে গেল কুরুক্ষেত্র।
আমি খারাপ, আমি স্বার্থপর, আমি
অসামাজিক - আরও কত যে জানা
অজানা তকমা কপালে জুটল তার ঠিক
নেই।
ব্যস, রেগে গেলাম আমিও। আমার বউ
হয়ে আমাকে অপমান! এত বড় সাহস! যাও,
নিলাম না কাউকে, একাই যাব
কলকাতা, কার কি?
আসলে ঐ ঝগড়ার কারণেই মনটা খারাপ
ছিল। ঝগড়াটা আমার সমস্ত
চিন্তাভাবনাকে এমন জট পাকিয়ে
ফেলেছিল যে, প্লেনে পাশের
সহযাত্রীর সাথে আলাপের সুযোগই হয়
নি আমার।
আমাকে অনেকক্ষণ ধরে একমনে মুখ কুঁচকে
চিন্তা করতে দেখে ভদ্রলোক বললেন,
“ভাই, আপনাকে এত Tensed লাগছে
কেন?”
প্রথমবার কথাটা ভালোভাবে শুনতে
পাই নি। তিনি আবার বললেন, “ভাই,
কি এত চিন্তা করছেন?”
কল্পনায় তখন বউ আমার পা জোড়া প্রায়
ধরেই ফেলেছে, কান্নাকাটি ক্ষমা
চাওয়াচাওয়ি প্রায় শুরুই করে
দিয়েছে, এমন সময় ঐ কথায় চটকা
ভেঙ্গে গেল আমার। শব্দের উৎসের
দিকে তাকিয়ে দেখি, স্যুট টাই পরা
বেশ স্মার্ট এক বাঙালি ভদ্রলোক ঈষৎ
হাসিমুখে আমার দিকে তাকিয়ে
আছেন।
আমি বললাম, “কিছু বললেন?”
তিনি উত্তর দিলেন, “তখন থেকেই
দেখলাম আপনি খুব Tensed। তাই কৌতূহল
হল আরকি। কি ব্যাপার ভাই? কি
হয়েছে?”
আমি ভদ্রলোকের কথা বলার স্টাইলে
চমৎকৃত হলাম। অসাধারণ শুদ্ধ উচ্চারণে
বাংলা বলেন তিনি। তার পোশাক
আশাকও চমৎকার। ধবধবে সাদা শার্ট,
কালো প্যান্ট, চকচকে কালো স্যুট,
আঁচড়ানো চুল। একটা চুলও অবিন্যস্ত নয়
তার। শার্টে সামান্য ভাঁজও দেখলাম
না আমি। তাছাড়া হাতের রোলেক্স
ঘড়িটাও বেশ দামি। বয়স? হবে
চল্লিশের কাছাকাছি।
আমার এই পর্যবেক্ষণ লক্ষ্য করে তিনি
বললেন, “কি দেখছেন?”
আমি বললাম, “আপনার স্ত্রী-ভাগ্য
নিয়ে মনে মনে আফসোস করছি ভাই।
ছেলেরা একা এতটা ফিটফাট হতেই
পারে না, বিশেষ করে সে যদি
বাঙালি হয়”।
আমার কথা শুনে তিনি হা হা করে
হাসতে লাগলেন। তারপর বললেন, “না
ভাই, আপনি যা ভাবছেন তা নয়। আমি
অবিবাহিত”।
অবাক হলাম। সত্যি অবাক হলাম আমি।
এরকম স্মার্ট টগবগে একজন যুবক, যে কিনা
আবার হাতে রোলেক্স ঘড়ি পরে
প্লেনে করে বিদেশ যাবার সামর্থ্য
রাখে, সে অবিবাহিত হবে কেন? তবে
কি...
ভাবনাটাকে শেষ করতে না দিয়ে
তিনি বললেন, “জানি আপনি কি
ভাবছেন। ভাবছেন, এত ফিটফাট, স্মার্ট
একটা মানুষের বিয়ে হয় নি কেন, তাই
তো?”
নিজের ভাবনাটা এভাবে ধরা পড়ে
যাবে ভাবি নি। লজ্জা পেলাম খুব।
আমার মুখভঙ্গি দেখে উনি বললেন,
“স্পষ্ট বুঝতে পারছি, আপনার মনে
অসংখ্য প্রশ্ন জমা হয়েছে। আমাকে
একটা রহস্যময় মানুষ বলে মনে হচ্ছে, তাই
না?”
আমি বললাম, “হুম। আপনার গেটআপ আর
ম্যারিটাল স্ট্যাটাস ম্যাচ করছে না।
দুটো ভিন্ন কথা বলছে”।
তিনি বললেন, “আচ্ছা, আপনি তো
বিবাহিত, তাই না?”
আমি মাথা নাড়ালাম। “হুম”।
“আপনাদের মধ্যে কি রিসেন্টলি ঝগড়া
হয়েছে?”
চমকে উঠলাম। “হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন?”
“না, অনেকক্ষণ ধরে দেখলাম আপনি
একমনে কীসব বিড়বিড় করছেন আর
আঙ্গুলের বিয়ের আংটিটা ঘুরাচ্ছেন।
আর তাছাড়া আপনার আপনার শার্টের
কলারের এক পাশ তেরছাভাবে ভাঁজ
হয়ে আছে, স্যুটটা ভালোভাবে ঝাড়া
হয় নি বোঝা যাচ্ছে, আর হাতঘড়িটার
ব্যাটারি শেষ হয়ে ওটা অচল হয়ে
আছে। এসব দেখে দুইয়ে দুইয়ে চার
মিলিয়ে নিতে সমস্যা হল না যে
আপনি খুব রিসেন্টলি বউয়ের সাথে
ঝগড়া করে এসেছেন”।
আমি হেসে ফেললাম। “চমৎকার, ভাই।
অসাধারণ আপনার পর্যবেক্ষণ শক্তি”।
“ধন্যবাদ। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি কিছু
মনে করবেন না। আপনার বউকে আপনি
কতটা ভালবাসেন?”
“অনেক ভালবাসি”।
“আর উনি? উনি আপনাকে কতটা
ভালবাসেন?”
“অনেক ভালবাসে”।
“তাহলে আপনারা ঝগড়া করেন কেন?”
“আসলে ভাই”, একটু ভেবে বলি আমি,
“দুইটা মানুষের মনের মিল তো সবসময় হয়
না, তাই না? যখন হয় না তখনই গ্যাঞ্জাম
বাঁধে, বুঝলেন?”
“বুঝলাম। কিন্তু গ্যাঞ্জাম তো আমার
আপনার মধ্যেও বাঁধতে পারে। তাহলে
হোয়াটস সো স্পেশাল এবাউট
ম্যারেজ...আই মিন, লাভ?”
“এখানেই তো লাভের আসল রহস্য
নিহিত, ভাই। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ট্রু
লাভ থাকলে গ্যাঞ্জামের পরে দুপক্ষই
দোষ স্বীকার করে। তখন রিলেশন আরও
গাঢ় হয়। আর ট্রু লাভ না থাকলে সম্পর্ক
আরও খারাপ হয়, এমনকি ভেঙ্গেও
যেতে পারে”।
ভদ্রলোক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
বললেন, “কতকিছু মিস করে ফেললাম
জীবনের!”
আমি বললাম, “কেন ভাই? জীবনে
আপনি প্রেমে পড়েন নি? কারো
সাথে রিলেশন হয় নি কখনও?”
তিনি বললেন, “প্রেমে ভাই
পড়েছিলাম, জাস্ট ফর ওয়ান্স”।
“তারপর? রিলেশন টিকল না?”
“আসলে, আমাদের মধ্যে কখনই রিলেশন
হয় নি। আই ফেল ইন লাভ উইথ হার, আই
ওয়াজ ম্যাড ফর হার। কিন্তু, পুরোটাই
ছিল একতরফা। ও আমাকে ভালবাসে
নি”।
আমি নড়েচড়ে বসলাম। “কাহিনীটা
ইন্টেরেস্টিং মনে হচ্ছে। আরেকটু বলা
যায় কি?’
তিনি বললেন, “শুনবেন? অন্যের
কচকচানি আজকাল কেউ শুনতে চায়
না”।
আমি বললাম, “আমি শুনব। বলুন আপনার
লাভ স্টোরি”।
ভদ্রলোক শুরু করলেন, “আমি যখন
মেডিকেলে কলেজে থার্ড ইয়ারে
পড়তাম তখন এক সহপাঠিনীর প্রেমে
পড়ে যাই। প্রেম মানে ভয়াবহ প্রেম,
উথাল পাথাল প্রেম।
একদিন ওকে না দেখলে ভালো লাগে
না, ওর ছবি না দেখলে রাতে ঘুম আসে
না, ওকে অন্য ছেলের আশেপাশে
দেখলে ছেলেটাকে স্রেফ খুন করতে
ইচ্ছা করে...মানে পাগলামি ভর করলে
মানুষের যা হয়, আমার হয়েছিল তাই-ই।
ও আমার দিনের শান্তি তো বটেই,
রাতের ঘুমও হারাম করে দিয়েছিল।
ওকে যে আমার ভালো লাগে সেটা
আমি প্রথমে বন্ধুদের দিয়ে বলাই। পরে
নিজেই বলি। কিন্তু ও আমার প্রস্তাবে
রাজি হয় না। আবার রাজি না হবার
কোন কারণও বলে না মেয়েটা।
আমি পাগলের মত হয়ে যাই। ভালো
স্টুডেন্ট ছিলাম আগে, কিন্তু তখন
থেকে আমি পড়াশোনা ছেড়ে দিই।
সিগারেট ধরি। আগে পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজ পড়তাম, কিন্তু তখন থেকে সব
শিকেয় ওঠে। আগে ছেলেদের সাথে
ভালো মিশতাম, কিন্তু তখন থেকে
কথা না বলার কারণে একের পর এক
ভালো বন্ধু হারাতে থাকি আমি।
আমি হাত কেটে ওকে রক্ত দিয়ে
চিঠি লিখে পাঠাই। ঘুমের ওষুধের
খালি বোতল পাঠাই। কিন্তু ও কোন
উত্তর দেয় না। ভিতরে ভিতরে আমার
পুরনো আমিটা মারা যেতে থাকে।
পরীক্ষা চলে আসে। আমি শুয়ে থাকি,
বসে থাকি। পোলাপান পরীক্ষা
দিতে যায়, আমি পাশ ফিরে শুই।
পোলাপান পরীক্ষা দিয়ে আসে, আমি
ব্রাশে পেস্ট মাখাই। পোলাপান
নেক্সট পরীক্ষার পড়া শুরু করে, আমি
ক্যান্টিনবয়কে ফোন করে আরেক
প্যাকেট সিগারেট রুমে দিয়ে যেতে
বলি।
ভাগ্য সহায়ই বলতে হবে, অবশেষে তার
দয়া হয়। আমার সাথে দেখা করে সে।
কতগুলো শর্ত জুড়ে দেয় আমার উপর।
এগুলো পূরণ করলে নাকি ও আমাকে
ভালবাসবে।
আমি শর্তগুলো শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে
থাকি। ক্ষণিকের জন্য আমার মনে হয়,
শর্তে যদি থাকে আমাকে এখন সাগরে
ঝাঁপ দিতে হবে তো আমি এখনই ঝাঁপ
দেব। শর্তে যদি থাকে কুমিরের সাথে
খালি হাতে যুদ্ধ করতে হবে তো এখনই
লেগে যাব মরণপণ যুদ্ধে।
কিন্তু শর্তগুলো শুনে আমি হতবাক হয়ে
যাই। ও বলে, “তোমাকে সব সাপ্লি
পরীক্ষা পাশ করতে হবে। নেক্সট যত
আইটেম আছে সব রেগুলার ক্লিয়ার
করতে হবে। প্রত্যেক সাবজেক্টে
টার্মে ভালো মার্কস ক্যারি করতে
হবে, প্লেস করলে তো আরও ভালো।
প্রফে খুব ভালো করতে হবে, ওয়ার্ডে
নিয়মিত ক্লাস করতে হবে, ওয়ার্ডের সব
দায়িত্ব নিয়মিত পালন করতে হবে।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় অবশ্যই নিয়ম করে
পড়তে বসতে হবে।
এখন থেকে সিগারেট নিষেধ, তাস
নিষেধ, রাত জেগে আড্ডাবাজি
নিষেধ। প্রতিদিন ভোরে উঠে নামাজ
পড়তে হবে, দৌড়াতে হবে, গোসল করে
ক্লাসে আসতে হবে। নিজের বিছানা
ও পোশাক আশাক সবসময় ফিটফাট
রাখতে হবে। চুল আঁচড়াতে হবে,
কাটতে হবে নিয়মিত।
বাবা-মার সাথে প্রতিদিন কমপক্ষে
দুবার ফোনে কথা বলতে হবে। বাবা-
মা কল দিলে যত বড় কাজই থাকুক না
কেন ধরতে হবে, মিসকল দিলে দেখার
সাথে সাথে ব্যাক করতে হবে। সব
আত্মীয় স্বজনকে সপ্তাহে অন্তত একবার
ফোন দিয়ে খবর নিতে হবে। এই
কাজগুলো পুরো এক বছর ধরে যদি করতে
পার, তবেই আমি তোমাকে ভালবাসব”।
বুঝতেই পারছেন ভাই, আমি এই শর্তগুলো
শুনে পুরো থতমত খেয়ে যাই। আমি
স্বপ্নেও ভাবি নি ও এই জাতীয় কোন
শর্ত দেবে। ও চায় আমি যেন একদিনেই
মিস্টার পারফেক্ট হয়ে যাই। কিন্তু যে
ছেলে একবার ছন্নছাড়া জীবনের স্বাদ
পেয়েছে, তার পক্ষে এক দিনেই মি.
পারফেক্ট হয়ে যাওয়া একটু কঠিন বইকি।
কিন্তু ঐ যে কথায় বলে, ভালবাসার
জন্য মানুষ সব করতে পারে? বিশ্বাস
করবেন কি না জানি না, আমি পরদিন
থেকেই একদম ভালো হয়ে গেলাম।
নিয়মিত ক্লাসে যাই, আইটেম দিই,
টার্ম দিই। আম্মাকে আগে তিনদিনে
একবার ফোন দিতাম, এখন দিনে
তিনবার ফোন দিই। তাসের প্যাকেট
ডাস্টবিনে ফেলে দিই, সিগারেট
কাটি কুটি কুটি করে। সবাই আমাকে
দেখে অবাক হয়ে যায়।
টার্মে আমি দুই সাবজেক্টে ফার্স্ট হই।
বাকিগুলোতেও খারাপ করি না। স্পষ্ট
বুঝতে পারি, আমার প্রতি সবার
দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাচ্ছে দ্রুতই।
এখন আর বন্ধুরা দেখলেই অশ্লীল কোন
কথা বলে আড্ডাবাজি শুরু করে দেয়
না। মেয়েরা দেখলেই মুখ বাঁকিয়ে
উলটো ঘুরে চলে যায় না। ব্যাচ
টিচাররাও অচিরেই আমাকে মার্ক
করা শুরু করেন, আমার আইটেম খারাপ
হলেই মনে করেন মহাপ্রলয় ঘটেছে।
প্রফ আসে। একাধিক সাবজেক্টে
অনার্স পেয়ে প্লেস করে বসি আমি।
বাবা-মার মুখে ফোটে অপার্থিব
হাসি। হাসি ফোটে বন্ধুদের মুখেও। শুধু
আমিই মুখ গোমড়া করে বসে থাকি।
অবশেষে শেষ হয় এক বছরের টাইমলাইন।
এক বুক আশা আকাঙ্ক্ষা সঙ্গী করে ওর
মুখোমুখি হই আমি।
ও বলে, “তুমি আসলেই একজন অসাধারণ
মানুষ। কিন্তু...একটা কথা জানা উচিৎ
তোমার”।
বুকের মধ্যে ছ্যাত করে ওঠে আমার।
“কি?”
ও বলে, “বছরখানেক আগে আমার
এনগেজমেন্ট হয়েছিল। এক মাস আগে
সেই মানুষটার সাথে আমার বিয়ে
হয়েছে। তোমাকে আগেই জানানো
উচিৎ ছিল, কিন্তু জানাই নি। ইন
ফ্যাক্ট, আমি আর আমার রুমমেট ছাড়া
কলেজের আর কেউ ব্যাপারটা জানে
না। আই অ্যাম সরি। তুমি আমাকে ক্ষমা
কোর”।
আমার স্বপ্নের পৃথিবী ছারখার হয়ে
যায়। ভাবনাচিন্তাগুলো কেমন যেন জট
পাকিয়ে যায়। হঠাৎ করে আমার মনে
হয়, আমার পায়ের নিচে যেন মাটি
নেই, আমার যেন কোন অবলম্বন নেই,
আমি যেন পড়ে যাচ্ছি নিঃসীম
শূন্যে, বিলীন হয়ে যাচ্ছি অতল
অস্তিত্বহীনতায়।
আমি ভাঙ্গা গলায় বলি, “তুমি
আমাকে আগে বল নি কেন?”
ও বলে, “সব মানুষ একরকম না। সবার
ভালবাসার বহিঃপ্রকাশও একরকম না।
আরও বড় হও, আমার কথাটার অর্থ বুঝতে
পারবে। আই অ্যাম সরি, চলি”।
ও আমাকে হতবাক করে সেদিন চলে
যায়। ওর সাথে আমি আর জীবনেও কথা
বলি নি। মেডিকেল থেকে বের হবার
পর আর ওর সাথে দেখা হয় নি আমার।
কবে যেন শুনেছিলাম ওর বর স্কিনের
অনেক বড় ডাক্তার, ওরা নাকি অনেক
সুখে আছে।
ভাই, সেদিনের পর থেকে আমার আবার
নষ্ট হয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। বই ছেড়ে
আকণ্ঠ ডুবে থাকা উচিৎ ছিল মদ আর
গাঁজায়। রুমে বসানো উচিৎ ছিল জুয়ার
আড্ডা। একগাদা ঘুমের ওষুধ গেলার কথা
ছিল, হয়তো নিজের গলায় নিজেই
একটা পোঁচ বসানোর কথা ছিল আমার।
কিন্তু ভাই জানেন, আমি একটা আশ্চর্য
জিনিস লক্ষ্য করতে থাকি তখন থেকে।
আমি দেখি, সবাই আমাকে সমীহ করে।
ক্লাসের যে ছেলেটা আগে আমাকে
দেখলেই সিগারেট চেয়ে বসত, সে এখন
আমাকে দেখলেই রাস্তা ছেড়ে দেয়।
আগে যে মেয়েটা আমি ঢুকলেই লিফট
থেকে বেরিয়ে যেত, সে এখন
শ্রদ্ধাভরে আমার দিকে তাকায়।
আমার বিপদ আগে কাছের কিছু বন্ধুর
মাথাব্যথার কারণ হত, কিন্তু এখন আমার
সুখ দুঃখের ভাগীদার হতে চায় সবাই।
আমার হাসি সবার মন ভালো করে দেয়,
আমার দুঃখ সবার মুখ থেকে হাসি মুছে
দেয়। আমি এক ব্যাগ রক্ত চাইলে দশ
বারোটা হাত একসাথে আকাশের
দিকে উঠে যায়। আমি প্র্যাকটিকাল
খাতা চাইলে দেবার জন্য তখনই প্রস্তুত
হয়ে যায় সবাই।
বিশ্বাস করেন ভাই, মানুষের এই যে
শ্রদ্ধা, সমীহ আর ভালবাসা, এটার
জন্যেই আমি আবার আমার আগের পুরনো
অন্ধকারে ফিরে যাই নি। আমার
কাছে মনে হয়েছে, এক বছর কঠোর
সাধনা করে, সে যে কারণেই হোক,
আমি নিজেকে যে স্তরে নিয়ে
গেছি, এক মুহূর্তের ঝড়ে কিছুতেই
তাকে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়তে
দেয়া যায় না। কিছুতেই না। আর
তাছাড়া, ও হয়তো এটাই চেয়েছিল।
এটাই হয়তো ওর ভালবাসা, ও হয়তো
আমাকে সফল দেখতে চেয়েছিল,
পারফেক্ট দেখতে চেয়েছিল।
জানেন ভাই, ঠিক সেদিন যতটা
ফিটফাট, যতটা পাংচুয়াল ছিলাম,
এখনও ঠিক ততটাই আছি আমি। জীবনে
এর পুরষ্কার আমি অনেক পেয়েছি।
গাড়ি, বাড়ি, স্ট্যাটাস, সম্মান - কি
নেই আমার জীবনে? নিজের একটা
সংসারও থাকতে পারত আমার, অনেক
মেয়ে এবং মেয়ের বাপই আমার সাথে
সম্বন্ধ করবার জন্য পাগল ছিল, কিন্তু
হৃদয়ের সিংহাসনে একবার যাকে
বসিয়েছি, তার জায়গায় কি আর
কাউকে স্থান দেয়া যায়, বলেন ভাই?
ঐ যে ও বলেছিল না, “সবার
ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ একরকম না”?
আমার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ
হিসেবে অবিবাহিতই রয়ে গেছি
আমি। ওর জায়গায় আর কাউকে কল্পনা
করতেই মাথা কিরকম ঝিম ঝিম করত
আমার, কখনই মাথায় ঐ চিন্তাটা
আসতে দিতাম না আমি। এখনও দিই না।
বিশ্বাস করেন ভাই, এখনও আমি ওকে
আগের মতই ভালবাসি। আজীবন
ভালবাসব। ও আমাকে ভালবেসে
জীবনে সফলতার একটা পথ আমাকে
উপহার দিয়ে গেছে, তার প্রতিদান
না দিলে তো অপরাধ হবে, তাই না
ভাই?”
এতক্ষণ হা করে কাহিনী শুনছিলাম
ভদ্রলোকের। উনার কথা শেষ হতেই প্রশ্ন
করলাম, “আপনি ডাক্তার আগে বলেন
নি কেন? কোন মেডিকেল? কোন
ব্যাচ?”
উত্তর এল, “জি ঢাকা মেডিকেল। K-67
ব্যাচ। ২০০৯ সালে ঢুকেছিলাম”।
“আপনার নাম?”
“রাশেদ। ডাঃ রাশেদ, মনোরোগ
বিশেষজ্ঞ। আপনি?”
“আমিও ডাক্তার। ডাঃ মিরাজ। নাইস টু
মিট ইউ, ম্যান। আমি আপনার চার পাঁচ
বছর সিনিয়রই হব”।
গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। ডাঃ রাশেদ
এসেছেন এক আত্মীয়ের সাথে দেখা
করতে। এয়ারপোর্টের বাইরে রাস্তায়
একটা ট্যাক্সি থামালাম আমরা।
রাশেদকে উঠতে দিলাম প্রথম
ট্যাক্সিটায়। উনি চলে যাবার আগে
বললাম, “আপনার ভালবাসার নামটা
জানতে পারি?”
রাশেদ মুচকি হেসে বললেন, “পারেন।
ওর নাম শম্পা। সাদিয়া আফসানা
শম্পা। দুচোখের মধ্যে একটা তিল আছে,
আজও মনে আছে আমার”।
আমার বুকে কে যেন একটা বড় ধাক্কা
মারল। তবু মুখে ভদ্রতার হাসিটা ধরে
রেখে ভদ্রলোককে বিদায় দিলাম
আমি। ভদ্রলোক চলে গেলেন।
সাথে সাথে পকেট থেকে
মোবাইলটা বের করে অন করলাম আমি।
একটু পরেই কমপক্ষে দশটা মেসেজ এল
মোবাইলে। সবই বউয়ের নাম্বার থেকে।
কিন্তু আমার এখন ওগুলো দেখার সময়
নেই।
বউয়ের এক ক্লাসমেট ডাঃ মনীষার
নাম্বার ছিল আমার কাছে। ফোন
দিলাম। সে ধরে বলল, “কি খবর দাদা,
হঠাৎ মনে পড়ল?”
আমি বললাম, “আচ্ছা মনীষা তোমরা
যেন মেডিকেলের কোন ব্যাচ?”
সে বলল, “সে কি, আপনি ভুলে গেছেন?
২০০৯-১০ এর ব্যাচ, K-67”।
“আচ্ছা ঠিক আছে। ভালো থেকো,
হ্যাঁ? রাখি”। ফোন রেখে দিলাম
আমি।
একটু পরে বউকে ফোন দিলাম আমি।
দুবার বাজার পর ধরল ও। কাঁদো কাঁদো
অথচ দৃঢ় গলায় বলল, “কোন সমস্যা হয় নি
তো?”
আমি বললাম, “না”।
“ঠিকমত পৌঁছিয়েছ?”
“হ্যাঁ”।
“ট্যাক্সি ঠিক করেছ? ওরা কিন্তু ভাড়া
বেশি চায়”।
“এখনই করব”।
“বাইরের কিছু খাও নি তো? ওদের
পানি কিন্তু অত ভালো না, জার্মস
আছে”।
“না খাই নি”।
“অপরিচিত কারো সাথে খাতির করার
দরকার নেই, ঠিক আছে?”
“ঠিক আছে”।
একটু অপেক্ষা করে ও বলল, “মেসেজ
পেয়েছ?”
“হ্যাঁ পেয়েছি”।
“আমি সরি”।
“না আমি সরি”।
“না তোমার কোন ভুল নেই। আমি সরি”।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আচ্ছা শম্পা...”
“কি?”
“সব মানুষ তো একরকম না, তাই না?”
“না। কেন?”
“সবার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশও তো
একরকম না, তাই না?”
হঠাৎ একদম চুপ হয়ে গেল সে। তারপর বলল,
“এ কথা কেন বলছ?”
“আচ্ছা তুমি আমায় কখনও বল নি কেন...”
নাটকীয়ভাবে থেমে যাই আমি।
ওপাশ থেকে ভেসে আসে দ্বিধান্বিত
কণ্ঠস্বর, “কি বলি নি?”
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে আমি বলি,
“আমায় এত ভালবাস কেন?
.
#যান্ত্রিক_প্রহেলিকা

পরিবারের সদস্যদের সাথে এসেছি বিয়ের পাত্রী দেখতে। আর বিয়ের পাত্র এই অধম আমি নিজেই।

সামনে টেবিল ভর্তি নানা রকম মুখরোচক খাবার সাজানো। এ
বাড়ির বড় মেয়েকে বিয়ে করার বদৌলতে বেশ জম্পেশ
জামাই-আদর পাবো বলে মনে হচ্ছে!
বাকি সবাই গল্পগুজব করছে। আর আমি উশখুশ করছি পাত্রীর
লজ্জাবনত মুখের দর্শন লাভের আশায়।
শুনেছি এ যুগের মেয়েদের লজ্জাবোধ একটু কম-ই।
যাহোক, মা হয়তো আমার বিচলিত ভাব লক্ষ্য করেই পাত্রীর
মা-কে বললেনঃ
-মেয়েকে এবার নিয়ে আসুন, আপা।
মায়েরা যে সত্যিই সন্তানদের মনের কথা বুঝতে পারে, এ
কথাটার আরেকবার প্রমাণ পেলাম।
পাত্রী এলো শাড়ি পরে, হাতে গ্লাসভর্তি শরবতের ট্রে
নিয়ে। আমার মায়ের চোখমুখ দেখে মনে হচ্ছে উনি
পারলে এখন-ই এই মেয়েকে নিজের বড় ছেলের বউ
বানিয়ে ঘরে তুলতে পারলে স্বস্তি পান! এরপর মা আর আপু
পাত্রীকে কিছু টুকটাক প্রশ্ন করলো।
আমার বাবা বললেনঃ
-তাহলে এবার বিয়ের তারিখটা ফাইনাল করে ফেলতে চাইছি
আপনাদের আপত্তি না থাকলে।
বাবার কথা শুনে আমি হতাশ হয়ে পড়লাম৷ আমাকে হতাশা থেকে
উদ্ধার করতে এগিয়ে এলেন আমার হবু শাশুড়ি মা! তিনি বললেনঃ
-তার আগে ছেলে মেয়ে একান্তে কথা বলে নিলে
ভালো হত না!
সবাই এতে সম্মতি দিল।
এখন আমি বসে আছি পাত্রীর বেডরুমে। আমার ইচ্ছা করছে
সামনে দাড়িয়ে থাকা, ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি ফুটিয়ে রাখা
ললনা-কে বলি যেঃ
-"ওহে মায়াবতী, আমি তোমার মায়ায় সারাজীবন আটকে
থাকতে চাই। তোমাকে আমার বুকের বামপাশটা দলিল করে
দিলাম, হে বালিকা! তুমি সবসময় আমার কাছে আকাঙ্ক্ষিত থাকবে,
ঠিক প্রথমবার দেখার মতোই!"
কিন্তু ইচ্ছা হলেও আমি এসব কিছুই বলব না!
কারণ, আমি জানি এখন দরজায় কান পেতে আছে পাত্রীর
নানী, ছোট বোন আর কাজিনরা।
তাই রোমান্টিকতাকে গলা টিপে মেরে ফেলে গলা খাকারী
দিয়ে দরজায় কান পেতে থাকা সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে
পাত্রীর উদ্দেশ্যে বললামঃ
-তা প্রেম করেছেন কয়টা এ পর্যন্ত?
আমার প্রশ্ন শুনে পাত্রী বেশ অবাক হলো। কিন্তু আমি
সেটাকে পাত্তা দিলাম না।এরপর আমাকে অবাক করে দিয়ে
পাত্রী বললোঃ
-আস্তাগফিরুল্লাহ! এসব কি বলেন! আমি ওই রকম মেয়ে না।
আমি মনে মনে বললামঃ
-তবে রে! সারাদিন বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘোরাঘুরি করেও
বেমালুম অস্বীকার! চান্দু, বিয়ের পর বুঝবা মজা!
এরপর কিছু বাক্যালাপ শেষে দুজনই সম্মতি দিলাম বিয়ের।
তারপর তিন বার কবুল বলার মাধ্যমে বিয়ে হয়ে গেল
আমাদের। গাড়িতে উঠার আগ মুহূর্তে বাবা, মা, ভাই, বোন-কে
জড়িয়ে ধরে আমার বউয়ের সেকি কান্না! মনে হচ্ছে তাকে
যেন কেউ বানের জলে ভাসিয়ে দিয়েছে। অ্যারেইঞ্জড
ম্যারেজ হোক বা লাভ ম্যারেজ, বিয়েতে মেয়েরা
কাঁদবেই এটা যেন অলিখিত নিয়ম!
দাঁড়িয়ে আছি আমার রুম, মানে বাসর ঘরের সামনে আর কি। একটু
নার্ভাস লাগছে। যতই হোক প্রথমবার ঢুকবো তো বাসর
ঘরে তাই এ অবস্থা। দুলাভাই আর বন্ধুদের দেওয়া সাহসকে পুঁজি
করে অবশেষে পা রাখলাম রুমের ভিতর।
দরজা আটকে বিছানার দিকে ঘুরেই আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে
গেল! এটা দেখার আগে মরে গেলাম না কেন!
বউ আমার ঘোমটা তুলে বিছানার উপর পা উঠিয়ে আরাম করে
বসে মোবাইল টিপছে!
ফাজলামীর একটা সীমা আছে! মেজাজ গরম করে
মোবাইলটা হাত থেকে কেড়ে নিলাম৷ এরপর দেখি তিনি তার
ফেসবুক আইডিতে এই মাত্র একটা পিক আপলোড
করেছেন! আমাদের বিয়ের কাপল পিক!
পিক-এর ক্যাপশনে লিখাঃ "একটু আগেই আমি আমার বিবাহিত
জীবন শুরু করেছি৷ আমি খুশি হলেও, এ বিয়েতে আমার
সাবেক প্রেমিক সারাক্ষণ গম্ভীর মুখে ছিল।"
এটুকু পড়ে আমি হা হয়ে গেলাম! তাকিয়ে দেখি আমার বউ
চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে।
ক্যাপশনের বাকি অংশটুকু হলোঃ
-"আমার প্রেমিক থেকে স্বামীতে প্রমোশন পাওয়ায় তিনি
মনে হয় কিছুটা বিমর্ষ এবং অসহায়বোধ করছেন! হয়তো
এজন্যই কাপল পিকেও গম্ভীর মুখ, এ অসহায়, গম্ভীর
ছেলেটির জন্য কয়টা লাইক হবে ফ্রান্স?"
এরকম ক্যাপশন দেখার পর আমি হাঁসব, নাকি কাঁদবো সেটা না
বুঝতে পারলেও, এটুকু বুঝলাম যে, এই মেয়ে আমার
প্রেমিকা থাকা অবস্থায় যেমন জ্বালিয়েছে, এখন বিয়ের
পরে তার চেয়েও বেশি জ্বালাতন করবে.....

 "প্রেমিকা যখন বউ"

>} পরীর সাথে প্রেম { রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ১

>>} পরীর সাথে প্রেম {
রহস্য বড় গল্প
লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন

পর্ব ১
.
.
সোহেল রানা কলেজের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলে পড়ালেখায় ও যেমন ভাল খেলাধুলাতেও সবার আগে।কলেজের অধিকাংশ মেয়েরাই রানার প্রেমে পাগল।এদিকে কলেজের এক সুন্দরি মেয়েও তার প্রেমে পাগল।মেয়েটির নাম ইভা।সেও মোটামুটি পড়ালেখায় ভাল।সে হটাত কয়েকমাস হল কলেজে ভর্তি হয়েছে।সে কলেজে পুরাটা ক্লাস যুরে রানার দিকে তাকিয়ে থাকত।রানার উপর যেন তার একটা অজানা মোহ কাজ করতে শুরু করেছে।ইভা জিবনেও কল্পনা করতে পারে নাই যে সে প্রেমে পরবে।কারন সে বরাবরই প্রেমের বিপক্ষে।কিন্তু রানার মাঝে তার একটি অন্য রকম ফিলিংস কাজ করে সবসময়ই।কিন্তু রানা কখনই কোন মেয়েকে পাত্তা দেয় নাই।অহংকার এর কারনে নয় তার লক্ষ ঠিক রাখার জন্য।রানার কাছে একমাত্র লক্ষ তার মা বাবার কষ্ট দুর করে নিজের পায়ে নিজে দারানো।ইদানিং ইভা রানার সাথে সবসময়ই কথা বলার চেষ্টা করে।রানা বরাবরের মতই এরিয়ে যায় কিন্তু সে বুঝতে পারে মেয়েটার প্রতি এক অদ্ভুদ টানের জন্ম হয়েছে
.
.
নাহ!!তার দুর্বল হলে চলবে না।তার মা বাবার শেবা করার একটা সুযোগ ও হাত ছাড়া করা চলবে না।যে বাবা এত কষ্ট করে নিজে না খাইয়ে তার ছেলে কে খাইয়েছে।আজ তার অসুখের সময়ে সে প্রেম করে সময় নষ্ট করবে না।তাই রানা ঠিক করল যে সে ইভার সাথে আর কোনদিন কথা বলবে না।কিন্তু ইভা তার সাথে সবসময়ই যেচে কথা বলতে আসত।একসময় এমন হল যে সে ইভার কথা না শুনলে দিনটা খারাপ কাটত।রানার বুঝতে বাকি রইল না যে সে প্রেমে পরেছে।কিন্তু সে কি করবে বুঝতে পারছিল না।তখন সে চিন্তা করল যে আপাতত মেয়েটার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করা যাক।শুধু দিনে একবার কথা বলতে পারলেই যথেষ্ট।আগে নিজের পায়ে দারাক,মা বাবার ইচ্ছাগুলি পুরন হোক তারপর সে ইভাকে তার মনের কথা বলবে।তাই সে তার পরের দিন কলেজে ইভার সাথে ফ্রেন্ডশিপ পাতায় নেয়।কিন্তু ইভার কাছে শুধুমাত্র ফ্রেন্ডশিপ যথেষ্ট ছিল না।তাই ইভা রানা কে বলল
ইভা:-রানা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি।জান আমি যেটা পৃথিবীর কারো কাছে প্রকাশ করি না সেটাও তোমার কাছে বলি।যান আমার বান্ধবিরা বলে যে এটাকে ভালবাসা বলে।তোমার কি মনে হয়
সোহেল রানা:-যত্তসব ফালতু কথা।(মনে অনেকটা খুশি কারন সে এখনও বুঝতে পারছে না)এর মানে আমরা দুজনই
ইভা:-মানে!!আমরা দুজন বলতে
রানা:-আমরা দুজন বেস্ট ফ্রেন্ড।আর বেস্ট ফ্রেন্ডরাই সুখেদুঃখের অংশীদার হয়ে থাকে।এজন্যই তো তাদের বেস্ট ফ্রেন্ড বলা হয়ে থাকে
ইভা:-হুম।বেস্ট ফ্রেন্ড ফরেভার(অনেক দুঃখ নিয়ে মনের মধ্যো)
ইভা বুঝতে পারছেনা যে ছেলে সবকিছুতে এত শ্মার্ট আর সে এইটুকুই বুঝতে পারছে না।সে বুঝতে পারল যে সে তাকে একদম ভালবাসে না।তাই চিন্তা করল তার সামনে আর আসবে না।
.
.
এদিকে রানা তাকে ১ সপ্তাহ না দেখতে পেয়ে পাগল প্রায়।একদিন কলেজে তার খোজ নিতে যায়।কিন্তু অদ্ভুদ ভাবে ওই কলেজে মেয়েটার কোন নিশানা নাই।তাও সে তার সন্ধান করতে লাগে।তার একমাত্র বান্ধবি সোভা।কলেজে নতুন বলে বান্ধবী সং্খা কম ছিল।তো শোভার কাছে যানতে পারে যে সে প্রায় জংগলে এক গাছের নিচে বসে বই পড়ে।সে দেরি না করে বিকালে যায় সে জংগলে ও খুজতে খুজতে একসময় পেয়েই যায়।কিন্তু তখন ইভা তার বাবা পরিদের সর্দার এর সাথে কথা বলছিল।
.
.
আসলে ইভা কোন সাধারন মেয়ে নয়।পরি জগতের রানী সে।কিন্তু একদিন রানাকে সেই জংগলে খেলতে দেখে যেখানে সে প্রাই যাতায়াত করত।প্রথম দেখাতেই তাকে ভাল লেগে যায়।কিন্তু সে কোনদিন প্রেমে পরবে তাও আবার কোন মানুষের সাথে সেটা ভাবতেই পারে নি।তার কথা বার্থা সব ইভার ভাল লাগতে থাকে।তাই সে পাতালে আসে ও একই কলেজে ভর্তি হয়।এবার আগের কথায় ফিরে আসা যাক।রানা জংগলে গিয়েছে ইভা কে খুজতে।শেষে খুজে পায়।কিন্তু রানা যা দেখল সেটা দেখার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না
.
....................­........(চলবে)

লাইক কমেন্ট করে পরবর্তী পর্ব পড়তে সাথেই থাকুন এবং লেখককে উৎসাহিত করুন। ধন্যবাদ।

>} পরীর সাথে প্রেম{<< রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ২

>>} পরীর সাথে প্রেম{<<
রহস্য বড় গল্প
লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন

পর্ব ২
.
.
রানা দেখল ইভা মাটি হতে চার ফুট উপরে ভাসছে আর কি যেন বলছে।এই দৃশ্য দেখার রানা অজ্ঞান হয়ে গেল।কিন্তু জ্ঞান ফিরতেই সে ভয়ে চিতকার দিয়ে বিছানা ছেরে উঠল।উঠে দেখে রাত ৩ টা বাজে ঘরিতে।পরিবারের সবাই চিতকারে চলে আসল।
.
মা:-কি হয়েছে তোর
বাবা:-কি হয়েছে বাপ আমার চিতকার করলা কেন।খারাপ স্বপ্ন দেখেছ নিশ্চই।এজন্যই বলি ভয়ংকর ছিনেমা না দেখতে
শোভা:-ঠিক বলেছ আব্বু মনে হয় কোন পেত্নির স্বপ্ন দেখেছে নিশ্চই
রানা:-না বাবা আমি ঠিক আছি।হাল্কা খারাপ স্বপ্ন দেখেছি।যাও খুব ক্লান্তি লাগছে।
.
সবাই যে যার রুমে চলে গেল ঘুমানোর উদ্দেশ্য।কিন্তু রানার চোখে এক ফোটাও ঘুম আসছে না।সে যা এতক্ষন দেখল তার সবটাই কি স্বপ্ন ছিল।না কাল একবার ইভার সাথে দেখা না করলে চলবে না।এদিকে রানা ছোটবেলা থেকে ভিতু।ভুতের ভয় পায় প্রচুর।ভাবতেও কষ্ট হতে পারে কিন্তু সত্যো এই যে ছেলে সব দিক দিয়ে স্মার্ট সে ভুতে বিশ্বাস করে।এসব ব্যাপার আধুনিক যুগে না চললেও তার মনে প্রচন্ড ভয়ের উদ্যোগ আনে।মুলত এ কারনেই সারারাত সে ঘুমাতে পারে নাই। এদিকে ইভাও অনেক ভয় পাচ্ছে।প্রথম ভালবাসা হারানোর ভয়ে।এদিকে।পরীদের দেশে খবটা জানাজানি হয়ে গেছে।তাদের রাজার মেয়ে এক সাধারন মানুষের প্রেমে পরেছে এটা সবার কাছে এক অদ্ভুদ ব্যাপার।তার মা বাবা সবাই তাকে হাজার বোঝানোর পরেও বুঝতে চাইল না ইভা।সে শুধু রানাকেই ভালবাসে।
.
.
পরীদেশের বাদশা:-তোর জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও শুদর্ষন জ্বীন কে তোর বর হিসাবে নিয়ে আসব।যে কিনা তোকে সারাজীবন সুখে রাখবে
ইভা:-না বাবা না আমি শুধু রানাকেই ভালবাসি।আমি মানুষের মাঝে নিজেকে সামাল দিতে পারবানি।তোমার মেয়ে আমি।তাই সব কিছুই পারব(বাংলা ছিনেমার কিছু ডায়লগ বলে গেল)
শেষমেষ তার মেয়েকে বোঝাতে না পেরে তার একমাত্র মেয়ের কাছে হার স্বিকার করল।ইভা অনেক খুশি।কারন বাংলা ছিনেমার মত আর পথে বাবা এসে দারাবে না।কিন্তু ইভার হাল্কা ভয় লাগল।সে কিভবে রানাকে সব কিছু খুলে বলবে যে সে মানুষ নয়।সে তখন আবার কলেজে গেল।রানা তাকে অনেখ দিন পর দেখতে পেয়ে আবেগ আর চেপে রাখতে পারল না।নির্লজ্জের মত ইভাকে জরিয়ে ধরে ভালবাসার কথা বলে দিল।এদিকে ইভার আজকে সবচেয়ে খুশির দিন।সে সাথে সাথে রাজি হয়ে গেল।এদিকে রানা যে কম খুশি সেটা নয়।দুজনেই খুশিতে এক অন্য জগতে হারিয়ে গেল।
.
.
প্রতিদিন তারা সাধরন কাপলস দের মত আলাপ,ঘোরাফেরা ইতাদি করতে লাগল।ইভার আত্তা যেন রানার সাথে মিশে যেতে চাইল।এমন অবস্থা হল যেন তারা একে অপরকে ছারা নিশ্বাস ও নিতে পারবে না।রানা অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালেই অগ্নিশিখা চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকত ইভা।ইভার রাগি মুখটা রানা পাগল করে দিত।তাই রানা প্রায় ইভা রাগানোর পথ খুজে বেরাত।একদিন তো রানা তার বেস্ট ফ্রেন্ড নুর ইসলামকেই মেয়ে সাজিয়ে নিয়ে প্রেম করছিল।ইভা প্রথমে রাগ হলেও পরে বুঝতে পেরে লজ্জা পায়।রান একদিন তাকে একটি সুন্দর ড্রেস কিনে দেয় ইভাকে
ইভা:-তুমি এসব কিনতে গেলে কেন।তোমার অর্থ সমস্যার পরেও কেন এগুলা কর
রানা:-কেন তোমার পছন্দ হয় নাই
ইভা:-হয়েছে।কিন্তু এর থেকে যদি তুমি নিজের জন্য একটি জামা কিনতে আমার হাজার গুন বেশি খুশি হতাম।আর হ্যা এভাবে টিউশুনির সব টাকা শেষ করলে তোমার পরে কিভাবে চলবে
রানা:-ও আমি ম্যানেজ করে নিব
ইভা:-এ নাও একটি সোনার হার দিলাম।এটা বিক্রি করে বাবা-মা ও নিজের স্বপ্ন পুরন কর
রানা:-না আমি এটা নিতে পারব না
ইভা রানাকে অনেক বুঝাল ও বলল ধার হিসাবে নিতে।পরে তার বাবা মার কথা চিন্তা করে রাজি হয়ে গেল।এভাবেই চলতে লাগল তাদের দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসা।
.
.
কিন্তু হটাত রানা কেমন যেন হয়ে উঠল।ইভার সাথে দেখা করে না।ইভা কে দেখলে ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়।ইভা বুঝে উঠতে পারে না যে ভালবাসা থেকে হটাত ভয়ের জন্ম হল কিভাবে।সে এটার রহস্য বের করতে নিজের রাজ্যো ফিরে গেল
.
........................................(চলবে)
.
.
লেখাতে যদি কোন বানান ভুল হয় বা শব্দ ভুল হয় তবে ক্ষমার চোখে দেখবেন। এবং লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।

>}} পরীর সাথে প্রেম{<< রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৩

.
.
নিজের রাজ্যো ফিরে এসে ইভা খাওয়া দাওয়া সব ত্যাগ করে দিল।সবসময়ই মনের মধ্যো এক বিষন্নতা কাজ করে চলেছে।তার সবসময় রানার কথা মনে পরে।কিন্তু রানার ভয়ের কারন সে হতে চায় না।সে পরীর দেশের রাজার মেয়ে একথাটাকি রানা বুঝতে পেরে গেছে।নাহ আর কিছু মাথায় আসছে না।এবার যাইহোক সে খুজে বার করবেই ব্যাপারটা কি।এদিকে সোহেল রানা ও ঠিক মত খাবার খাচ্ছে না বাড়ি হতে বের হচ্ছে না।এর কারন ভয়।রানা সবসময়েই ভয়ে ভয়ে চলে এমনকি ঠিকমত কলেজেও যাচ্ছে না।ঘরের কাউকে সে কিছু বলছেও না।সবাই চিন্তায় পরে যায়।একদিন পরিবারের সবাই এসে রানাকে এর কারন জিজ্ঞাসা করে
মা:-কি হয়েছে তোর বাবা।আমাকে বল তুই এরকম কেন করছিস।কোন সমস্যা থাকলে পরিবারের কাছ থেকে লুকাস না
রানা:-মা শুধু শুধু টেনশন করছ এমন কিছু নয়
বাবা:-কিছু না তবে খাওয়া দাওয়ায় অবহেলা দিচ্ছিস কেন?কেনই বা বাসা থেকে বের হচ্ছিস না।যে ছেলে কলেজে না গিয়ে থাকতে পারে না সে আজ ৮ দিন কলেজে যায় নি।বন্ধুরা এসে ফিরে গেছে তাও বাইরে যাচ্ছিস না।আর সবসময় এক উদাস ভাব স্পষ্ট দেখা যায় তোর চেহারায় বল বাপ কি হয়েছে তোর
রানা:-ওহ কোন কিছু নয়।কি বলব বাবা কিছুদিন যাবত অলস হয়ে পরেছি।আলসামির ভুত চেপেছে মনে হয়।টেনশন নিও না কাল হতে আবার তোমারা তোমাদের পুরান রানাকেই পাবে
বাবা:-তাই যেন হয়।তোর চিন্তায় আমি আর তোর মা অস্থির হয়ে গিয়েছি
মা:-শুয়ে পর বাবা রাত অনেক হয়েছে।কাল কলেজ আছে আর আমি কলেজে তোর ছুটির আবেদন করেছি।তাই ঘুমিয়ে পর
রানা:-আচ্ছা আম্মু
.
.
রানা তার মা-বাবা কাউকেই কিচ্ছু জানায় নেই।তার এসবের কারন আলসামি মোটেই নয় বরং তাদেরকে হারানোর ভয় কাজ করছে।এই ভয় আজকের নয় প্রায় ১০-১৫ দিন আগে এক অন্ধকার রাতে রানা বাসায় ফিরে আসছিল।রানা তার এক বন্ধুর বাসায় নোট নিতে গিয়েছিল।ফিরতে গভীর রাত হয়ে যায়।রাত তখন ১২ টা বাজে।রানা এমনিতেই ভিতু তার উপর চুপচাপ এলাকা।৪ কিলোমিটার পর্জন্ত কারো পায়ের জুতা পর্জন্ত নেই।রাত্রে সেই ফ্রেন্ডস দের বাসায় থাকার প্লান ছিল কিন্তু তাদের বাসায় মেহমান থাকায় অগত্যা কিছুই বলা হল না।আর প্রেস্টিজ হারানোর ভয়ে এগিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব টাও নিল না।একটা মুচকি হাশি দিয়ে চলে আসল।রানার বাসা থেকে তার সেই ফ্রেন্ডের বাসা ২ কিলো।একা একা রাস্তায় হাটছে এর মধ্যো দেখল রাস্তার ধারে এক মহিলার লাশ পরে আছে।কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না।দৌর দিবে এমন সময় তার মনে হল এই মহিলাকে সে চেনে।না একবার মুখ দেখলে সমস্যা নেই।কিন্তু সে যখন মহিলাটির মুখ দেখল তার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরল।চারদিকে অন্ধকার ছেয়ে গেল।মহিলাটি আর কেউ না তার মা।অনেক কাদতে ইচ্ছা হলল কিন্তু তার হৃদয় স্তব্ধ হয়ে গেল।মাকে সামাল দিতে গিয়ে দেখে কিছুদুর তার বোন আর বাবার প্রানহীন শরীর পরে আছে।সে বুঝে উঠতে পারছিল না যে তার সাথে কি হচ্ছে।ঠিক এমন সময় এক ভয়ংকর রুপি দানব তার সামনে এসে হাজির হল।আর হটাত করেই রানার পরিবারের সব সদস্যদের লাশ গায়েব হয়ে গেল।রানার মনে তখন ভয়ের বদলে বদলা নেয়ার নেশা উঠে গেল।যদি নিজের প্রান চলে যায় তাও কোন সমস্যা নেই।
.
.
এদিকে সেই দানব টি তার দিকে আসতে থাকে।রানা চিতকার দিয়ে ওঠে।তার গর্জনে যেন বাড়ি কেপে উঠল
রানা:-কেন আমার পরিবারের লোকজনকে মেরেছ কি ক্ষতি করেছিল তারা
দানব :-ভয় পেয়ে গেছ।আমি তোমার পরিবারকে মারি নেই।তবে নমুনা দিলাম যদি কথা না শোন তাহলে মেরে ফেলব
রানার মনে তখন হাল্কা শান্তি পেল যে তার মা বাবা বেচে আছে
রানা:-কি কথা
দানব:-ইভার কাছ থেকে দুরে থাক।ইভার ধারেকাছে আসলেই আমি তোমার পরিবারের কাউকে বাচতে দেব না।মনে রেখ কথাটা
এই বলে দানবটি উধাও হয়ে গেল।এদিকে রানার মনে হাজার প্রশ্ন কাজ করছে।ইভা কে আর তার এই ভয়ংকর দানবটার সাথেই বা কিসের সম্পর্ক।কিন্তু এখন এসব ভাবার সময় তার হাতে নেই।এক দৌড়ে বাসায় পৌছে যায়।মা-বাবা আর বোনটাকে দেখতে পেয়ে তার জান ফিরে আসে।জরিয়ে ধরে কাদতে ইচ্ছা করে কিন্তু তাদের কিছুই না জানিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পরে।আর তখন থেকে পরিবারের ক্ষতির কথা ভেবে প্রেমের কোরবানি করে।
.
রানা পরেরদিন থেকে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করে আগের মতই সাধারন ভাবে চলতে শুরু করে।কারন রানা তার মা-বাবাকে চিন্তার মুখে ফেলে দিতে রাজি নয়।কিন্তু হটাতই ইভার সাথে দেখা হয়।এবার ইভা তাকে সত্য কথা না বললে কিছুতেই যেতে দিবে না।
ইভা:-রানা তুমি এরকম কেন করছ।আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।তাই তোমার অবহেলা আমাকে তিল তিল করে মারছে।আজকে তুমি আমাকে এর কারন না বলে কিছুতেই যেতে পার না।বলতেই হবে আজ
রানা:-দেখ আমি এই মুহুর্তে তোমাকে কিছুই বলতে পারব না।আর চলে যাও এখান থেকে তারাতারি।
ইভা:-তুমি কেন এসব করছ কি দোস করেছি আমি।(কাদো কাদো কন্ঠে)
রানা:-এখন সময় নেই আমার আমি যাই
আর কিছুক্ষন থাকলে হয়ত রানা কেদেই ফেলত।ইভা চলে যাবে সেই মুহুর্তে রানার কান্নার আওয়াজ পেল।দুর।থেকে শুনতে পেল রানা বলছে
:-আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।কিন্তু দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমি যে আমার মা-বাবাকে হারাতে পারব না।এ কথা বলে অনেক কাদতে থাকে।ইভা তখন আবার নিজ রাজ্যো ফিরে যায় এর রহস্য বের করতে।এদিকে রানার অদ্ভুদ রকমের জ্বর আসে।কোন ডাক্তারই এ রোগের কথা জানতে পারল না।অনেক রকম পরিক্ষা আর বিখ্যাত ডাক্তার দেখায়েও কোন লাভ হল না।রানা বুঝতে পারল যে তার দিন শেষ।সে কিছুদিন এই পৃথিবীকে শেষ দেখা দেখতে চাইল।
.
.
এদিকে ইভা অসুখের খবর জানতে পেয়ে তার জাদু দিয়ে অনেক কষ্টে ঔষধ বানালো।এবং ডাক্তার সেজে তাকে পরম যত্নে খাইয়ে দিল।রানা আচমকা ঠিক হয়ে গেল এবং রানার জীবন বাচানোর জন্য মেয়েটির উপর তার বাবা-মা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।ইভা তখন রাজ্যো ফিরে তার বাবার সাহাজ্যো জানতে পারল যে এই কাজ টা জীন জগতের এক জীনের কাজ যে তাকে আগে অনেক ভালবাসতো।কিন্তু ইভা তাকে পাত্তা দিত না।তাও জীন টি তাকে সমানে ভালবেসে গিয়েছে কিন্তু যখন সে ইভার সাথে অন্য একজনকে দেখেছে রাগে তখন ফেটে পরেছে।একজন সাধারন মানুষ তার ইভাকে ভালবাসে এটা কিছুতেই মানা যাবে না।তাই সে এ কান্ডটি করেছে।এ কথা জানার পরেই কাউকে কিছু না বলেই ইভা চলে যায় সে জীনের কাছে।রাগে সে।আক্রমন করে কিন্তু শক্তিশালি জীন ইভাকে পরাস্থ করে আর তাকে নিজ রজ্যো এক গুহায় বন্দি করে ফেলে
.
..................................(চলবে)
.
.
পরবর্তী পর্ব পড়তে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথে থাকুন।

>}> পরীর সাথে প্রেম<{< রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৪

.
.
সোহেল রানার মনে কেমন যেন কু ডাক গাইতে থাকে।ইদানিং স্বপ্নে সে ইভার চিতকার শুনতে পায়।সেই জ্বীন সেই গুহা এবং গুহার মধ্যো বন্দি ইভাকে।আবার ইদানিং কলেজেও ইভাকে না দেখতে পেয়ে তার মন খারাপ হতে লাগল।একদিকে ভালই হয়েছে মেয়েটার কারনে যা ঝামেলা হয়েছিল সব মিটে গেছে।কিন্তু ইভাকে যে সে ভালবাসে।প্রচুর ভালবাসে।আবার সেই জীন তার কিছু ক্ষতি করল না তো যে তার মা ও বাবাকে মারার হুমকি দিয়েছে।না মাথা কাজ করছে না।খুব মন ছটফট করছে ইভাকে দেখার জন্য।মেয়েটিকে ওভাবে বলা উচিত ছিল না।রানা আবার হয়রানিতে ভুগলেও বাড়িরয় কাউকে সে বুঝতে দিল না ব্যাপার টা।কিন্তু তার এই মানষিক টেনশন দুর করতে ইভার সন্ধানে চলে গেল ফারিয়ার বাসায়।ফারিয়া ইভার ফ্রেন্ড এবং কলেজে তার সাথে বারংবার কথা বলতে দেখেছে।বোধহয় ও কিছু জানে কিনা এই আশায় তার বাসায় আসা।বাসাটি খুজতে সময় লাগলেও পৌছিয়ে কলিং বেল টিপল।নির্জন লোকশুন্য একাকায় বাড়িটা।জানে কেডা কোন বাপের আমলে বিণামূল্যো এই ভাংগাচুড়া বাড়িটা পেয়েছিল।কিভাবে মানুষ এইরকম এক পরিবেশে থাকতে পারে কে জানে।না আছে আশে পাশে কোন দোকান,না ছে হাসপাতাল এমনকি ঔষধের দোকান ও নেউ।শহরের মধ্যো কে জেন গ্রামের অংশ এনে থুয়ে দিয়েছে।সমস্ত ভাবনাকে গায়েব করে দিয়ে ফারিয়া দরজা খুলল।ফারিয়াও সোহেল রানাকে পছন্দ করত কিন্তু কখনও বলতে পারে নাই।আজকে চোখের সামনে রানাকে দেখতে পেয়ে অনেক খুশি হয়ে দরজা খুলে দিল।রানা দেখল বাসায় সে একা রয়েছে।ফারিয়া বলল যে তার মা ও বাবা বাইরে কাজে গেছে এবং একথা বলে রান্নাঘরে গেল কিছু খাবার নিয়ে আসতে।ওমা একি রানার পছন্দের সকল খাবার আনা হয়েছে।কিন্তু রানার এখন কোন বিষয়ে আগ্রহ নেই।তার সুধু ইভার সন্ধান দরকার।অনেক দিন না দেখায় চিন্তিত হয়ে গেছে।দুই দিব হলেও দুই বছর মনে হচ্ছে তা।
রানা:-আচ্ছা যে কারনে এখানে আসা।তুমি ইভা কোথায় আছে বলতে পার
ফারিয়া:-না দুই দিন হল আমার সাথে দেখা আর হয় নাই কেন বলত
রানা:-আসলে এই দুই দিন না দেখায় খুব টেনশন হচ্ছে কেন জানি।প্রতিদিন কলেজে আসত কেন যে আসছে না।কিছু হয়ে গেল নাকি
ফারিয়া:-আরে নাহ।দেখ কোথায় বেরাতে গেছে হয়ত।আর টেনশন করছ কেন খামাখা একটা মেয়ের জন্য
রানা:-ও শুধু মেয়ে নয় আমার জন্য
ফারিয়া:-কেন এয়ারহোস্টার সে!!
রানা:-কথার মাঝখানে বা হাত ঢুকিও না।আসলে ইভাকে আমি অনেজ ভালবাসি।বলতে পারব না আমি তোমাকে কতটা আমি ইভাকে ভালবাসি।ওর প্রথম Hi বলার থেকেই আমি ওকে ভালবাসি
ফারিয়া:-নিস্তব্দ
রানা:-কি হল কিছু বল।বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি।এটাকে সারপ্রাইজ বলতে পার
ফারিয়া:-হুম।এর থেকে বড় সারপ্রাইজ আমার লাইফ এ কোনদিন পাইনি।আচ্ছা ইভার ব্যাপারে কিছু জানলে বলবানি
রানা:-আচ্ছা তাহলে আসি
ফারিয়া দরজা বন্ধ করে অনেক্ষন কাদতে থাকল।তার প্রথম ভালবাসা হারিয়ে গেল
.
.
এদিকে পরীদের রাজ্যো তান্ডব শুরু হয়ে গেছে।রাজা তার মেয়েকে তন্ন তন্ন করে খোজা শুরু করতে লাগল।রাজ্যো সবযায়গায় খবর ছরিয়ে পরল।পুরা রাজ্যো বিষন্নতা ছরিয়ে পরেছে।ইভার কোব সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না ভাবতেই সবার বুক কেপে উঠল।ইভার মা কাদতে কাদতে ভাশিয়ে ফেলেছে।তাকে সান্তনা দিবে নাকি ইভার বোন মেঘাকে শান্তনা দিবে।
ইভার মা:-ওগো আমদের মেয়ে ইভা কোথায় চলে গেল।তুমি তারাতারি যেখান থেকে পার আমার মেয়েটাকে নিয়ে আস।
মেঘা:-হ্যা আব্বু প্লিজ তুমি আপুকে তারাতারি খুজে বের কর।
বাবা:-আচ্ছা এভাবে মরা কান্না কাদছ কেন তোমরা
--তা কাদব না।ইভা মেয়ে আমার দুই দিন বাসায় আসে না।ও তো কোনদিনও এমন করে নাই।আমি বলছি তুমি তারাতারি সৈন্য পাঠাও
বাবা:-হতে পারে কোন অভিজানে গেছে।আচ্ছা দারাও আমি দেখছি
--দেখছি না তারাতারি কিছু কর।আমি আমার ইভাকে দেখতে চাই।
রাজামশাইক টেনশনে পরে গেছেন।সবযায়গায় এলান করা হয়েছে এমনকি জীনজগতেও এ খবর ছরিয়ে পরে।
.
.
সোহেল রানা এদিকে ইভার কলেজে যায় এবং তার ব্যাপারে কিছুই তেমন জানা যায় না।কেমন সন্দেহের সৃষ্টি হয় তার মনে।কলেজে এদিকে যার কমবেশি ইভার সাথে কথা বলে তারাও নাকি কোনদিনও ইভার বাড়ি দেখেনি।কলেজের মধ্যো তাদের বন্ধুত্তের সীমাবদ্ধ।আবার ইভা নাকি কারো সাথে বেশি কথা বলত না।চুপচাপ মেয়েটা কেমনে রানার সাথে এত কথা বলত বুঝতে পারে না।ইভার চার ফুট হাওয়ায় ভাসা,জীনের সাথে ইভার সম্পর্ক আরো যাবতীয় প্রমান রানার মনে প্রচুর সন্দেহের সৃষ্টি জাগায়।কিছুই মিলাতে পারছে না রানা।এদিকে মেঘা অর্থাত ইভার বোন রানার কাছে আসল ও ইভার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করল এই ভেবে যদি সে কোন কিছু তার ব্যাপারে জেনে থাকে।
মেঘা:-তুমি কি ইভার ব্যাপারে কিছু জান
রানা:-কিসের ব্যাপারে?
মেঘা:-আসলে কিছুদিন তার দেখা পাচ্ছি না।খুব ভয় লাগছে তাই বল্লাম
রানা:-ভয় তো আমারো লাগছে কিন্তু আমিও তো একই ভাবে তাকে খুজছি।আচ্ছা ইভার বাসা কোথায় যান?
মেঘা কিছু না বলে হতাশা হয়ে চলে গেল।মেঘা মনে করেছিল তার বোন রানার কাছে আছে।কিন্তু সেই আশাও বিফলে গেল
.
.
জীনজগতে কেউ জানে না যে তাদের ই একজন ইভাকে আটকে রেখেছে।এদিকে ইভা অনেক কষ্টে ওখানে রয়েছে।সেই দানব টা এসে প্রতিবার তার কাছে প্রথমে ভালবাসার কথা বলে,না শুনলে অনেক কাকুতিমিনতি করে।তবুও না শুনলে অনেক মারধোর করে আর পরে নিজেকে শাস্তি দেয় ইভাকে মারার জন্য।একদিন জীনটি প্রচন্ড রেগে যায়
--তোর আমাকে ভালবাসতেই হবে।দরকার হয় জোর করে আদায় করে নিব
--পারবি না।কারন জোর করে কখনও ভালবাসা আদায় করা যায় না
--মানুষের ডায়লগ এখানে দিস না।আর হ্যা তোর রানারও এক ব্যাবস্থা করছি।অনেক ভালবাসার শখ জেগেছে না তার মনে।আমি তাকে মৃত্য দিয়ে তার নাম তোর মন থেকে মুছে দিব
--রানার গায়ে হাত দিলে আমি তোকে ছারব না।ও আমার প্রান
--হা হা হা।রানাকে তাহলে মরতে হবে
এই বলে দানবটি চলে যায়।এদিকে সেই দানবটার বোন আসে এবং ইভাকে মুক্তি করে দেয়
আগন্তক:-ভাইয়া আসার আগে চলে যাও
ইভা:-ধন্যবাদ তোমাকে।কিন্তু তোমার ভাইয়া আমার রানাকে মারতে গেছে
--সে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।আমি রাজাকে কিছুক্ষনের মধ্যোই এই সংবাদ পৌছে দিব
ইভা আর অপেক্ষা করল না।চলে গেল তার রাজ্যো।এদিকে তার পরিবারের সবাই ইভাকে ফিরে পেয়ে অনেক খুশি হল।ইভা তার বাবাকে সম্পুর্ন ঘটনা টা জানায়।এটাও বলে কিভাবে সেই দানবটি রানাকে ভয় দেখিয়েছে।ইভা তার বাবার কাছে বিচার চেতেই তার বাবা জীনের রাজ্যো গিয়ে তার পরিচালনায় সেই দানবটির শাস্তি হয়।
এদিকে খুসিতে সে রানাকে সেই গাছটার কাছে আসতে বলে যেখানে সে প্রথম রানাকে দেখেছিল।রানা আসতেই ইভার কাছে তার সন্দেহের প্রকাশ করে।তার আসল পরিচয় জানতে চায়।এরই মধ্যো মেঘা বড় দুইটা পাখনা মেলে নিচে আসে।রানা অনেক অবাক ও ভয় পায়।ইভা বলে এটি তার ছোট বোন।আর যাবতিয় সব কথা বলে যে কখন কোথায় সে তার প্রেমে পরে
.
.....................................(চলবে)
লেখায় ভুলভ্রান্তি ক্ষমার চোখে দেখবেন। এবং পরবর্তী পোষ্টের জন্য লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে সাথেই থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।

>}> পরীর সাথে প্রেম<{< রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৫

.
.
সোহেল রানা তার নিজ চোখ ও কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।এমনিতেও ভিতু টাইপের হলেও আজ কেন যেন ভয় লাগছে না।শুধু এক অদ্ভুদ শিহরন বয়ে চলেছে সারা শরীর এর মধ্য দিয়ে।ইভাকে সে কি বলবে সঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।বাংলা,হিন্দি সব ছিনেমার ডায়লগ যা মনে ছিল তাও ভুলে গেছে
ইভা:-কি হল কিছু বলছ না
রানা:-আমি জানতাম তোমাকে পরীর মত দেখতে।কিন্তু তুমি.....
ইভা:-কেন বিশ্বাস হচ্ছে না
রানা:-আচ্ছা শুনেছি রুপকথার পরীরা নাকি তিনটি বর প্রদান করে
ইভা:-৩ টির কথা যানি না।তবে আমার কাছে একটি বর আছে।আর সেটা তুমি
রানা:-বিয়ে করলাম কবে।তবে শালিকে বারবার উরতে মানা কর।অদ্ভুদ লাগছে
ইভা:-একটু আগেই তো বল্লা আমাকে বিয়ে কর নাই।তবে আমার বোনকে শালি বল্লা কেন
মেঘা:-তবে যাই বল আমি দুলাভাইকে কেমন surprise দিলাম
রানা:-ওয়ে বাবা।ওখানে।সবাই আবার ইংরেজি জানে নাকি!!
মেঘা:-নয় তবে আপুর মুখে শুনেছি।মনে হয় আমার দুলাভাই এর কাছ থেকে শিখেছে
ইভা:-আমার কিন্তু একটা জিনিস নিয়ে এখনও ভয় হচ্ছে
রানা:-কি বিষয়ে?
ইভা :-আচ্ছা তুমি কি আমাকে আবার আগের মত ভালবাসতে পারবা।জান আমি কখনও তোমাকে হারাতে চাই না।এজন্য আজ পর্জন্ত তোমার কাছে এই সত্যটা লুকিয়ে এসেছি।এখন যদি ছেরে চলে যাও আমি কিন্তু বাচতে পারব না
রানা:-বাংলা ছিনেমার কমন ডায়লগ এটা।আচ্ছা তুমি এত ডায়লগ পেলা কোন জায়গায়?
ইভা:-তুমি মজা করছ।আগে বল সারাজীবন আমাকে ভালবাসবা কিনা
রানা:-হুম ভালবাসতে পারি তবে এক শর্তে
ইভা:-কি?
রানা:-আমাকে তোমার রাজ্যে নিয়ে যেতে হবে।অনেক শখ পরীদের দুনিয়াটা দেখার
ইভা:-হাত ধর
রানা:-তোমার বোনের সামনে :-) আচ্ছা ধরলাম
.
.
ইভা রানাকে নিয়ে তাদের রাজ্যো নিয়ে গেল।রানা আস্তে আস্তে মেঘের উপরে যাচ্ছে।নিচে তাকানোর সাহস নেই তার।মনে মনে তবুও অনেক উত্তেজনা কাজ করছে।ছোটবেলায় শুধু রুপকথার গল্প শুনেই গেছে।কোনদিনও বিশ্বাস না করলে অনেক রকমের অনুভুতি কাজ করত।কল্পনায় নিজেকে পরীর দেশে খুজে নিত আর আজ তাকে এক পরী যাকে সে অনেক ভালবাসে সে তাকে তার স্বপ্ন পুরন করতে সাহায্য করছে।কিছুক্ষনের মধ্যোই তারা রাজ্যে ফিরে এল।ছোটবেলায় রানা পরীদের দেশ সম্পর্কে যা শুনেছিল বা অন্যান্য জায়গা হতে যা জেনেছিল তার কিছুই দেখতে পেল না।তবে অন্যরকম ছিল যায়গাটা।এদিকে শালি দেখি জ্বালিয়ে পুরিয়ে খেল।কোথায় রাজ্যো টা ঘুরিয়ে দেখাবে তা নয় নিজের প্রশংসা করতে ব্যাস্ত আর তার বাবার বাহাদুরি নিয়ে ব্যস্ত।আচ্ছা সেটা তো হবে কিন্তু শশুরমশাই কে তো দেখা যাচ্ছে না।ইভা রানাকে তার মা-বাবার সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে আসল।শশুরমশাই এর বিশাল ডানা দেখতেই রানা ব্যাস্ত।এদিকে তার শাশুড়ি কে অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে যেখানে তার শশুরমশাই ততটা সুদর্ষন নয়।বলেই ফেলল তার ইভার মায়ের সৌন্দর্যের কথা।ভাগ্যিস মুখ ফসকে শশুরমশাই এর কালা চেহারার কথা বের হয় নাই।তবে মেয়ে দেয়া তো দুরের কথা ওকে রাজ্য হতে চুড়ে নিচে ফেলা হত।রানা একদিকে আবার পটানোর এক্সপার্ট।ইভার মা-বাবাকে।পটাতে তার বেশি সময় লাগল না।কিন্তু হনুমান মার্কা শশুরমশাই কে পটাতে বেশ কিছু সময় খরচ হল।বান্দা কোন কিছুতেই খুশি হচ্ছিল না।তবে সামনে যেই হোক না কেন পটানো রানার কাছে সোজা।এদিকে মেঘা তার শালি রানাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে গেল।রানাকে এমনিতেও দেখতে রাজ্যোর প্রায় সব লোক ছুটে এসেছে।নিজেকে ছেলিব্রিটি মনে হচ্ছে।কিন্তু রানা আসলে জানে না তারা তাকে নয় ইভার মানুষ্য প্রেমি কে দেখতে এসেছে।এদিকে রানা রাজ্যে বিভিন্ন যায়গা পরিদর্শন করল।ভাগ্যিস ভাল পৃথিবীর মত এখানে কসমেটিক্স এর দোকান নেই।থাকলে হয়ত আজকে তার।পকেট খালি হয়ে যেত।আচ্ছা বাংলাদেশে টাকা চলে আমেরিকায় ডলার।এখানে কি চলে ভাবতে থাকে
.
.
ভাবতে ভাবতে একা একা একটু দুরে যেতেই ফারিয়াকে দেখতে পায়।এই তো সেই ফারিয়া যাকে সে ইভার সাথে দেখেছিল।কিন্তু এ এখানে কিভাবে এল।ফারিয়ার বাসা ছিল নির্জন স্থানে।কোন বাঘ খেয়ে ফেলায় মরে ভুত হয়ে আসেনিতো।কল্পনার জগত কে ভেংগে ফেলে ফারিয়া বলল
--আমি তোমাকে ভালবাসি।সেই কলেজ স্কুলে পরার সময় থেকে।আমি জীন এর সন্তান এটা ভেবে ভয় পাবে বলে বলা হয়ে ওঠেনি।কিন্তু আর নয়।ইভার অনেক আগ হতে আমি তোমাকে ভালবাসি।তুমি চাইলে আমি ইভার থেকেও বেশি সুন্দরের রুপ ধারন করব
--কিন্তু আমি ইভাকে ভালবেসে ফেলেছি।তার রুপের জন্য নয় আমি তার মনকে ভালবেসে ফেলেছি।তাই আমার কাছে তোমাকে ভালবাসা সম্ভব নয়।দয়া করে বোঝার চেষ্টা কর
--কিন্তু আমি তোমাকে ইভার থেকেও বেশি ভালবাসা দিব
--আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না আমি ইভাকে কতটা ভালবাসি।শুধু এটাই বলতে পারব ওকে চাড়া আমি ১ মুহুর্ত ভাল থাকতে পারব না
--তুমি যেটাকে ভালবাসা ভাবছ ওটা আসলে ভালবাসা নয়।আমি তোমাকে প্রকৃত ভালবাসি
--আমি জানিনা তুমি আমাকে কতটা ভালবাস।কিন্তু আমিও ইভাকে চাড়া থাকতে পারব না।দয়া করে আমাকে তুমি ভুলে যাও
রানা তার শালিকে নিয়ে ওখান থেকে চলে গেল আর গোটা ব্যপারটা সবার থেকে লুকিয়ে রাখল।
.
.
রানা ইভাকে নিয়ে আবার পৃথিবীতে আসল।কিন্তু ঘরে এসে দেখে যে তার মা বাবা ঘরে নেই।তাই ইভাকে নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল।হটাৎ ইভা অদ্ভুদ রকমের একটি দৃশ্য তার চোখে ভেসে উঠতে দেখল।দেখতে পেল কেউ দু জন কাপলস কে বেধে রেখেছে মানুষের চামরা দিয়ে।রানাকে নিয়ে গেল এ ব্যাপারে খোজ নিতে।ইভা আস্তে আস্তে সে যায়গায় প্রবেশ করতে দেখল সেই কাপলস রানার মা-বাবা আর তাদের সামনে ইভার সেই প্রেমি দানবটি।তবে সেই দানবের চোখে ইভার জন্য ভালবাসা নেই।আছে খুন করার অগ্নিময় চোখ।এই মুহুর্তে ইভার রাজ্য হতে কেউ আসতে পারবে বলে মনে হয় না তাদের বাচাতে।আর ইভার কাছে সেই দানবটির সাথে লড়াই করার পর্যাপ্ত শক্তি নেই।,,,,(চলবে)

লেখায় ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। গল্পটি কেমন লাগছে জানিেয় লেখককে পরবর্তী পর্ব লেখার জন্য উৎসাহিত করবেন। সবাইকে ধণ্যবাদ।

♡ পরীর সাথে প্রেম♡《 রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৬ (শেষ পর্ব)

》♡ পরীর সাথে প্রেম♡《
রহস্য বড় গল্প
লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন
পর্ব ৬ (শেষ পর্ব)
.
.
ইভা ভয় পেল না।ইভা সেই দানবটির সাথে লড়াই করল।রানার সাথে বেয়াদবি করার শাস্তি তাকে পেতেই হবে।সর্ব শক্তি নিয়ে দানবটির সাথে লড়াই করতে লাগল।রানার চোখের সামনে পুরা ঘর আলোতে ভরে যাচ্ছে।বিকট শব্দ তে কেপে ওঠে পুরা বাড়ি।কিন্তু এক পর্জায়ে হেরে যায় ইভা এবং সেই দানবটি ইভাকে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে।ইভার বাকশক্তি আর যেন নেই।একচোখে রানার দিকে তাকিয়ে থাকে এবং তাকে আভয় দেয়ার চেষ্টা করে যে সে ঠিক আছে।কিন্তু সেই চেষ্টা একান্তই মিথ্যা।কারন রানার চোখ হাত সব বাধা।আহা কি কষ্ট হচ্ছে আমার রানার।জানোয়ারটা তাকে বেধে রেখেছে কত কষ্টই না হচ্ছে না তার।এদিকে রানা ইভার আঘাত সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেছে।ঘুমের মধ্যো রানার চেহারা অনেক মায়াবি লাগছে।অনেক ইচ্ছা করছে তার কপালে আলতো করে এক চুমা একে দিতে।কিন্তু সেই সামর্থ যে ইভার নেই।দানবটা শেষমেষ তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করল।ইভার চোখ থেকে এক ফোটা পানি বের হল।চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।সেই দানবটি রানাকে হত্যা করার জন্য হাত বারায়।ইভা তখন বিকট চিতকার দিয়ে ওঠে।মেঘা তখন হাল্কা ভয়ের উপলব্ধি টের পায় নিজের মধ্যো।তাই সে দেখতে যায় কি চলছে।রানার কাছে এসে বিষয় তা বুঝতে পেরে তারাতারি নিজের রাজ্যো ফিরে আসে।তার মা-বাবাকে খবর দেয় এর ব্যাপারে।এ মুহুর্তও ব্যায় না করে সৈন্য নিয়ে এসে হাজির হয় সেই দানবটির সামনে।নিজের মেয়ের নিস্তব্দ শরীর টা দেখে রাগে দুঃখে সেই জ্বিনের পুরা শরীর বিক্ষিপ্ত করে দেয়।এসব তারই ভুল।যদি সে ঠিক সময় আসতে পারত তাহলে তার আদরের মেয়ে তার কলিজার টুকরাকে হারাতে হত না।একসময় দেখল রাত হয়ে গেছে চারদিকে অন্ধকার আবার ভুমিকম্প হচ্ছে।কিন্তু পরে বুঝল যে না এটা শুধুমাত্র তার নিজের সাথে হচ্ছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।ইভার নিস্তেজ শরীর নিয়ে চলে যায় নিজ রাজ্যো।ও যাওয়ার আগে রানাকে তার বাসায় পৌছে দিয় আসে
.
.
রানা ঘুম থেকে উঠে ইভার খোজ করতে লাগে।কালকের ঘটনা তাকে পাগল করে দিয়েছে।সে যায়গায় ফিরে যায় যেখানে ইভা তাকে ভালবাসে প্রথম,ইভার পছন্দের স্থান।কিন্তু সেখানে ইভার সন্ধান পায় না রানা।অবশেষে সেই স্থানে যায় যেখানে শেষবারের মত ইভার সাথে তার দেখা হয়েছিল।কিন্তু সেখানেও রানার নিরাশা বেরে যায়।ইভার কোন ক্ষতি হয় নি তো।দানবটি ইভাকে কতই আঘাত না করেছে রর সে কিছুই করতে পারে নি।নিজেকে কাপুরুষ বলে মনে হচ্ছে।ভালবাসার জন্য কিছুই করতে পারল না।হয়ত দানবট ইভাকে আবার বন্দি বানিয়ে নিয়ে গেছে।কিন্তু রানা তো আসলে জানেই না যে তার ইভা আর নেই।এদিকে কোথা থেকে ফারিয়া এসে পথে বাধা এসে দারাল।তার ভালনাসা আদায় করার সময় হয়ে গেছে তার।এত সব পরিকল্পনা তো রানাকে পাওয়ার লোভে।সে তো তার ভাইকে ইভার প্রতি উত্তেজনা করে তাকে মারার জন্য পাঠিয়ে দেয়।তবে তার ভাইও মারা যায় এতে কিন্তু ফারিয়ার বিশেষ কোন দুঃখ হয়নি এতে।কারন সে রানার ভালবাসায় পুরা পাগল হয়ে উঠেছে।যেকোন পর্জায় রানাকে তা চাই।রানার অবহেলা তিল তিল করে খেয়ে ফেলছে ফারিয়ার হৃদয়কে।না এটা হতে দেয়া যাবে না।ইভা কেন কেউ রানার হতে পারে না শুধুমাত্র ফারিয়া ছারা।রানা তার কল্পনার জগত ভেংগে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল
--কেন এসেছ এখানে?
--শুধু তোমাকে চাই
--এখন প্লিজ আমার কাছ থেকে চলে যাও।ইভার কোথায় আছে সেটা ভেবে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।আর এখন তুমি বিরক্ত কর না
ফারিয়া অনেক রেগে ওঠে।সে তার কানে আর ইভার নামটা সহ্য করতে পারছে না
--ইভা,ইভা,ইভা শুধু এটাই করতে পার।ইভা মারা গেছে।হ্যা হ্যা আমি মেরেছি তাকে
হটাত বর রকমের ধাক্কা খায়।কিন্তু তার ইভার উপর অনেক ভরসা আছে
--এখন ফালতু কথা বলার সময় আমার কাছে নেই।আর ইভার কোন সন্ধান যদি নাই থাকে খামাখা কানের সামনে এসে চিল্লাইও না
ফারিয়া তখন ওখান থেকে চলে যায় পরীর রাজ্যো তার প্রমান দেখানোর জন্য
.
.
এদিকে ইবার বাবা এক বয়স্ক জ্বীন এবং শক্তিশালি ও জ্ঞানীও বটে তাকে নিয়ে।আসে।অনেক দেখার পর তিনি বলেন
--ইভাকে বাচানো সম্ভব নয়।তবে একটা উপায় আছে
--তারাতারি বলুন কি সেই উপায়
--ইভার শরীর এক মৃত শরীরে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই আমার শক্তিতে তিন দিনএর জন্য প্রান ফিরে পাবে
--কিন্তু পরে
--ইভার ভালবাসায় পাগল এক যুবকের হৃতপিন্ড ওই লাশে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই ইভা বেচে যাবে
--আপনি তাই করুন দয়া করে আমার মেয়েকে বাচান
--আচ্ছা আপনি হৃতপিন্ড ব্যাবস্থা করুন
ইভার বাবা চিন্তা করে ব্যাকুল কে এমন হতে পারে।সেই দানবটি তো তার নিজের আঘাতে মারা গেছে।তবে আর কোন যুবক আছে যে ইভাকে ভালবাসে।হ্যা রানার কথা মনে পরেছে তার।তবে যেই হাতে রানার জীবন বাচিয়েছে সেই হাতে তাকে মারতে হবে।না তার পারতেই হবে।অন্তত ইভার জন্য হলেও।এদিকে ইভার আত্তা মৃত এক মেয়ের শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছে।ইভার ফিরে আসায় সবাই খুশে হয়ে ওঠে।ইভাও প্রচুর কান্না করে ভেবেছিল আর তার মা-বাবা আর আদরের বোনটাকে আর দেখতে পারবে না।এদিকে যখন দুঃখময় সৃতি চলছিল অন্যদিকে ফারিয়া রানার কাছে এসে ইভার শরীর নিয়ে আসে প্রমান স্বরুপ আর বলে ইভাকে বাচাতে তাকে মারতে আসছে ইভার বাবা।রানা তখন বলে যে সে তার হৃতপিন্ড দিয়ে হলেও ইভাকে মরতে দিবে না।কিন্তু ফারিয়া এ ব্যাপারে বাধা দিয়ে তাকে খুব গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখল
.
.
এদিকে ইভার বাবা পাগলের মত রানাকে খুজতে থাকে।অন্যদিকে ইভা সম্পুর্ন ব্যাপারটি জানতে পেরে চলে যায় রানার কাছে।রানা তখন ফারিয়াকে বলতে থাকে যে সে বেচে থাকতে ইভার কোন ক্ষতি হতে দিবে না।এদিকে ইভার বাবা তাদেরকে খুজে পায় ও রানাকে মারার জন্য হাত বারায়।রানার মনে কোন ভয় নেই আরো মনে খুশি কাজ করছে।ইভার জন্য কোনদিন কিছুই করতে পারে নি।শুধু ইভাই করে চলেছে।আজ তার জন্য কিছু করার সুযোগ এসেছে।সবচেয়ে মুল্যবান জিনিস টা ইভাকে দিয়ে যাবে।কিন্তু তা হল না।ইভা তার বাবার সামনে এসে দারাল।কিন্তু মেয়েকে বাচানোর নেশায় ইভাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।মানুষের শরীরে থাকায় ইভার শক্তিও ছিল না বাধা দেয়ার।হটাত ইভার মাথায় একটা বুদ্ধি এল।রানার দিকে একটি মুচকি হাসি দিয়ে ছুরি দিয়ে নিজ শরীরে আঘাত করল।চারপাশে নিস্তব্দ পরিবেশ।বাংলা ছিনেমার ডায়লগ ছারা মেয়েটা আজ বাংলা ছিনেমার মতই নিজের জীবন উতসর্গ করে দিল।সব গুলিয়ে যাচ্ছে রানার।নিস্তব্দ পরিবেশে ইভার শরির রানার দিকে একদৃষ্টি তে চেয়ে আছে।সে ধিরে ধিরে ইভার কাছে যায়।এই বুঝি ইভা তাকে থাপ্পর মেরে বলে তারাতারি দেখা করতে।কিন্তু না...আর ইভা তাকে কিছুই করতে পারবে না।রানাকে স্বাধিন করে দিয়ে চলে গেছে।রানা পাগলের মত কাদতে থাকে।কে আজ থেকে তার খেয়াল রাখবে।কেই বা তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে।আবার কেই বা তাকে এতটা ভালবাসবে।চোখের সামনে সব ঘোলাটে হয়ে যায়।হটাত রানা কি ভেবে ইভার হাত থেকে ছুরি টা নেয় আর নিজ শরীরে আঘাত করে
.
.
নাহ রানা মারা যায়নি।ইভার বাবা রানাকে আটকিয়ে ফেলে।সে ইভার শেষ সৃতি তাকে কিভাবে মরতে দিতে পারে।রানাকে বাচতে হবে ইভার মা-বাবার জন্য বাচতে হবে।
.
..................................(সমাপ্ত)

এই সাগর কানে কানে একটা কথা শুনে যাও....

--এই সাগর কানে কানে একটা কথা
শুনে যাও....
সাগর সাহেব অফিসের ফাইল রেখে
এগিয়ে আসলো আমার দিকে
--বলো কি বলবা।কানে কানে না
বললেও হবে এই রুমে তুমি আমি ছাড়া
আর কেউ তো নেই তাইনা।
--আসো তো। আমি কানে কানে বলবো
--আচ্ছা বলো
--বলছি যে....
--আআআআআআআআওও।উফ স্নেহা
তোমাকে না কতবার বলেছি আমার
সাথে ফাজলামি করবানা। তুমি বড়
হবা কবে বলোতো।এভাবে কামড় দেয়
কেউ!
--হিহিহিহি
--ঠাস.....অসভ্য মেয়ে।বের হয়ে যাও এই
রুম থেকে।
চোখদুটো গোল গোল করে সাগরের
দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে
আসলাম।এনাকে আর ভালবাসা
শেখাতে পারলাম না। বড্ড লেগেছে
গালে।দরজার ওপাশে গিয়ে সাগর
সাহেবকে লক্ষ্য করছি।
উনি ফ্লোরে বসে পড়লেন। আমি যে
কানে কামড় দিয়েছিলাম সেখানে
হাত রাখলো। যেন কিছু একটার স্পর্শ
নিচ্ছে। কিন্তু একি ও কাঁদছে কেনো!
দুইমিনিট পার হয়ে গেল প্রিয়তম এখনো
কাঁদছে। আমার কি করা উচিত? ওর
কাছে গিয়ে বলবো নাকি --আমি কষ্ট
পাইনি। তুমি চাইলে আরেকটা
মারো।"কিন্তু আমার গালেও হেব্বি
ব্যথা লেগেছে।
এর প্রবলেম কি বুঝি না। এর বাবা মা
বোন সবাই আছে।আমার মত পাগলী
একটা বউ আছে। কিন্তু এ তো দেখি
কারো সাথেই মিশে না। আমাকে
বিয়ে করে এনেছে পাঁচমাস হতে
চললো কিন্তু আমার সাথে কথা বলতেও
যেন ওর কোথায় কষ্ট হয়। একটু পাগলামী
করেছি তাই এমন জোরে থাপ্পড়।একবার
হাতটা একটু টাচ করেছিলাম ওরে
বাবা কি ভয়ানক লুক নিয়ে
তাকিয়েছিল আমার দিকে। ভাগ্যিস
বেশি কিছু করতে যাই নি। নাহলে
এতক্ষণে পেটে ছুরি চালিয়ে দিত।
বাট বেটা এখন কাঁদছে কোন দুঃখে।
কাঁদা তো আমার উচিত।এমন একটা বর
জুটেছে আমার কপালে। মাঝে মাঝে
সন্দেহ হয় অন্য কোনো জেন্ডারের না
তো আবার? চেহারা মাশাল্লাহ।
চেহারা দেখে তো মনে হয় ছেলেই
হবে।বাট আমার সাথে এমন করে কেন!
.
উঁকি দিলাম রুমে। সাগর সাহেব এখনো
মাথা নিচু করে কাঁদছে।এর ব্যাপার
কি বুঝছি না। আস্তে আস্তে এগিয়ে
গেলাম ওর দিকে।সামনে যেয়ে ডাক
দিলাম।
--এই যে শুনো...
সাগর সাহেব চোখ তুলে তাকালো
আমার দিকে। চোখদুটো টমেটোর মত
লাল হয়ে আছে। আমার হাসি পাচ্ছে।
কিন্তু এখন হাসলে অবস্থা খারাপ হয়ে
যাবে।ও আমাকে ওর কোলের উপর
বসালো।একদৃষ্টিতে দেখছে আমাকে।
যে গালে মেরেছে দৃষ্টি ওখানে
প্রখর।কিছু না বলেই জড়িয়ে ধরে
কেঁদে উঠলো আবার।এই প্রথম কেউ
আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে আছে।সেইরাম
ভালো লাগছে।বাট কান্নাকাটি
করছে বলে ততটা ভালো লাগছে না।
জড়িয়ে রেখেই...
--স্নেহা...!
--হুম বলো।
--আমি না ছোট থেকে কারো সাথেই
তেমন মিশি নি।বাবা মা দুজনই চাকরি
নিয়ে ব্যস্ত থাকতো।বড় বোন কারণে
অকারণে ঝগড়া করতো। টাকার অভাব
ছিল না কখনো। অভাব ছিল একটু
ভালবাসার,পরিবারের একটু মিষ্টি
শাসনের,পরিবারের সাথে একটু সময়
কাটোনোর।যখন যেটা মনে হয়েছে
করেছি। কারো অনুমতি নেওয়ার দরকার
হলেও কেউ অনুমতি দেওয়ার সময়
পায়নি।সব কিছু থাকার পরও পরিবারের
ভালবাসার অভাব ছিল।টাকা দিয়ে
এসব পূরণ করা সম্ভব ছিলনা। বড় হয়ে
ফ্রেন্ড হলো কয়েকটা যাদের জন্য
জীবনও দিতে পারি কিন্তু তাদের
সাথেও ভালমত মিশতে পারি নি।
বাবা মা এখন আমাকে ওদের কাছে
রাখতে চায় কিন্তু আমার আর থাকতে
ইচ্ছে হয়না। ছোটবেলায় যে
ভালবাসা পায়নি সেটা এখন পেয়েও
দূরে থাকতে ভালো লাগে। সবার
কাছে নিজেকে খারাপ বানানোর
চেষ্টা করি।কিন্তু কেন জানি কেউ
আমায় খারাপ বলে না। হয়তো করুণা
করে ভালো বলে।
এতক্ষণ কথাগুলা শুনছিলাম মন দিয়ে।
গলা শুকিয়ে গেছে আমার। কখন থেকে
জড়িয়ে ধরে আছে গরম লেগে যাচ্ছে।
গালে চিনচিনে ব্যথা করছে। মনে
সাগরের জন্য সুখ সুখ ব্যথা হচ্ছে।
ছেলেটার কত কষ্ট।ওর কষ্টের কাছে
আমার এই কষ্ট কিছুই না। আমার কেনো
জানি ঘুম পাচ্ছে।
--স্নেহা শুনছো তুমি..
--হুম
--কখনো প্রেমে জড়ায়নি। কারণ আমি
ভালবাসতে পারি না।ভালবাসতে
শিখি নি।আমার প্রতি তোমার
ভালবাসা তোমার পাগলামী দেখে
একটু একটু শিখেছি ভালবাসতে। আমি
তখন তোমাকে মারতে চাই নি
বিশ্বাস করো। আমার খুব কষ্ট লাগছিল।
আমাকে কেউ কখনো ভালোবাসে নি।
তুমি ভালবেসেছো কিন্তু সেই
তোমার গায়েই মারলাম আমি! আমি
আসলেই খারাপ
--হুম। এখন যেখানে মেরেছো
সেখানে গুনে গুনে তেত্রিশটা চুমো
দাও তাহলেই হবে।
সাগর আমার কথা শুনে ভড়কে গেছে।
আমাকে তুলে বিছানায় বসালো।
আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।গলা শুকিয়ে
গেছে।
--সাগর আমাকে একটু পানি খাওয়াও
না প্লীজ।
--এই নাও...
পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। খুবই ঘুম
পাচ্ছে। সাগর বললো
--স্নেহা তুমি আমাকে তেত্রিশটা
চুমো দিতে বললে কেনো?
--কারণ তিন সংখ্যাটা আমার জন্য
লাকি তাই।
--তাহলে শুরু করি...
--হুম লজ্জা পাচ্ছো কেন?আমি তোমার
বউ লজ্জার কিছু নেই।লাইট দিয়ে
গালে কি দেখছো?
--ইশ গালটা লাল হয়ে গেছে।
উম্মাহ...................
.
দশটা চুমো গুনার পরই ঘুমের রাজ্যে
হারিয়ে গেলাম।ঘুম ভাঙলো সাগরের
ডাক শুনে। চোখ মেলে চারিদিকে
তাকিয়েই আমার চোখ কপালে উঠে
গেল।কি রোমান্টিক ভাবে
সাজানো হয়েছে রুমটা।আমার প্রিয়
লাল রংএর মোমবাতি জ্বলছে।
ফুলদানিতে লাল গোলাপ ফুল। ওহ একটা
গানও বাজছে। আমার প্রিয় গান
"দিলমে ছুপা লুং গা"।এটা স্বপ্ন নয়তো
আবার!
--সাগর......
--হুম স্নেহা!
--এটা কি সত্যি? নাকি স্বপ্ন দেখছি?
এতসব কখন করলে তুমি?
সাগর আমার ঠোঁটে ছোট্ট একটা চুমু
একে দিল।অনুভব করলাম সেটা।এটা আর
যাই হোক স্বপ্ন হতে পারে না।
--স্নেহা....!
--হুম
--আমি ভালবাসতে শিখে গেছি
স্নেহা.....
মনে মনে ভাবছি বউকে একটা থাপ্পড়
দিয়েই ভালবাসা শিখে গেল
বেচারা!!ওহ ভুলেই গেছি তার জন্য তো
কানে কামড় দিতে হবে।
.