‘মা হতে যাচ্ছি’ রিয়ার মুখে কথাটা শুনে
মুখটা বিকৃত হয় জামিলের। রাগ করে বলল
‘এটা তো কোন কাজের কথা হলো না। ঔষধ
খাও নি।’
রিয়া অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। বলল, ‘ভুলে
গিয়েছিলাম।’
জামিল বলল, ‘এবার ঝামেলা বোঝো। কত
দৌড়াদৌড়ি করতে হবে বুঝতে পারছ?’
‘কী দৌড়াদোড়ি?’ রিয়া অবাক হয়ে
জিজ্ঞেস করল।
‘ক্লিনিকে যেতে হবে। জিনিসটা ফেলে
দিতে হবে।’
‘জিনিসটা না বাচ্চাটা?’
‘তুমি এই বিষয় নিয়ে খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছ
নাকি?’ জামিল ভুরু কুঁচকে তাকাল।
‘নাহ এমন কিছু না।’
‘ক্লিনিকে আমি দৌড়াতে পারব না। নিজের
কাজ নিজে সারবে।’ জামিল বলল।
‘ও আচ্ছা। রুম ডেটে অবশ্য তুমি নিজ উদ্যোগে
নিতে পেরেছিলে।’ রিয়া মনে করিয়ে দিল।
‘হ্যাঁ। এখন তো সব দোষ আমার।’ জামিলের
গলাটা কঠোর শোনায়। ‘আজকেই ডাক্তারের
কাছে যাবে। এই ঝামেলার কথা আর শুনতে
চাই না।’
রিয়া হাসল। বলল, ‘আমাদের অপরাধের
শাস্তি একটা নতুন জীবন পেতে পারে না।’
জামিল চোখ লাল করে বলল, ‘তাহলে কী
করতে চাও?’
রিয়া বলল, ‘ওকে বাঁচিয়ে রাখব।’
জামিল হাতে তালি দিয়ে বলল, ‘বাহ! দারুণ
বুদ্ধি। কিন্তু কোন পরিচয়ে বেড়ে উঠবে সে?’
‘তুমি বিয়ে করবে আমাকে। এরপর তোমার
আমার পরিচয়ে বেড়ে উঠবে।’
‘পাগল নাকি! আপাতত ৪/৫ বছরে বিয়ের
পরিকল্পনা নেই আমার।’ স্পষ্ট জানিয়ে দিল
জামিল।
‘আমি খুন করতে পারব না জামিল।’ কান্নাটা
সামলানোর চেষ্টা করল রিয়া।
‘একটা ঔষধ খেলে এতো ঝামেলা হতো না।’
জামিলের গলায় একটু নরম শোনায়। রিয়ার
চুলগুলো সরিয়ে মাথায় একটু হাত বুলিয়ে বলল,
‘আমাদের দু’জনের ভালোর জন্য ঝামেলাটা
ফেলে দিতে হবে রিয়া। প্লিজ বোঝার
চেষ্টা করো।’ রিয়া মাথা নাড়ায়। তার
কান্নার গতি বাড়তে থাকে।
হাসপাতালে ডাক্তার রিয়ার ইতস্তত ভাব
দেখেই আসল বিষয়টা বুঝে গেল। বলল,
‘আপনারা কেন যে এমন ভুলগুলো করেন? যা
হোক, না চাইলেও অপ্রিয় কাজটা আমাদের
নিয়মিত করতে হয়।’
রিয়া বলল, ‘আপা।’
‘জি বলুন।’ ডাক্তার বলল।
‘আমি ওকে হত্যা করতে আসি নি। আমি
জানতে এসেছি ও ভালো আছে কি না।’
ডাক্তার অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
রিয়া দৃঢ় কন্ঠে বলল, ‘আমি ওকে বাঁচাব আপা।
ও আমার পরিচয়ে বাঁচবে। আর মরতে যদি হয়
দু’জনে একসাথেই মরব।’
রিয়া ঠিক জানে না তাকে কী করতে হবে।
তার মুখে থুতু জমেছে। সে শুধু জানে
জামিলের মুখে এক দলা থুতু দেওয়া খুব
প্রয়োজন। আর বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে রাখার
জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করতে হবে
তাকে।
.
#Noman
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment