ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Monday, September 18, 2017

মিয়ামারের জন্য বড় দুঃসংবাদ যা জেনে খুশি হবেন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্রপত্রিকায় মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার খবর অনবরত প্রকাশ পাওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির পর্যটন খাতে। অনেক বিদেশি পর্যটক মিয়ানমার সফর বাতিল করছেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের টুরিজ্যম ফেডারেশন। ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার

ফেডারেশনের চেয়ারম্যান উ খিন অং তান বলেছেন, তার দেশে পর্যটক আগমন আশঙ্কাজনক হারে কমছে। অনেক দেশের সরকার তাদের নাগরিকদের মিয়ানমার সফরে যেতে বারণ করছে। ব্রিটেন তার নাগরিকদের ইতিমধ্যে মিয়ানমার সফরের ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এর ফলে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় কমছে। নাগাপালি সৈকতে বিদেশি পর্যটকও হ্রাস পেয়েছে।

খিন অং তান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রাখাইনে সহিংসতা ও মানবিক সাহায্যের বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া এসব খবর বেশ ফলাও করে প্রকাশ করছে। প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক মিডিয়া সিএনএন ও বিবিসি ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গা নির্যাতনের খবর প্রকাশ করছে যাচাই না করেই। এবং এধরনের সংবাদ মিয়ানমারের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

খিন অং তান আরও বলেন, পর্যটকরা জানতে চাচ্ছে মিয়ানমার সফর নিরাপদ কী না। আমরা তাদের বলছি রাখাইন অঞ্চলে মাত্র তিনটি শহর আক্রান্ত হয়েছে এ ধরনের সাম্প্রতিক অভিযানে। এছাড়া পুরো মিয়ানমার ভ্রমণ নিরাপদ।

ইয়াঙ্গুনের সেভেন ডেয়েস ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস কোম্পানির সেলস ম্যানেজার উ কং সিতু জার্মানির নাগরিকরা এখনো মিয়ানমার ভ্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। অনেক ট্রাভেল কোম্পানি ভ্রমণ বাতিল করছে।

খিরি ট্রাভেলের এ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার মি স্টিফেন শেরেয়ার জানান, রাখাইন অঞ্চলের সংকট মিয়ানমারের অন্য নিরাপদ অঞ্চলে পর্যটকদের ভ্রমণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ট্রাভেল অপারেটররা আশা করছেন পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে। তবে তা যদি দীর্ঘায়িত হত, অবশ্যই বিষয়টি পর্যটন খাত ছাড়াও মিয়ানমারের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে জানান খিন অং তান।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে প্রায় ৪ লাখ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে আগুন, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তা গণহত্যা বলে মিয়ানমারের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশটির অং সাং সুচি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।



Sunday, September 17, 2017

ঢাকায় যারা আছেন সাবধান… বিস্তারিত পড়ুন এবং সাবধান হন

 ঢাকায় যারা আছেন সাবধান – ১। ফার্মগেটে হঠাৎ দেখতে পেলেন, কতগুলো মানুষ একজন মানুষ কে মেরে রক্তাত্ত করে চলেছে আর সে আপনাকে বলছে ভাই, সাহায্য করেন। আপনি দয়া দেখাতে গিয়ে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলেই বিপদ হতে পারে। ওরা আপনাকে মেরে সব কিছু নিয়ে যেতে পারে, কারণ তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।

২। ওভার ব্রিজ এর উপর মহিলা কাঁদছে যে, সে যার সাথে দেখা করবে তার মোবাইলে কল দিতে হবে কিন্তু তার কাছে টাকা নেই। বলবে আপনার মোবাইল দিয়ে সেই লোকের নাম্বারে মিসকল দিলেও সে ব্যাক করবে। আপনি কল দিলেন তো ফাঁদে পড়লেন। ওরা নিরীহ মানুষ দেখে তাদের নম্বর সংগ্রহ করে ও পরবর্তীতে সেই নাম্বারে কল করে লোভনীয় প্রস্তাব দেয়, রাজী হলে আপনাকে তাদের আস্তানাতে নিয়ে ব্লাক মেইল করবে।

৩। শাহবাগ, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী জ্যামে আটকে আছেন, নানা ধরণের লিফলেট যেমনঃ দুর্বলতা,রোগে, নানা লোভে আপনাকে ফাঁদে ফেলার ব্যবস্থা। এমন বলে যে রুম ডেট এর ব্যবস্থা আছে।

৪। রাস্তায় সুন্দর চোখ এর বোরকা আলি আপনার সাথে কথা বলতে চায়, প্রেমের প্রস্তাব নয়, কিন্তু ইসারা, যে আপনি ভাববেন একটু চেষ্টা করলে কাছে পাবেন, যদি তাই ভাবেন তবে ধরা পড়ার সম্ভাবনা শতভাগ। আপনাকে তাদের আস্তানায় নিবে, তারপর আর কিছু আপনার করা লাগবে না। সব হারাবেন। মেয়ে দিয়ে ব্লাক মেইল করবে।

৫। গাবতলি, সায়েদাবাদ, কিংবা সদরঘাট , মাওয়া, আরিচা, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বসে আছেন, দেখলেন যে বাইরে তাস, লুডু ইত্যাদি খেলছে, কাছে গেলেন কি ফেঁসে গেলেন।

৬। যাত্রাপথে অপরিচিত লোক এর সাথে মতবিনিময় করবেন খুবই কম। আপনি যে স্থানে যাবেন সে স্থান যেন আপনার পরিচিত।

৭। রেলগাড়ির ছাঁদে চলাচল করা থেকে বিরত থাকবেন, কারণ এক দল ছেলে পাওয়া যায়, যারা রেলের ছাদের উপর থেকে ছিনতাই করে ছাদ থাকে ফেলে দেয়।

৮। লঞ্চ এ কম যাত্রী থাকলে উঠবেন না।

৯। যারা দ্রুত যাতায়াত এর জন্য স্পীড বোট এ যাতায়াত করবেন তারা টাকা বা মুল্যবান কিছু সাথে নিবেন না। কারণ দেখা গিয়েছে যে, এক দল আছে যারা বোট ছাড়ার পর নির্জন স্থানে বোট ভিড়িয়ে ছিনতাই করে আপনাকে নামিয়ে দিতে পারে।

১০। হেঁটে যেতে হলে বিভিন্ন বাসের মাঝখান দিয়ে যাওয়া অনুচিত কারণ নেশাখোর ওঁত পেতে থাকে ছিনতাই এর জন্য।








প্রেমের কারণে গোসল করেননি ৬০ বছর, বিস্তারিত পড়ুন

চরম গরম আবহাওয়ার মধ্যে থেকেও টানা ৬০ বছর গোসল করেননি। তবু তিনি দিব্যি আছেন। কী বিশ্বাস হচ্ছে না তো। এমন ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ইরানে।

দক্ষিণ ইরানের একটি গ্রামের বাসিন্দা আমু হাজি-র। বয়স ৮০ ছুঁয়েছে। সে গেলো ৬০ বছর ধরে গোসল করা বন্ধ করে দিয়েছে। বেঁচে চলেছে এক অদ্ভুত জীবন। কিন্তু কেন এমন জীবন বেছে নিয়েছে মানুষটা?

একা একা থাকতে থাকতে একাকীত্বের সঙ্গে লড়াইটা আমু জিতে গেছে ঠিকই। কিন্তু মাঝে মাঝে সাপের বিষের মতো একা থাকার কষ্টটা কেমন যেন রক্তে মিশতে থাকে ৮০ বছরের বৃদ্ধের। তখন মাথা ঠিক থাকে না। মনে হয় একটু ধূমপান করলে ভালো হত। সে সময় আমু ধূমপান করে। বাতাসকে ভারি করে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয় ধোঁয়ার জাল। তবে তিনি তামাক দিয়ে ধূমপান না করে তার পছন্দ প্রাণীদের শুকিয়ে যাওয়া বিষ্ঠা দিয়ে ধূমপান করেন। এমন জিনিস দিয়ে নেশা করলে নাকি দারুণ আমেজ তৈরি হয় বলে দাবি এই আজব মানুষটির।

আমু হাজি-র হঠাৎ একদিন মনে হয়েছিল গোসল করলে নাকি সে অসুস্থ হয়ে যাবে। তাই সে ২০ বছরের পর থেকে গায়ে পানি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। শুধু তাই নয় তার খাওয়া-দাওয়াও সাধারণ মানুষদের মতো নয়।

আমু খিদে পেলে ভাত-রুটি খায় না তার প্রথম পছন্দ পচে যাওয়া সজারু। আর এমনটা সে ১-২ বছর নয় টানা ৬০ বছর ধরে খেয়ে আসছে। যখন তার দাঁড়ি অনেকটাই বড় হয়ে যায় তখন অতিরিক্ত অংশটা কেটে না ফেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিতেই সে ভালবাসে। তবে কেন করেন এমনটা? এই প্রশ্নের উত্তর একবার আমু জানিয়েছিল, স্নান না করলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে সবসময়ই তার মন চায়। তাই তো সে এমনটা করে থাকে।

তবে যে গ্রামে আমুর ২০ বছর কেটেছে সেই গ্রামের বাসিন্দারা জানায় আমু প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর পরই একটি মেয়েকে খুব ভালবেসে ফেলেছিল। কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাসে সেই মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে যায়। সেই যন্ত্রণায় সারা জীবন একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন আমু হাজি। সেই থেকেই তার বাস জঙ্গলে জঙ্গলে। বন্ধ গোসল খাওয়া-দাওয়া।

তবে ডাক্তাররা ভেবেছিলে নোংরাভাবে থাকতে থাকতে, নোংরা খাবার এবং পানি খেতে খেতে আমুর শরীরটা নিশ্চয় বিষাক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আজব ব্যাপার, বাস্তবে এমনটা হয়নি। ওই চিকিৎসক আমুর শরীর পরীক্ষা করে দেখেন এত অত্যাচারের পরেও তার শরীরে কোনো রোগ বাসা বাঁধেনি। শুধু তাই নয়, সবদিক থেকে মানুষটা বেজায় সুস্থও আছেন। কিভাবে যে এমনটা সম্ভব হল, সে উত্তর আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি।

এদিকে আমু জানান, এমন জীবনে তিনি খুব খুশি। তার মতে, যারা বড় বড় অট্টালিকায় থাকে তাদের অনেক কিছু হারানোর ভয় থাকে। তার কাছে কিছু নেই হারানোর মতো, যা ছিল তা অনেক আগেই সে হারিয়ে ফলেছে। তাই এই পৃথিবীতে তার থেকে খুশি মানুষ আর দ্বিতীয় কেউ নেই।



Saturday, September 16, 2017

দুদিন বাদে বিয়ে।আমি তোমায় ছাড়া বাঁচবোনা রফি।

-রফি আমায় বিয়ের জন্য বাসা থেকে চাপ দিচ্ছে।
-বাসায় আমাদের রিলেশনের কথা জানিয়ে দাও।
-তুমি এখনো কোনো জব করোনা।আব্বু কখনোই আমায় তোমার হাতে তুলে দিবেনা।
-চেষ্টা করে যাচ্ছিতো।বলে দেখো যদি আমায় কিছুটা সময় দিতে রাজি হয়।
-আচ্ছা
-হুম,আমিও আমার বাসায় জানাচ্ছি।এবার যা হবার হবে।
-বাদ দাও,তোমার দাড়ি কত্ত বড় হয়ে গিয়েছে,কাল একদম ক্লিন সেভ হবা।
-শর্ত আছে
-কি শর্ত
-তবে এখন একটা পাপ্পি দাও
-হিহিহি
.
মিমের সাথে পাঁচ বছরের রিলেশন।
এই পাঁচ বছরে দুজন দুজনের মাঝে মিশে গিয়েছি।
*
অনার্স পাশ করেও কোনো চাকরী যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়েছি।
এই যুগে যে টাকা আর মামা-খালু ছাড়া দামী সার্টিফিকেটও দুষ্কর।
এদিকে মিমকে হারানোর ভয় মনের মাঝে প্রতিটা সময় বিরাজ করছে।
উপায়হীন হয়ে বাসায় জানাতে বাধ্য হলাম।
আব্বু-আম্মু তাতে কিছুতেই সম্মতি জানালেন না।
মিমের কাছ হতে জানতে পারলাম তারো একি অবস্থা।
সেদিন খুব অসহায় লাগছিলো নিজেকে।
এই কি ভালবাসার পরিণতি!দুটি নিষ্পাপ মনের ভালবাসার কি কোনো দাম নেই!
*
সকালে ঘুমিয়ে আছি।৮টায় মিম কখনো ফোন দেয়না।
হয়তো তাঁর জানা,এই সময়টা আমি ঘুমাতে পছন্দ করি।
কিন্তু স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কিছুটা অবাক হলাম,মিম ফোন দিয়েছে।
-হ্যালো মিম
-রফি প্লিজ আমার সাথে আজ এখনি দেখা করো[কান্না জড়িত কন্ঠে]
-ক্যানো কি হয়েছে!সব ঠিক আছেতো?
-কিচ্ছু ঠিক নেই,তাড়াতাড়ি সেই বট গাছটার ওখানে আসো।
-আচ্ছা আমি আসছি।
.
আর কিছু না ভেবে কোনো রকম ফ্রেস হয়ে রওনা দিলাম।
যেতে মুটামাটি ১০মিনিট লেগে গেলো।
মিম আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে:
-রফি আব্বু আমাদের রিলেশনের কথা শুনে আমার সাথে আব্বুর এক ফ্রেন্ডের ছেলের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
প্লিজ আমায় তোমার সাথে নিয়ে চলো[কান্নার কন্ঠে]
-তুমি চিন্তা করোনা।আমি দেখি কিছু টাকা জোগাড় করে কালকেই দুজনে কোথাও চলে যাবো
-সত্যি তো
-হুম
*
সেদিন কথা রাখতে ব্যর্থ হই।
বেকারত্ব আর ভাগ্যের খেলায় অল্প কিছু টাকা জোগাড় করতে পেরেছিলাম।
যেটা দিয়ে হয়তো কাজী অফিসে দুজনের বিয়েটা সম্পূর্ণ করাও সম্ভব হতোনা।
.
চির চেনা বট সেই গাছটার নিচে বসে নিকোটিনের ধোয়াই বুকের পাজড়কে জ্বালিয়ে দিচ্ছি।
আর কল্পনায় ভাবছি,মিম হয়তো এখন বিয়ে নিয়ে কতোইনা ব্যস্ত!
কিন্তু সব কল্পনা মনের ভ্রম ভেঙে মিম দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো।
-তুমি এখানে ক্যানো
-তুমি ভাবলে কি করে,আমি তোমায় ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো
-জানি,কিন্তু এখন কি হবে
-মৃত্যু
-মানে
-দুজনে এক সাথে বাঁচতে না পারলেও,মরতে তো পারবো
*
সেটা আবেগ নাকি ভালবাসা আমার অজানা।
তবে দুজনেই বিষ পান করি।
ভেবেছিলাম সব শেষ।
নাহ্ আসলে কিছুই শেষ হয়নি।
ভালবাসা হোক বা ভাগ্য কিছু একটার টানে দুজন সেদিন বেঁচে যাই।
.
বিষ পান কড়ার পর সেখানকার কিছু লোক অবস্থাটা বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায়।
আমাদের দুজনেরি বাসার লোক খবর পেয়ে ছুটে আসে।
পেরেছিলাম সেদিন ভালবাসাকে জয় করতে।
সমাজ,জাত-পাত,ধর্ম সব কিছুকে উপেক্ষা করে মিমকে নিজের করে পেতে।
দুজনের পরিবারি অবশেষ হার মেনেই নেয়।
.
কিন্তু এখানেই সব শেষ হলে হয়তো অজানাই রয়ে যেতো ভালবাসার পরিণতি।
আমার বেকারত্বের কারণে উভয়ের পরিবার থেকেই সিদ্ধান্ত নেয় আমায় বিদেশে পাঠানোর।
বিবাহিত জিবনের সবেমাত্র ৫মাস বয়স।
এখনি মিমকে ছেড়ে দূরে থাকতে হবে,ভাবতেই বুকের মাঝটা কেঁপে ওঠে।
কিন্তু আবারো সমাজের কাছে পরাজিত হই।
মিমকে দেশে রেখেই পা বাড়াতে হয় বিদেশের উদ্দেশ্যে।
এয়ারপোর্টে মিম জড়িয়ে ধরে কতোই না কান্না।
একদম বাচ্চা মেয়ের মতন।
আমিও ফেলেছিলাম দু-ফোটা চোখের পানি।
তবে সেটা আড়ালে।
.
বিদেশে এসে ৪মাসে মুটামাটি সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি।
এরি মাঝে বাড়ি দুবার টাকাও পাঠিয়েছি।
এবং মিমের সাথে কথা বলতে একটি এন্ড্রয়েড ফোনো পাঠিয়ে দিই।
প্রতি তিন দিনে কাজের ফাকে একবার করে কথা হতো।
হাজার মাইল দূরত্বের মাঝেও আমাদের ভালবাসায় কোনো কমতি ছিলোনা।
দেখতে দেখতে কেটে গেলো দুটি বছর।
এখন বাড়ি যাবার পালা।
মিমকে জানাতেই সেকি খুশি।
আমিও এক অন্যরকম ভালোলাগা নিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
মনের মাঝে সবার জন্য কত্ত কথা জমে আছে সেটা শুধু এই মনটাই জানে।
.
এয়ারপোর্টে নেমে কিছুটা আবাক হলাম।আব্বু-আম্মু কাকা-কাকী সবাই এসেছে শুধু মিম আসেনি।
-আম্মু মিম আসেনি?
-নাহ্,ও বললো তোর জন্য আজ খুব স্পেশাল রান্না করবে।তাই বাড়ি থেকে গেছে।
-একা বাসায়?
-হুম।
-ধ্যাত একা রেখে আসতে গেলে ক্যানো!
-আরে সমস্যা নেই।বুঝিতো!বাসায় গেলেই দেখতে পাবি।
*
বাসায় এসেই অবাক,ঘর খোলা।
মিম বলে ডাক দিয়েও কোনো সাড়া পেলাম না।
প্রতিটা ঘর খুঁজলাম,কিন্তু মিম কোথাও নেই।
আম্মু বললো হয়তো পাশের বাসায় গেছে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে কোথাও পেলাম না।
থানায় মিসিং কম্পেলেন করলাম।
দুই দিন কেটে যায় তিন দিন কেটে যায় চার দিন কেটে যায় মিম আরে ফিরে আসেনা।
আমার সবটা চেষ্টা দিয়েও খুঁজে পেলাম না।
.
কেটে গেলো চারাটি মাস।
সারাদিন মিমের ভাবনায়ি পরে থাকি।
মন বলছিলো মিম হয়তো একদিন পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে বলবে রফি আমি চলে এসেছি।
কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠলোনা।
সবাই ধরে নিয়েছে মিমকে কেউ কিডন্যাপ করে মেরে ফেলেছে।
সময়ের সাথে আমিও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি।
.
বিকেলে নদীর ধার দিয়ে হাঁটছি আর পুরোনো দিনগুলো ভাবছি।
এই নদীর ধারে কতোইনা মিমের হাতে হাত রেখে স্রতের সাথে ঢেউএর খেলা দেখেছি।
মিম পাশে থাকলে হয়তো আজো আগের মতন করেই দিনটা ফিরে পেতে পারতাম।
হঠাত ফোনটা বেজে উঠলো।
স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বুকের বাম-পাশটা দুমড়ে-মুচড়ে গেলো।
-মিম কোথায় তুমি?ভালো আছো তো?তোমার কিছু হয়নিতো?
-এত্ত কিছু বাদ দাও,আমার ডিভোর্স চাই।
-মা...মানে।মিম কোথায় তুমি একবার বলো প্লিজ।
-সময় হলে বলবো।আমি এখন রিহানকে ভালবাসি,আর তাকেই বিয়ে করবো।তোমার ডিভোর্সের অপেক্ষায় শুধুমাত্র সম্ভব হচ্ছেনা।
-কি বলছো এগুলো
-তুমি বিদেশ যাবার পর কিভাবে যেন রিহানের সাথে জড়িয়ে যাই।আস্তে আস্তে অনেকটাই ভালবেসে ফেলি রিহানকে।যেদিন তুমি বিদেশ থেকে ফিরে আসবে সেদিন আমি ইচ্ছে করেই এয়ারপোর্টে যাইনি।প্লান অনুযায়ী রিহানের সাথে পালিয়ে যাই।কিন্তু আমরা এখনো বিয়ে করতে পারিনি।প্লিজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভাব আমায় মুক্তি দাও।
*
সেদিন বুকের মাঝে হাজারো অভিমান বিরাজ করেছিলো।
বুঝতে পারিনি এ নিয়তির কোন খেলা।
অশ্রু ভেজা চোখে মিমকে আমার থেকে মুক্তি দিয়ে দিই।
মনের মাঝে তখন প্রশ্নের ছড়া ছড়ি।
তবুও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি মিম যেখানেই থাকুক যেভাবেই থাকুক ভালো থাকুক।
<আব্বু-আম্মুর সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিলে,
হয়তো জিবনের গল্পটা এমন হতোনা।>
-Bristipatuiary  (collect

মেয়ে যখন বড় হয় তখন বাবা মায়ের চিন্তার অন্ত থাকেনা।

মেয়েটি তার প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাবার। সময় ছোট একটি চিরকুটে লিখেছিল, "বাবা অামাকে ক্ষমা করে দিও।"
মেয়েটির বাবা সেদিন তার মেয়েকে ক্ষমা করতে পারেনি। বাচ্চাদের মত উঠানে বিলাপ করে কেঁদেছিল। প্রলাপ করে প্রায়ই বলত, অামার মেয়েটা একটিবার অামার কথা ভাবলনা।"
.
লোকটির নাম মাসুদুর রহমান। নরসিংদী ইউ, এম, সি জুট মিলস এ কাজ করে। মাসুদুর রহমানের স্ত্রী নরসিংদী সদর হাসপাতালে মেয়েটিকে জন্ম দেয়ার সময় মারা যায়। 
এলাকার মানুষ খুব করে বলত, "অাবার একটা বিয়ে করো, সারাটা জীবন পড়ে অাছে।"
মাসুদুর রহমান মেয়েটিকে কোলে নিয়ে বলত, "অামার মেয়েটাই অামার সারা জীবনের সুখ। সুখীই অামার সুখ। "
সেই থেকে মেয়েটির নামই "সুখী"
মাসুদুর রহমান যখন কাজে চলে যেতেন তখন সুখীকে তার দাদীর কাছে রেখে যেতেন। কাজ থেকে ফিরে সারাক্ষন মেয়েকে নিয়ে সময় কাটাতেন। রাতে বুকে নিয়ে মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। সে সুখী অাজ কত বড় হয়ে গেছে। বাবার কথা একটিবার ভাবার প্রয়োজন মনে করলনা। 
.
মেয়ে যখন বড় হয় তখন বাবা মায়ের চিন্তার অন্ত থাকেনা। সুখী যখন হাইস্কুল পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হল। তখন থেকেই মাসুদুর রহমান মনে মনে একটি যোগ্য পাত্রের সন্ধান করছিলেন। মেয়েটিকে তিনি সুখী দেখতে চান। 
.
যখন ভাল একটি পাত্রের সন্ধান পেলেন তখন গতকাল সুখীকে মাসুদুর রহমান বলেছিলেন, "অামার মেয়েটা অনেক বড় হয়ে গেছে। পরের ঘরে যাবার সময় হয়েছে। মা'রে শুক্রবার তোকে পাত্রপক্ষ দেখতে অাসবে" 
তখন সুখীর চেহারাটা দুঃখী দুঃখী ভাব ছিল। মাসুদ ভেবেছিল তাকে ছেড়ে যেতে কষ্ট হবে তাই হয়তো মেয়েটার মন খারাপ। কিন্তু সকালে উঠে অার সুখীকে পেলোনা। মাসুদকে একা রেখে তার মেয়ে নিজের সুখ খুঁজতে চলে গেল। 
.
প্রতিবেশীরাও বলতেছে, "অাগেই বলেছিলাম মা মরা মেয়েটার জন্য হলেও একটা বিয়ে করো। মা ছাড়া মেয়েরা এমনই হয়"
মাসুদ রাতের অন্ধকারে সুখী সুখী বলে কান্না করত। অার প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করে বলত, "এমন মেয়ের জন্যও কেউ চোখের জল ফেলে?
.
. চার বছর পরের কথা। মাসুদ অনেক অসুস্থ। বলা চলে জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মাসুদের মা বুড়া মানুষ হয়েও এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে ডাক্তার দেখাইত। মাসুদ বলত, "মা অযথা চেষ্টা করছ। অামার দিন অার বেশী নেই। সুখীকে একবার দেখে যেতে পারলে শান্তি পেতাম। "
মাসুদের বাবা নেই। বুড়া মা অার কতটুকু দৌড়াতে পারে এদিক সেদিক? প্রতিবেশীরা একদিন অাসলে দ্বিতীয়দিন অার অাসেনা। এমনি করে মাসুদ জীবন অার মৃত্যুর মাঝখানে শুয়ে অাছে। কখন জানি মায়ার এই পৃথিবী ছাড়তে হয়। 
.
মাসুদের মা মাসুদের কানের কাছে এসে বলল, "মাসুদ তোর মেয়ে এসেছে। সুখী এসেছে তোকে দেখতে। "
মাসুদ উঠার চেষ্টা করেও অার পারলনা। সুখী দৌড়ে এসে মাসুদের পায়ে ধরে কান্না করতেছে অার বলতেছে, "বাবা অামাকে তুমি ক্ষমা করোনি, তাই অামি সুখী হইনি"
সুখীর পিছনে তার তিন বছরের ছেলে। মাসুদ একবার নাতিটাকে দেখে নিল। তারপর বলতে লাগল, "মা'রে অামি তোকে ক্ষমা করে দিয়েছি। তোকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল শেষবারের মত। অাল্লাহ অামার দোয়া কবুল করেছেন। 
.
সুখী চোখের পানিতে বাবার পা ভিজাচ্ছে অার বলতেছে, 
বাবা অামি পালিয়ে গিয়ে সুখী হতে পারিনি। অামার স্বামী বিয়ের দেড় বছর পর থেকে প্রচন্ড নেশা করত। অামি কিছু বললে অামাকে মারধোর করত। গতকাল এত মারছে যে অার সহ্য করতে পারিনি। ছেলেটাকে সাথে করে নিয়ে চলে এসেছি। অামাকে জায়গা দিবানা বাবা? ''
মাসুদ মুচকি হাসি দিয়ে বলল, বাবা মা তাদের অাটটা দশটা ছেলে মেয়েকে জায়গা দিতে পারে অার অামি তোকে জায়গা দিতে পারবনা?
.
পরেরদিন সুখী বাবার হাত ধরে বলতেছে, "বাবা, তুমি অনেক অসুস্থ। তার উপর অামি এসে জুুটেছি। কিভাবে সংসার চলবে? কিভাবে বাকি দিনগুলো যাবে?
মাসুদ মুখে মৃদু হাসির রেখা টেনে বলতেছে, "অামি মরে গেলে তোর বাকি জীবন সুখেই কাটবে। জুট মিলস থেকে অনেকগুলো টাকা পাবি। অামি সবকিছু তোর নামেই করেছি। সুখী মা, তুইতো অামার সুখরে"
.
সুখী তার ছেলেটাকে বুকে নিয়ে বোবার মত স্তব্ধ হয়ে গেছে। চোখে কোন পানি নেই। মাসুদকে বড়ই পাতার গরম জলে শেষ গোসল দিচ্ছে। 
"সুখী সুখ পেল কিনা জানা নেই, মাসুদ তার মেয়েটিকে নিয়ে সুখী হতে চেয়েছিল।"

Wednesday, September 13, 2017

আমি নীলাকে বিয়ে করেছিলাম।যদিও পারিবারিক ভাবে বিয়েটা হয়।

আমি নীলাকে বিয়ে করেছিলাম।যদিও পারিবারিক ভাবে বিয়েটা হয়।আসলে আমাদের মাঝে বিয়ের আগেই সম্পর্ক ছিলো।তবে সেটা ফেসবুকের মেসেনজারের টুংটাং শব্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো।বাস্তবে দেখা হয়নি।কথা হয়নি ফোনেও।নিশ্চয় ভাবছেন গাজাখুরি গল্প।আসলে সত্যিই বিয়ের আগে কোন ভাবেই আমাদের কথা হয়নি।নীলার নিজেস্ব ফোন ছিলো না।বাসার ফোনে ফেসবুকিং করতো।বড় ভাইয়ার ভয়ে ফোন নম্বর দিতো না।ফোনে কথা বলতে গিয়ে যদি ধরা খেয়ে যায়।তখন যদি আবার সারা জীবনের জন্য আমাকে হারিয়ে ফেলতে হয়।
ভালোবাসতো অনেক।তাই হারানোর কথা চিন্তাই করতে পারে না।
,,
ভালোতো আমি বাসতাম।তা না হলে কি কথা না বলে,অপরিচিতো একটা মেয়ের জন্য সারাক্ষণ বিভোর থাকতাম?ওকে পাওয়ার জন্য নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দৃড় চেষ্টা করতাম!
জানিনা!এসব পাগলামী হয়তো।তবুও দিনগুলো হাজারো ব্যস্ততায় কাটালেও,রাতগুলো যেন স্থীর হয়ে গেছিলো আমার জন্য।মনের মাঝে অচিন পাখি কুটির তুলে।কুটিরের আঙিনায় সারাক্ষণ বিচরণ করে।
রাতের অন্ধকার কেটে যায়,কিন্তু সে পাখি রয়ে যায় কুটিরে।এ পাখিরে কি অতিথি ভাবা যায়?
আমি ভাবতে পারিনি।হয়তো আবেগ বেশি ছিল!কিন্তু ভালোবাসাটা খাঁটি।
,,
সেদিন যখন বিয়াল্লিশটি ভাষায় নীলাকে প্রপোজ করেছিলাম অডিও ক্লিপ এর মাধ্যমে।সেদিন আমি সাড়ে ছয়শ কিলোমিটার দূরে থেকেও নীলার জল টলমলে চোখে ভালোবাসা অনুভব করেছিলাম।কিন্তু আজ চাইলেও ঐ আইডির মেসেনজারে হাজারো মেসেজ পাঠিয়ে একটা রিপ্লে আসেনা।
,,
আমি অবাক হয়েছিলাম সেদিন,যেদিন হাজারো বাধা পেরিয়ে ও আমাকে বিয়ে করে।
সেদিনই আমি দেখেছিলাম ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পেতে একজন মেয়ে কতোটা সংগ্রাম করতে পারে।
আর আজ ওসব সৃতি ডুকরে কাঁদায়।
,,
যখন বাসর ঘরে ঢুকি,আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না।সেদিন ও আমাকে বলেছিলো, 'এই বুকের খালি জায়গাটা কি আমাকে দিবেন সারা জীবনের জন্য?'
আমি চুপ করে ছিলাম।ওর কান্নায় আমিও কাঁদছিলাম।বলতে পারিনি এই বুকটা যে শুধু তোমারি পাগলী।
,,
ভালোবেসে বিয়ে করে নাকি সুখি হওয়া যায় না।কিন্তু আমার নীলাকে নিয়ে আমি খুব সুখি ছিলাম।ভোর বেলা জাগিয়ে তুলতো ফযর নামাজটা এক সাথেই পড়তে হতো প্রতিদিন।যখন সকাল সকাল অফিসে যাওয়ার জন্য বের হতাম,তখন নীল শার্টে লাল টাইটা ঐ বেঁধে দিয়ে কপালে একটা মিষ্টি চুমু এঁকে দিতো।খাবারের টিফিন টা দিতো কখনো ভুল করতো না।ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে যখন দুপুর ০১:০০pm এ থামে,ঠিক তখনি ফোন করে যহর নামাজের কথা স্বরণ করে দিতো।
,,
দীর্ঘ্য ৮ ঘন্টা পর যখন বাড়ি ফিরতাম ব্যস্ত হয়ে,সূর্য তখন চাঁদকে ডাকে।আর আমার নীলা রান্না শেষ করে বাড়ির উঠোন ঝাড়ু দিয়ে,আমার জন্য নাস্তা নিয়ে অপেক্ষা করতো।আমি আসতাম খুব বিরক্ত হতাম।মাঝে মাঝে ওকে প্রচন্ড রাগ দেখাতাম।কিন্তু ও!ও ছিলো একেবারে ভিন্ন রকম।ও আমার রাগে পাত্তা না দিয়ে আমার শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করতো।আমি বারবার ওর ভালোবাসার কাছে হার মানতাম।কিন্তু আমিতো কম ভালোবাসতাম না।
,,
একদিন আমি ওকে দুষ্টামী করে কাছি ডাকি একটা গোপন কথা বলার জন্য।কানটা আমার মুখের খুব কাছে আনতে বলি।আমার কাছে আনতেই ওর গালে একটা মিষ্টি চুমু দেই।আমার দেওয়া প্রথম চুমু।সেদিন আমি নীলার চোখে মুখে সুখ দেখেছিলাম।এই ছোট্ট একটি কাজে সে যে কি খুশি হয়েছিল আজ বোঝাতে পারবো না।এই অবুঝ মেয়েগুলো ছোট ছোট ভালোবাসাগুলো আকড়ে নিয়ে নিজেদের পৃথিবীতে সব থেকে সুখি মনে করি।এটা নীলার কাছেই বুঝে ছিলাম।
,,
আমাদের বাড়িটা গ্রামেই ছিল।চারদিকে সবুজে ঘেরা মাঝে ইট সিমেন্টে তৈরি একটা টিনের চালার সাজানো গুছানো বাড়ি।সে বাড়িতে বাবা মা,ভাইয়া ভাবী,নীলা,ছোট্ট একটা ভাজতি।অনেক সুখের সংসার ছিল আমাদের।
,,
আমার এখনো মনে আছে,বিয়ের কয়েক মাস পরেই আষাঢ় মাস আসে।সেদিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো।টিনের চালার ঝুমঝুম বৃষ্টি দেখে তোমার সে কি ছেলে মানুষী।তুমিতো আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছিলে।
আচ্ছা নীলা এখন যেখানে আছো,সেখানে কি বৃষ্টি হয়?তুমি কি সেখানেও বৃষ্টিতে ছেলে মানুষী করো?
,,
তোমার মনে আছে নীলা?তুমি যেদিন আমার কাছে একটা বেবি চাইছিলে।আমি তোমাকে এক বছর অপেক্ষা করতে বলেছিলাম।কিন্তু তুমি এক মহূর্ত অপেক্ষা করতে রাজি ছিলে না।একদম পাগলী ছিলে তুমি।তোমার পাগলামোতে আমি রাগ করে গালি দিলেও আমার ভালোই লাগতো।আমি অবাক হতাম তুমি আমার পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষকে কিভাবে এতো ভালোবাসতে?তুমিতো সবার মন জয় করেছিলে।
তুমি পারতেও ভাই।
আমি আমার জীবনে আমার বড় আপুকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি।কিন্তু তুমি এসে আমাকে হার মানালে।আমার বোন কিন্তু আমার কাছে থেকে আমার বোনের কমল মনটা তুমি চুরি করে নিলে।তোমার জন্য আপুও মাঝে মাঝে কাঁদে।আমি বুঝতাম না যে চোখে জল দেখিনি সে চোখে জল আসে কোথা থেকে?!
,,
তোমার গর্ভে যখন একটা অস্তিত্ত্ব টের পেলে।সে আমাদের সন্তান হবে।আমরা ওকে কোলে নেবো,ওকে দোলনায় দোলাবো।অনেক অনেক স্বপ্ন।সে বোকা অস্তিত্ত্বহীন স্বপ্ন আজ ছোট বাচ্চাদেরকেও হার মানায়।
যখন তোমার ভাইয়াকে ফোন করে বললে যে আমাদের সন্তান পৃথিবীতে আসবে।আমার মনে হয় তোমার ভাইয়া খুশিতে লাফাচ্ছিলো।তা না হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হতেই বাবুর জন্য তিন বস্তা কাপড় নিয়ে এতো দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আসতো না।
তোমার ভাইয়া সেদিন তোমাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তোমাদের বাড়িতে।কিন্তু আমি হতোভাগা আমার বাচ্চার কথা চিন্তা করে যেতে দেয়নি গর্ভাবস্থায়।
,,
যেদিন তোমার খুব প্রসব বেদনা।সাথে সাথেই তোমার ভাইয়াকে ফোন দিয়েছিলাম।
আর তুমি ভয়ে আমার হাত দুটো জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলে অঝরে।তুমি বলছিলে ওগো যদি আমি না থাকি তবে কে এই বুকে কাউকে যায়গা দিবেনাতো?
আমারো কান্না পেয়েছিলো।প্রচুর কেঁদেছিলামও।আমার মা আর তুমি হাসপাতালে যেতে রাজি হওনি কাঁটার ভয়ে।মা তোমাকে ভীষণ ভালোবাসতো।
কিন্তু তোমার বেদনার কান্নায় আমার বুকটা চিরে যাচ্ছিল।
,,
মা যখন ঘর থেকে বের হয়ে চিৎকার করে বললো তুমি আর পৃথিবীতে নেই।মা বেহুশ হয়ে বারান্দায় পড়ে গেছিলো।আর বোবা আমি তোমার কাছে গিয়ে তোমাকে ডাকতে শুরু করলাম নীলা,,,,নীলা........!
তোমার পাশে একটা ফুটফুটে বাচ্চাও কাঁদছিলো।কিন্তু আমার তো তোমাকেই প্রয়োজন ছিলো।কেনো এমন হলো বলতে পারো?
তোমার ভাইয়া আসে।খুব গালি দেয় আমায়।গালি দেওয়ারি কথা তোমাকে হাসপাতালে নেইনি।আসলে এটাই কি বড় ভুল ছিল?তোমার ভাইয়া সেদিনই চলে যায়।
,,
আজ প্রিয়ন্তির দ্বিতীয় জন্মদিন।তোমাকে ভীষণ মনে পড়ছে।এতোটুক একটা বাচ্চা আমার কষ্টগুলো একদম তোমার মতো করে বুঝে।কি সুন্দর করে কথা বলে।তোমার মতো সবা মন জয় করেছে তোমার মেয়ে।হাসলে একদম দু গালে তোমার মতো টোল পড়ে।
কিন্তু তুমি নেই।
এই একটা শূণ্যতা আমাকে সব সময় তাড়িয়ে বেড়ায়।
মেসেনজারে মেসেজগুলো দেখার কেউ নেই।কিন্তু মেসেজ পাঠাতে আজ একটুও বিরক্তি নেই।খালি বুকটার সাথে ভালোবাটা আজও আছে একি রকম।
,,,
লিখা-মোঃএকরামুল হক আবির

বাব্বা আপনি আবার রাগও করতে পারেন।সবসময় তো দেখি চশমা চোখে, মাথা নিচু করেই হাটেন

'-এই যে?
-জি বলুন।
-আপনি রাতে ঘুমান না?
-মানে কি?
-মানে হচ্ছে, এই যে প্রতিদিন ক্যাম্পাসে টলতে টলতে আসেন ;নিশ্চয় রাতে ঘুমানো হয়না মনে হয়?
-তা শুনে আপনার কি,আমি কি আপনাকে চিনি নাকি যে আপনাকে বলব!
-চেনার দরকার নেই, তবুও বলুন।
-আপু আপনি কে বলুনতো?সেই তখন থেকে প্যাচাল পেরে যাচ্ছেন।
-বাব্বা আপনি আবার রাগও করতে পারেন।সবসময় তো দেখি চশমা চোখে, মাথা নিচু করেই হাটেন।এই ভালো কথা আপনার সেই মোটা ফ্রেমের চশমা খানা কোথায়?আজ পড়েননি যে?
-ইচ্ছে হয়নি তাই পড়িনি।আপনার কোন সমস্যা? পাগল নাকি? এই বলে আমি হনহনিয়ে ক্লাসের দিকে পা বাড়ালাম।
একটু গিয়ে পেছন ফিরে দেখি মেয়েটি হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ছে আর আমাকে পেছন ঘুরতে দেখেই চিৎকার করে বলল মিস্টার আহান কালকে যেন চোখে চশমা দেখি?
এতক্ষনে আমি মেয়েটির দিকে ভালভাবে লক্ষ্য করলাম।সাদা চুড়িদারে শ্যামবর্নের মেয়েটিকে কোন পরির সাথে তুলনা করলেও ভুল হবে না।কি মায়াবী একটা মুখ। আমি আর অতকিছু না ভেবে ক্লাসে চলে গেলাম।
সমস্যা কিছুই ছিল না।কিন্তু সমস্যা বাধল রাতে আমি যখন পড়ার টেবিলে বসলাম তখন। কিছুতেই যেন পড়ায় মন দিতে পাড়ছিনা।চোখের সামনে শুধু সেই শ্যামবালিকার ছবি ভাসতে লাগল। আর তার সেই কথা কানে বাজতে লাগল,"মিস্টার আহান কালকে যেন চোখে চশমা দেখি!সে রাতে আর ঘুমই হোলোনা।
রাতে এত প্রতিজ্ঞা করলাম যে আমি কালকে চশমা পড়ব না।নিজেই নিজেকে বলতে লাগলাম কোথাকার কোন মেয়ে বলেছে তার জন্যে তার কথা আমাক শোনার লাগবে নাকি? কিন্তু পরের দিন ঠিকি আমাকে চশমা চোখে দেখা গেল।
-ক্লাসের পর লাইব্রেরির পেছনে বসে ফোন চাপছিলাম।হটাৎ পেছন থেকে কেউ একজন মাথায় টোকা দিল।মেজাজ পুরা ৪২০ ডিগ্রি এঙ্গেল এ খারাপ হয়ে গেল।পেছন ফিরে যেই বকা দিতে যাব অমনি দেখি কালকের সেই মেয়ে হাসি হাসি মুখ করে আমার দিকে চেয়ে আছে।ভাবছিলাম বকা দিব কিন্তু এই মেয়ের নিষ্পাপ হাসি দেখে আমার মুখ দিয়ে আর কথাই বের হচ্ছেনা, তার ওপর এই মেয়ে আবার আমার প্রিয় রং হলুদ কালারের চুড়িদার পড়ছে।আচ্ছা এই মেয়ের কি চুড়িদারের দোকান আছে নাকি?
-এই যে মশাই কি দেখেন অমন করে হু, বলে আমার চোখ থেকে চশমাটা খুলে নিল।আমার কথামত চশমা পড়ছ তাহলে?
-আমি কারো ইচ্ছায় চশমা পড়ি নাই।আমার ইচ্ছা হইছে তাই পড়ছি।আর আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেন?
-শোনো আজ থেকে আমরা বন্ধু। যদিও আমি তোমার এক ব্যাচ জুনিয়র কিন্তু আমরা তুমি করেই কথা বলব।অত আপনি আপনি করতে পারবোনা।
সেই সময়টা থেকেই ইরির সাথে বন্ধুত্ব, তখন থেকেই একসাথে ক্যাম্পাসের সোনালি সময় গুলো পার করা।তার সাজানো তুমি থেকে কবে যে আমরা তুই এ নেমেছি দুজনের কেঊ টের পাইনি।
এর মাঝে আমি একদিন তাকে জিজ্ঞেস করছিলাম যে সে প্রথমে কেন আমার সাথে এভাবে পরিচিত হয়েছে।তার ঊত্তর ছিল এরকম, গাধাদের অতকিছু জানতে হয়না।আমিও আর কিছু জানতে চাইনি।এভাবেই তিনটি বছর কেটে গেল।
'
--ইরি আমাকে মাঝেমাঝেই রান্না করে খাওয়ায়।আজকেও ক্যাাম্পাসে শিমুল তলায় বসে তার হাতের খিচুড়ি তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছি।
বুঝছোস ইরি, তোর হাতের খিচুড়ির সাথে আসলে কোন কিছুর তুলনা হয়না। দেখি মেয়েটা আমার দিকে ভেজা ভেজা চোখে তাকিয়ে আছে।আমি আর তাকে কিছু না বলে খাওয়ার দিকে নজর দিলাম।সেই সবে থেকেই দেখে আসতেছি আমার খাওয়ার সময় মেয়েটা অপলক আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
-আহান শোন, বাবা না আমার বিয়ে ঠিক করেছে?
-কথাটা শুনে বুকটা যেন ছ্যাত করে উঠল।তবুও কষ্টটা লুকিয়ে বললাম ভালোতোরে।বয়স তো আর কম হোলোনা।দিন দিন তো বুড়ি হয়ে যাচ্ছিস। এবার বিয়েটা করেই ফেল।
-তুই খুশি হয়েছিস?
-খুশি হবনা কেন;তোর বিয়ে বলে কথা আর তোর বিয়েতে আমিতো নাঁচব।
-এখন থেকেই নাচ তুই বলে সে উঠে গেল।আমি এত ডাকলাম তবুও সে একবার পেছন ফিরে তাকালো না।তবে আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম মেয়েটা হাত দিয়ে তার চোখের জল মুছল।
-আমি জানি ইরি আমাকে ভালোবাসে, আর আমি এটাও জানি ইরিও আমার প্রতিটা সত্তার সাথে মিশে গেছে।
কিন্তু কোন এক অজানা কারনে দুজন দুজনকে কিছুতেই মনের কথাগুলো বলতে পারিনা।
-রাতে ঘুমুতে গেলাম কিন্তু কিছুতেই দু চোখের পাতা এক করতে পারছিলামনা। শুধু ইরির সেই ছলছল চোখ মনে পরতে লাগল;যেই চোখের ভাষা আমাকে ছুতে চায়,যেই চোখ আমার কাছ থেকে কিছু শুনতে চায়।মনের মাঝে কি এক তোলপাড় শুরু হল।না,এই মেয়েকে ছাড়া আমার কিছুতেই চলবে না।তাকে আমি অন্যের হতে দিতে পারিনা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৯.৩৫ বাজে।১০ টা পর্যন্ত ইরিদের হল খোলা থাকবে।আমি আর কিছু না ভেবে ইরিদের হলের দিকে দৌড় দিলাম।সেখানে গিয়ে তাকে ফোন দিলাম।কিন্তু এই মেয়ে ফোন ধরে না কেনো?দ্বিতীয় বারে সে ফোন ধরে বলল.....
-হুহ,বল
-হু কি,ফোন ধরিসনা কেন?
-কি দরকার সেটা বল(গম্ভীর ভাবে)
-একটু তোর হলের নিচে আয় তো, আমি নিচে দাঁড়িয়ে আছি।
-মানে কি আহান?এই সময় কেন?আমি পারব না।
-আয় না প্লিজ!
- পারব না।
-ওপাশে ফোন কাটার শব্দ পেলাম।কিন্তু আমি জানি সে আসবে,তাকে আসতেই হবে।একটু পরেই আমার ধারনা প্রমাণিত করে তাকে মাথা নিচু করে আসতে দেখা গেল।এসেই বলল....
-কি,বল?
-কই এর আগে তো কখনও কিছু জানতে চাসনি।যখন যা করতে বলেছি তাই করেছিস।তবে অাজ কেন?
-সবসময় সবকিছু এক থাকেনা আহান।কি বলবি বল,দাড়োয়ান চাচা গেট বন্ধ করে দিবেন।
-ইরি শোন,তুই না এই বিয়েটা করিসনা।
-কেন করবোনা?
-কারন আমি তোর হাতের খিচুড়ি না খেয়ে থাকতে পারবোনা,তোকে ছাড়া থাকতে পারবোনা,তোকে অন্যের হতে দেখতে পারবোনা রে।
দেখি ইরি কেঁদে ফেলছে।এই ইরি কাঁদছিস কেন?
-সে কোন কথা না বলে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল হাদারাম,এই কথাটা বলতে তুই এতটাদিন সময় নিলি।তুই আসলেই একটা হাদারাম!কোথথাও বিয়ে করবোনা আমি।আমার সকল সুখতো তোকে ঘিরেই।
-এতক্ষনে বুজলাম আমার চোখ বেয়েও অশ্রুর ধারা নামা শুরু করছে।নামুক এই অশ্রু, মুছে নিয়ে যাক আমাদের দুজনের এতদিনের সকল অসারতা।
,
Parves Alam Shohag