ভালবাসার গল্প বাংলা love story bangla

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Wednesday, August 16, 2017

>}> পরীর সাথে প্রেম<{< রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৫

.
.
সোহেল রানা তার নিজ চোখ ও কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।এমনিতেও ভিতু টাইপের হলেও আজ কেন যেন ভয় লাগছে না।শুধু এক অদ্ভুদ শিহরন বয়ে চলেছে সারা শরীর এর মধ্য দিয়ে।ইভাকে সে কি বলবে সঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।বাংলা,হিন্দি সব ছিনেমার ডায়লগ যা মনে ছিল তাও ভুলে গেছে
ইভা:-কি হল কিছু বলছ না
রানা:-আমি জানতাম তোমাকে পরীর মত দেখতে।কিন্তু তুমি.....
ইভা:-কেন বিশ্বাস হচ্ছে না
রানা:-আচ্ছা শুনেছি রুপকথার পরীরা নাকি তিনটি বর প্রদান করে
ইভা:-৩ টির কথা যানি না।তবে আমার কাছে একটি বর আছে।আর সেটা তুমি
রানা:-বিয়ে করলাম কবে।তবে শালিকে বারবার উরতে মানা কর।অদ্ভুদ লাগছে
ইভা:-একটু আগেই তো বল্লা আমাকে বিয়ে কর নাই।তবে আমার বোনকে শালি বল্লা কেন
মেঘা:-তবে যাই বল আমি দুলাভাইকে কেমন surprise দিলাম
রানা:-ওয়ে বাবা।ওখানে।সবাই আবার ইংরেজি জানে নাকি!!
মেঘা:-নয় তবে আপুর মুখে শুনেছি।মনে হয় আমার দুলাভাই এর কাছ থেকে শিখেছে
ইভা:-আমার কিন্তু একটা জিনিস নিয়ে এখনও ভয় হচ্ছে
রানা:-কি বিষয়ে?
ইভা :-আচ্ছা তুমি কি আমাকে আবার আগের মত ভালবাসতে পারবা।জান আমি কখনও তোমাকে হারাতে চাই না।এজন্য আজ পর্জন্ত তোমার কাছে এই সত্যটা লুকিয়ে এসেছি।এখন যদি ছেরে চলে যাও আমি কিন্তু বাচতে পারব না
রানা:-বাংলা ছিনেমার কমন ডায়লগ এটা।আচ্ছা তুমি এত ডায়লগ পেলা কোন জায়গায়?
ইভা:-তুমি মজা করছ।আগে বল সারাজীবন আমাকে ভালবাসবা কিনা
রানা:-হুম ভালবাসতে পারি তবে এক শর্তে
ইভা:-কি?
রানা:-আমাকে তোমার রাজ্যে নিয়ে যেতে হবে।অনেক শখ পরীদের দুনিয়াটা দেখার
ইভা:-হাত ধর
রানা:-তোমার বোনের সামনে :-) আচ্ছা ধরলাম
.
.
ইভা রানাকে নিয়ে তাদের রাজ্যো নিয়ে গেল।রানা আস্তে আস্তে মেঘের উপরে যাচ্ছে।নিচে তাকানোর সাহস নেই তার।মনে মনে তবুও অনেক উত্তেজনা কাজ করছে।ছোটবেলায় শুধু রুপকথার গল্প শুনেই গেছে।কোনদিনও বিশ্বাস না করলে অনেক রকমের অনুভুতি কাজ করত।কল্পনায় নিজেকে পরীর দেশে খুজে নিত আর আজ তাকে এক পরী যাকে সে অনেক ভালবাসে সে তাকে তার স্বপ্ন পুরন করতে সাহায্য করছে।কিছুক্ষনের মধ্যোই তারা রাজ্যে ফিরে এল।ছোটবেলায় রানা পরীদের দেশ সম্পর্কে যা শুনেছিল বা অন্যান্য জায়গা হতে যা জেনেছিল তার কিছুই দেখতে পেল না।তবে অন্যরকম ছিল যায়গাটা।এদিকে শালি দেখি জ্বালিয়ে পুরিয়ে খেল।কোথায় রাজ্যো টা ঘুরিয়ে দেখাবে তা নয় নিজের প্রশংসা করতে ব্যাস্ত আর তার বাবার বাহাদুরি নিয়ে ব্যস্ত।আচ্ছা সেটা তো হবে কিন্তু শশুরমশাই কে তো দেখা যাচ্ছে না।ইভা রানাকে তার মা-বাবার সাথে পরিচয় করাতে নিয়ে আসল।শশুরমশাই এর বিশাল ডানা দেখতেই রানা ব্যাস্ত।এদিকে তার শাশুড়ি কে অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে যেখানে তার শশুরমশাই ততটা সুদর্ষন নয়।বলেই ফেলল তার ইভার মায়ের সৌন্দর্যের কথা।ভাগ্যিস মুখ ফসকে শশুরমশাই এর কালা চেহারার কথা বের হয় নাই।তবে মেয়ে দেয়া তো দুরের কথা ওকে রাজ্য হতে চুড়ে নিচে ফেলা হত।রানা একদিকে আবার পটানোর এক্সপার্ট।ইভার মা-বাবাকে।পটাতে তার বেশি সময় লাগল না।কিন্তু হনুমান মার্কা শশুরমশাই কে পটাতে বেশ কিছু সময় খরচ হল।বান্দা কোন কিছুতেই খুশি হচ্ছিল না।তবে সামনে যেই হোক না কেন পটানো রানার কাছে সোজা।এদিকে মেঘা তার শালি রানাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে গেল।রানাকে এমনিতেও দেখতে রাজ্যোর প্রায় সব লোক ছুটে এসেছে।নিজেকে ছেলিব্রিটি মনে হচ্ছে।কিন্তু রানা আসলে জানে না তারা তাকে নয় ইভার মানুষ্য প্রেমি কে দেখতে এসেছে।এদিকে রানা রাজ্যে বিভিন্ন যায়গা পরিদর্শন করল।ভাগ্যিস ভাল পৃথিবীর মত এখানে কসমেটিক্স এর দোকান নেই।থাকলে হয়ত আজকে তার।পকেট খালি হয়ে যেত।আচ্ছা বাংলাদেশে টাকা চলে আমেরিকায় ডলার।এখানে কি চলে ভাবতে থাকে
.
.
ভাবতে ভাবতে একা একা একটু দুরে যেতেই ফারিয়াকে দেখতে পায়।এই তো সেই ফারিয়া যাকে সে ইভার সাথে দেখেছিল।কিন্তু এ এখানে কিভাবে এল।ফারিয়ার বাসা ছিল নির্জন স্থানে।কোন বাঘ খেয়ে ফেলায় মরে ভুত হয়ে আসেনিতো।কল্পনার জগত কে ভেংগে ফেলে ফারিয়া বলল
--আমি তোমাকে ভালবাসি।সেই কলেজ স্কুলে পরার সময় থেকে।আমি জীন এর সন্তান এটা ভেবে ভয় পাবে বলে বলা হয়ে ওঠেনি।কিন্তু আর নয়।ইভার অনেক আগ হতে আমি তোমাকে ভালবাসি।তুমি চাইলে আমি ইভার থেকেও বেশি সুন্দরের রুপ ধারন করব
--কিন্তু আমি ইভাকে ভালবেসে ফেলেছি।তার রুপের জন্য নয় আমি তার মনকে ভালবেসে ফেলেছি।তাই আমার কাছে তোমাকে ভালবাসা সম্ভব নয়।দয়া করে বোঝার চেষ্টা কর
--কিন্তু আমি তোমাকে ইভার থেকেও বেশি ভালবাসা দিব
--আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না আমি ইভাকে কতটা ভালবাসি।শুধু এটাই বলতে পারব ওকে চাড়া আমি ১ মুহুর্ত ভাল থাকতে পারব না
--তুমি যেটাকে ভালবাসা ভাবছ ওটা আসলে ভালবাসা নয়।আমি তোমাকে প্রকৃত ভালবাসি
--আমি জানিনা তুমি আমাকে কতটা ভালবাস।কিন্তু আমিও ইভাকে চাড়া থাকতে পারব না।দয়া করে আমাকে তুমি ভুলে যাও
রানা তার শালিকে নিয়ে ওখান থেকে চলে গেল আর গোটা ব্যপারটা সবার থেকে লুকিয়ে রাখল।
.
.
রানা ইভাকে নিয়ে আবার পৃথিবীতে আসল।কিন্তু ঘরে এসে দেখে যে তার মা বাবা ঘরে নেই।তাই ইভাকে নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল।হটাৎ ইভা অদ্ভুদ রকমের একটি দৃশ্য তার চোখে ভেসে উঠতে দেখল।দেখতে পেল কেউ দু জন কাপলস কে বেধে রেখেছে মানুষের চামরা দিয়ে।রানাকে নিয়ে গেল এ ব্যাপারে খোজ নিতে।ইভা আস্তে আস্তে সে যায়গায় প্রবেশ করতে দেখল সেই কাপলস রানার মা-বাবা আর তাদের সামনে ইভার সেই প্রেমি দানবটি।তবে সেই দানবের চোখে ইভার জন্য ভালবাসা নেই।আছে খুন করার অগ্নিময় চোখ।এই মুহুর্তে ইভার রাজ্য হতে কেউ আসতে পারবে বলে মনে হয় না তাদের বাচাতে।আর ইভার কাছে সেই দানবটির সাথে লড়াই করার পর্যাপ্ত শক্তি নেই।,,,,(চলবে)

লেখায় ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। গল্পটি কেমন লাগছে জানিেয় লেখককে পরবর্তী পর্ব লেখার জন্য উৎসাহিত করবেন। সবাইকে ধণ্যবাদ।

♡ পরীর সাথে প্রেম♡《 রহস্য বড় গল্প লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন পর্ব ৬ (শেষ পর্ব)

》♡ পরীর সাথে প্রেম♡《
রহস্য বড় গল্প
লেখকঃ কাজি মেহেরাব হোসেন
পর্ব ৬ (শেষ পর্ব)
.
.
ইভা ভয় পেল না।ইভা সেই দানবটির সাথে লড়াই করল।রানার সাথে বেয়াদবি করার শাস্তি তাকে পেতেই হবে।সর্ব শক্তি নিয়ে দানবটির সাথে লড়াই করতে লাগল।রানার চোখের সামনে পুরা ঘর আলোতে ভরে যাচ্ছে।বিকট শব্দ তে কেপে ওঠে পুরা বাড়ি।কিন্তু এক পর্জায়ে হেরে যায় ইভা এবং সেই দানবটি ইভাকে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে।ইভার বাকশক্তি আর যেন নেই।একচোখে রানার দিকে তাকিয়ে থাকে এবং তাকে আভয় দেয়ার চেষ্টা করে যে সে ঠিক আছে।কিন্তু সেই চেষ্টা একান্তই মিথ্যা।কারন রানার চোখ হাত সব বাধা।আহা কি কষ্ট হচ্ছে আমার রানার।জানোয়ারটা তাকে বেধে রেখেছে কত কষ্টই না হচ্ছে না তার।এদিকে রানা ইভার আঘাত সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেছে।ঘুমের মধ্যো রানার চেহারা অনেক মায়াবি লাগছে।অনেক ইচ্ছা করছে তার কপালে আলতো করে এক চুমা একে দিতে।কিন্তু সেই সামর্থ যে ইভার নেই।দানবটা শেষমেষ তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করল।ইভার চোখ থেকে এক ফোটা পানি বের হল।চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।সেই দানবটি রানাকে হত্যা করার জন্য হাত বারায়।ইভা তখন বিকট চিতকার দিয়ে ওঠে।মেঘা তখন হাল্কা ভয়ের উপলব্ধি টের পায় নিজের মধ্যো।তাই সে দেখতে যায় কি চলছে।রানার কাছে এসে বিষয় তা বুঝতে পেরে তারাতারি নিজের রাজ্যো ফিরে আসে।তার মা-বাবাকে খবর দেয় এর ব্যাপারে।এ মুহুর্তও ব্যায় না করে সৈন্য নিয়ে এসে হাজির হয় সেই দানবটির সামনে।নিজের মেয়ের নিস্তব্দ শরীর টা দেখে রাগে দুঃখে সেই জ্বিনের পুরা শরীর বিক্ষিপ্ত করে দেয়।এসব তারই ভুল।যদি সে ঠিক সময় আসতে পারত তাহলে তার আদরের মেয়ে তার কলিজার টুকরাকে হারাতে হত না।একসময় দেখল রাত হয়ে গেছে চারদিকে অন্ধকার আবার ভুমিকম্প হচ্ছে।কিন্তু পরে বুঝল যে না এটা শুধুমাত্র তার নিজের সাথে হচ্ছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।ইভার নিস্তেজ শরীর নিয়ে চলে যায় নিজ রাজ্যো।ও যাওয়ার আগে রানাকে তার বাসায় পৌছে দিয় আসে
.
.
রানা ঘুম থেকে উঠে ইভার খোজ করতে লাগে।কালকের ঘটনা তাকে পাগল করে দিয়েছে।সে যায়গায় ফিরে যায় যেখানে ইভা তাকে ভালবাসে প্রথম,ইভার পছন্দের স্থান।কিন্তু সেখানে ইভার সন্ধান পায় না রানা।অবশেষে সেই স্থানে যায় যেখানে শেষবারের মত ইভার সাথে তার দেখা হয়েছিল।কিন্তু সেখানেও রানার নিরাশা বেরে যায়।ইভার কোন ক্ষতি হয় নি তো।দানবটি ইভাকে কতই আঘাত না করেছে রর সে কিছুই করতে পারে নি।নিজেকে কাপুরুষ বলে মনে হচ্ছে।ভালবাসার জন্য কিছুই করতে পারল না।হয়ত দানবট ইভাকে আবার বন্দি বানিয়ে নিয়ে গেছে।কিন্তু রানা তো আসলে জানেই না যে তার ইভা আর নেই।এদিকে কোথা থেকে ফারিয়া এসে পথে বাধা এসে দারাল।তার ভালনাসা আদায় করার সময় হয়ে গেছে তার।এত সব পরিকল্পনা তো রানাকে পাওয়ার লোভে।সে তো তার ভাইকে ইভার প্রতি উত্তেজনা করে তাকে মারার জন্য পাঠিয়ে দেয়।তবে তার ভাইও মারা যায় এতে কিন্তু ফারিয়ার বিশেষ কোন দুঃখ হয়নি এতে।কারন সে রানার ভালবাসায় পুরা পাগল হয়ে উঠেছে।যেকোন পর্জায় রানাকে তা চাই।রানার অবহেলা তিল তিল করে খেয়ে ফেলছে ফারিয়ার হৃদয়কে।না এটা হতে দেয়া যাবে না।ইভা কেন কেউ রানার হতে পারে না শুধুমাত্র ফারিয়া ছারা।রানা তার কল্পনার জগত ভেংগে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল
--কেন এসেছ এখানে?
--শুধু তোমাকে চাই
--এখন প্লিজ আমার কাছ থেকে চলে যাও।ইভার কোথায় আছে সেটা ভেবে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।আর এখন তুমি বিরক্ত কর না
ফারিয়া অনেক রেগে ওঠে।সে তার কানে আর ইভার নামটা সহ্য করতে পারছে না
--ইভা,ইভা,ইভা শুধু এটাই করতে পার।ইভা মারা গেছে।হ্যা হ্যা আমি মেরেছি তাকে
হটাত বর রকমের ধাক্কা খায়।কিন্তু তার ইভার উপর অনেক ভরসা আছে
--এখন ফালতু কথা বলার সময় আমার কাছে নেই।আর ইভার কোন সন্ধান যদি নাই থাকে খামাখা কানের সামনে এসে চিল্লাইও না
ফারিয়া তখন ওখান থেকে চলে যায় পরীর রাজ্যো তার প্রমান দেখানোর জন্য
.
.
এদিকে ইবার বাবা এক বয়স্ক জ্বীন এবং শক্তিশালি ও জ্ঞানীও বটে তাকে নিয়ে।আসে।অনেক দেখার পর তিনি বলেন
--ইভাকে বাচানো সম্ভব নয়।তবে একটা উপায় আছে
--তারাতারি বলুন কি সেই উপায়
--ইভার শরীর এক মৃত শরীরে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই আমার শক্তিতে তিন দিনএর জন্য প্রান ফিরে পাবে
--কিন্তু পরে
--ইভার ভালবাসায় পাগল এক যুবকের হৃতপিন্ড ওই লাশে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই ইভা বেচে যাবে
--আপনি তাই করুন দয়া করে আমার মেয়েকে বাচান
--আচ্ছা আপনি হৃতপিন্ড ব্যাবস্থা করুন
ইভার বাবা চিন্তা করে ব্যাকুল কে এমন হতে পারে।সেই দানবটি তো তার নিজের আঘাতে মারা গেছে।তবে আর কোন যুবক আছে যে ইভাকে ভালবাসে।হ্যা রানার কথা মনে পরেছে তার।তবে যেই হাতে রানার জীবন বাচিয়েছে সেই হাতে তাকে মারতে হবে।না তার পারতেই হবে।অন্তত ইভার জন্য হলেও।এদিকে ইভার আত্তা মৃত এক মেয়ের শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছে।ইভার ফিরে আসায় সবাই খুশে হয়ে ওঠে।ইভাও প্রচুর কান্না করে ভেবেছিল আর তার মা-বাবা আর আদরের বোনটাকে আর দেখতে পারবে না।এদিকে যখন দুঃখময় সৃতি চলছিল অন্যদিকে ফারিয়া রানার কাছে এসে ইভার শরীর নিয়ে আসে প্রমান স্বরুপ আর বলে ইভাকে বাচাতে তাকে মারতে আসছে ইভার বাবা।রানা তখন বলে যে সে তার হৃতপিন্ড দিয়ে হলেও ইভাকে মরতে দিবে না।কিন্তু ফারিয়া এ ব্যাপারে বাধা দিয়ে তাকে খুব গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখল
.
.
এদিকে ইভার বাবা পাগলের মত রানাকে খুজতে থাকে।অন্যদিকে ইভা সম্পুর্ন ব্যাপারটি জানতে পেরে চলে যায় রানার কাছে।রানা তখন ফারিয়াকে বলতে থাকে যে সে বেচে থাকতে ইভার কোন ক্ষতি হতে দিবে না।এদিকে ইভার বাবা তাদেরকে খুজে পায় ও রানাকে মারার জন্য হাত বারায়।রানার মনে কোন ভয় নেই আরো মনে খুশি কাজ করছে।ইভার জন্য কোনদিন কিছুই করতে পারে নি।শুধু ইভাই করে চলেছে।আজ তার জন্য কিছু করার সুযোগ এসেছে।সবচেয়ে মুল্যবান জিনিস টা ইভাকে দিয়ে যাবে।কিন্তু তা হল না।ইভা তার বাবার সামনে এসে দারাল।কিন্তু মেয়েকে বাচানোর নেশায় ইভাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।মানুষের শরীরে থাকায় ইভার শক্তিও ছিল না বাধা দেয়ার।হটাত ইভার মাথায় একটা বুদ্ধি এল।রানার দিকে একটি মুচকি হাসি দিয়ে ছুরি দিয়ে নিজ শরীরে আঘাত করল।চারপাশে নিস্তব্দ পরিবেশ।বাংলা ছিনেমার ডায়লগ ছারা মেয়েটা আজ বাংলা ছিনেমার মতই নিজের জীবন উতসর্গ করে দিল।সব গুলিয়ে যাচ্ছে রানার।নিস্তব্দ পরিবেশে ইভার শরির রানার দিকে একদৃষ্টি তে চেয়ে আছে।সে ধিরে ধিরে ইভার কাছে যায়।এই বুঝি ইভা তাকে থাপ্পর মেরে বলে তারাতারি দেখা করতে।কিন্তু না...আর ইভা তাকে কিছুই করতে পারবে না।রানাকে স্বাধিন করে দিয়ে চলে গেছে।রানা পাগলের মত কাদতে থাকে।কে আজ থেকে তার খেয়াল রাখবে।কেই বা তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে।আবার কেই বা তাকে এতটা ভালবাসবে।চোখের সামনে সব ঘোলাটে হয়ে যায়।হটাত রানা কি ভেবে ইভার হাত থেকে ছুরি টা নেয় আর নিজ শরীরে আঘাত করে
.
.
নাহ রানা মারা যায়নি।ইভার বাবা রানাকে আটকিয়ে ফেলে।সে ইভার শেষ সৃতি তাকে কিভাবে মরতে দিতে পারে।রানাকে বাচতে হবে ইভার মা-বাবার জন্য বাচতে হবে।
.
..................................(সমাপ্ত)

এই সাগর কানে কানে একটা কথা শুনে যাও....

--এই সাগর কানে কানে একটা কথা
শুনে যাও....
সাগর সাহেব অফিসের ফাইল রেখে
এগিয়ে আসলো আমার দিকে
--বলো কি বলবা।কানে কানে না
বললেও হবে এই রুমে তুমি আমি ছাড়া
আর কেউ তো নেই তাইনা।
--আসো তো। আমি কানে কানে বলবো
--আচ্ছা বলো
--বলছি যে....
--আআআআআআআআওও।উফ স্নেহা
তোমাকে না কতবার বলেছি আমার
সাথে ফাজলামি করবানা। তুমি বড়
হবা কবে বলোতো।এভাবে কামড় দেয়
কেউ!
--হিহিহিহি
--ঠাস.....অসভ্য মেয়ে।বের হয়ে যাও এই
রুম থেকে।
চোখদুটো গোল গোল করে সাগরের
দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে
আসলাম।এনাকে আর ভালবাসা
শেখাতে পারলাম না। বড্ড লেগেছে
গালে।দরজার ওপাশে গিয়ে সাগর
সাহেবকে লক্ষ্য করছি।
উনি ফ্লোরে বসে পড়লেন। আমি যে
কানে কামড় দিয়েছিলাম সেখানে
হাত রাখলো। যেন কিছু একটার স্পর্শ
নিচ্ছে। কিন্তু একি ও কাঁদছে কেনো!
দুইমিনিট পার হয়ে গেল প্রিয়তম এখনো
কাঁদছে। আমার কি করা উচিত? ওর
কাছে গিয়ে বলবো নাকি --আমি কষ্ট
পাইনি। তুমি চাইলে আরেকটা
মারো।"কিন্তু আমার গালেও হেব্বি
ব্যথা লেগেছে।
এর প্রবলেম কি বুঝি না। এর বাবা মা
বোন সবাই আছে।আমার মত পাগলী
একটা বউ আছে। কিন্তু এ তো দেখি
কারো সাথেই মিশে না। আমাকে
বিয়ে করে এনেছে পাঁচমাস হতে
চললো কিন্তু আমার সাথে কথা বলতেও
যেন ওর কোথায় কষ্ট হয়। একটু পাগলামী
করেছি তাই এমন জোরে থাপ্পড়।একবার
হাতটা একটু টাচ করেছিলাম ওরে
বাবা কি ভয়ানক লুক নিয়ে
তাকিয়েছিল আমার দিকে। ভাগ্যিস
বেশি কিছু করতে যাই নি। নাহলে
এতক্ষণে পেটে ছুরি চালিয়ে দিত।
বাট বেটা এখন কাঁদছে কোন দুঃখে।
কাঁদা তো আমার উচিত।এমন একটা বর
জুটেছে আমার কপালে। মাঝে মাঝে
সন্দেহ হয় অন্য কোনো জেন্ডারের না
তো আবার? চেহারা মাশাল্লাহ।
চেহারা দেখে তো মনে হয় ছেলেই
হবে।বাট আমার সাথে এমন করে কেন!
.
উঁকি দিলাম রুমে। সাগর সাহেব এখনো
মাথা নিচু করে কাঁদছে।এর ব্যাপার
কি বুঝছি না। আস্তে আস্তে এগিয়ে
গেলাম ওর দিকে।সামনে যেয়ে ডাক
দিলাম।
--এই যে শুনো...
সাগর সাহেব চোখ তুলে তাকালো
আমার দিকে। চোখদুটো টমেটোর মত
লাল হয়ে আছে। আমার হাসি পাচ্ছে।
কিন্তু এখন হাসলে অবস্থা খারাপ হয়ে
যাবে।ও আমাকে ওর কোলের উপর
বসালো।একদৃষ্টিতে দেখছে আমাকে।
যে গালে মেরেছে দৃষ্টি ওখানে
প্রখর।কিছু না বলেই জড়িয়ে ধরে
কেঁদে উঠলো আবার।এই প্রথম কেউ
আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে আছে।সেইরাম
ভালো লাগছে।বাট কান্নাকাটি
করছে বলে ততটা ভালো লাগছে না।
জড়িয়ে রেখেই...
--স্নেহা...!
--হুম বলো।
--আমি না ছোট থেকে কারো সাথেই
তেমন মিশি নি।বাবা মা দুজনই চাকরি
নিয়ে ব্যস্ত থাকতো।বড় বোন কারণে
অকারণে ঝগড়া করতো। টাকার অভাব
ছিল না কখনো। অভাব ছিল একটু
ভালবাসার,পরিবারের একটু মিষ্টি
শাসনের,পরিবারের সাথে একটু সময়
কাটোনোর।যখন যেটা মনে হয়েছে
করেছি। কারো অনুমতি নেওয়ার দরকার
হলেও কেউ অনুমতি দেওয়ার সময়
পায়নি।সব কিছু থাকার পরও পরিবারের
ভালবাসার অভাব ছিল।টাকা দিয়ে
এসব পূরণ করা সম্ভব ছিলনা। বড় হয়ে
ফ্রেন্ড হলো কয়েকটা যাদের জন্য
জীবনও দিতে পারি কিন্তু তাদের
সাথেও ভালমত মিশতে পারি নি।
বাবা মা এখন আমাকে ওদের কাছে
রাখতে চায় কিন্তু আমার আর থাকতে
ইচ্ছে হয়না। ছোটবেলায় যে
ভালবাসা পায়নি সেটা এখন পেয়েও
দূরে থাকতে ভালো লাগে। সবার
কাছে নিজেকে খারাপ বানানোর
চেষ্টা করি।কিন্তু কেন জানি কেউ
আমায় খারাপ বলে না। হয়তো করুণা
করে ভালো বলে।
এতক্ষণ কথাগুলা শুনছিলাম মন দিয়ে।
গলা শুকিয়ে গেছে আমার। কখন থেকে
জড়িয়ে ধরে আছে গরম লেগে যাচ্ছে।
গালে চিনচিনে ব্যথা করছে। মনে
সাগরের জন্য সুখ সুখ ব্যথা হচ্ছে।
ছেলেটার কত কষ্ট।ওর কষ্টের কাছে
আমার এই কষ্ট কিছুই না। আমার কেনো
জানি ঘুম পাচ্ছে।
--স্নেহা শুনছো তুমি..
--হুম
--কখনো প্রেমে জড়ায়নি। কারণ আমি
ভালবাসতে পারি না।ভালবাসতে
শিখি নি।আমার প্রতি তোমার
ভালবাসা তোমার পাগলামী দেখে
একটু একটু শিখেছি ভালবাসতে। আমি
তখন তোমাকে মারতে চাই নি
বিশ্বাস করো। আমার খুব কষ্ট লাগছিল।
আমাকে কেউ কখনো ভালোবাসে নি।
তুমি ভালবেসেছো কিন্তু সেই
তোমার গায়েই মারলাম আমি! আমি
আসলেই খারাপ
--হুম। এখন যেখানে মেরেছো
সেখানে গুনে গুনে তেত্রিশটা চুমো
দাও তাহলেই হবে।
সাগর আমার কথা শুনে ভড়কে গেছে।
আমাকে তুলে বিছানায় বসালো।
আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।গলা শুকিয়ে
গেছে।
--সাগর আমাকে একটু পানি খাওয়াও
না প্লীজ।
--এই নাও...
পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। খুবই ঘুম
পাচ্ছে। সাগর বললো
--স্নেহা তুমি আমাকে তেত্রিশটা
চুমো দিতে বললে কেনো?
--কারণ তিন সংখ্যাটা আমার জন্য
লাকি তাই।
--তাহলে শুরু করি...
--হুম লজ্জা পাচ্ছো কেন?আমি তোমার
বউ লজ্জার কিছু নেই।লাইট দিয়ে
গালে কি দেখছো?
--ইশ গালটা লাল হয়ে গেছে।
উম্মাহ...................
.
দশটা চুমো গুনার পরই ঘুমের রাজ্যে
হারিয়ে গেলাম।ঘুম ভাঙলো সাগরের
ডাক শুনে। চোখ মেলে চারিদিকে
তাকিয়েই আমার চোখ কপালে উঠে
গেল।কি রোমান্টিক ভাবে
সাজানো হয়েছে রুমটা।আমার প্রিয়
লাল রংএর মোমবাতি জ্বলছে।
ফুলদানিতে লাল গোলাপ ফুল। ওহ একটা
গানও বাজছে। আমার প্রিয় গান
"দিলমে ছুপা লুং গা"।এটা স্বপ্ন নয়তো
আবার!
--সাগর......
--হুম স্নেহা!
--এটা কি সত্যি? নাকি স্বপ্ন দেখছি?
এতসব কখন করলে তুমি?
সাগর আমার ঠোঁটে ছোট্ট একটা চুমু
একে দিল।অনুভব করলাম সেটা।এটা আর
যাই হোক স্বপ্ন হতে পারে না।
--স্নেহা....!
--হুম
--আমি ভালবাসতে শিখে গেছি
স্নেহা.....
মনে মনে ভাবছি বউকে একটা থাপ্পড়
দিয়েই ভালবাসা শিখে গেল
বেচারা!!ওহ ভুলেই গেছি তার জন্য তো
কানে কামড় দিতে হবে।
.

Monday, August 14, 2017

বসুন্ধরা সিটিটা কেন জানি আমার সব সময়ই একটু অস্বস্তিকর লাগে ।

বসুন্ধরা সিটিটা কেন জানি আমার সব
সময়ই একটু
অস্বস্তিকর লাগে । ঠিক মানিয়ে
নিতে পারি না ।
এতো লোক, এতো হইচই ! আমার ঠিক
ভাল লাগে
না !
কিন্তু আজকে এতো কিছুর কিছুই যেন
আমাকে
স্পর্শ করছে না । এতো লোক জনের
ভিতরেও
আমার সব মনযোগ কেবল মাত্র সুমির
দিকেই
নিবদ্ধ !
ঐ তো দেখা যাচ্ছে । নিশ্চয়ই ওর কোন
বান্ধবীর কিংবা বন্ধুর সাথে
এসেছে !
গায়ে সাদা এপ্রোনটা এখনও জড়িয়েই
আছে !
নিশ্চয়ই ক্লাস থেকে সরাসরি এসেছে !
আচ্ছা ও কি ডাক্তার হয়ে গেছে ?
আমি একটু পেছনের কথা হিসাব করার
চেষ্টা করলাম
। কয় বছর হবে !
তিন বছর ?
নাকি চার বছর ?
চার বছরই হবে । নাহ ! এখনও মনে হয়
পুরোপুরি
ডাক্তার হয় নাই ! আমি নিজের চোখ
সরিয়ে নিতে
চাইলাম । কিন্তু কেন জানি পারলাম
না !
তাকিয়েই আছি সুমির দিকে !
ডাক্তার সুমি !
-সরি ! একটু লেট হয়ে গেল !
আমি বাস্তবে ফিরে এলাম ! অহীন
সামনে দাড়িয়ে !
-বেশি দেরি করে ফেলেছি ?
আসলে আমার মুখটা একটু গম্ভীর ছিল
বিধায় অহীন
মনে করেছে আমি মনে হয় রাগ
করেছি !
আমি মুখে হাসি আনার চেষ্টা করলাম !
বললাম
-আরে সমস্যা নাই ! আমিও মাত্রই
এসেছি ! এদিক
ওদিক দেখছিলাম !
অহীন আমার সামনের চেয়ারটা টেনে
বসলো !
খানিকটা ইতস্তর করে বলল
-আপনি কিছু মনে করেন নি তো ?
-কোন ব্যাপারে ?
-এই তো আপনাকে এখানে দেখা
করতে বললাম
বলে ! আপনি ছুটিতে আছেন তবুও
আপনাকে
বিরক্ত করলাম !
অহীন আমার কলিগ । প্রায় এক বছর ধরে
আমরা
একসাথে কাজ করতেছি ! মেয়েটা
ভাল ! দেখতে
শুনতেও ভাল ! শুধু ভাল না বেশ ভাল !
অফিসের
অনেকেই বলা বলি করে এই মেয়েটা
নাকি
আমাকে পছন্দ করে ! কিন্তু মুখ ফুটে কিছু
বলে
না ! আমি ঠিক জানি না ! কিন্তু গত
কালকে অহীন যখন
আমাকে ফোন করে দেখা করতে
চাইলো একটু
অবাক হলাম ! অফিসের বাইরে
আমাদের দেখা করার
মত এতো ঘনিষ্ঠতা এখনও হয় নাই ! যদিও
অফিসে
আমার কথা বার্তা হয় প্রায় !
আমি অহীনের মুখের দিকে তাকিয়ে
একটা জিনিস
লক্ষ্য করলাম । মেয়েটার মুখ কিছু
সংকুচিত হয়ে
আছে লজ্জায় !
তার উপর মেয়েটা বেশ জেগে গুজে
এসেছে !
আমি বললাম
-আপনাকে দেখতে সুন্দর লাগছে !
আপনি এতো
সুন্দর আগে তো লক্ষ্য করি নি ?
এই কথা বলাতে দেখলাম অহীনের
মুখটা আরো
বেশী লাল হয়ে গেল ! অন্য দিকে
তাকিয়ে বলল
-কোন দিন তো বলেন নি ?
-আপনিও তো আমাকে কোন দিন এই
ভাবে লাঞ্চ
খাওয়ার দাওয়াত দেন নাই ?
-বাহ ! সব কিছু আমাকেই করতে হবে ?
আমি কথাটার জবাব দিতে গিয়েও
দিলাম না ! চোখটা
আবার চলে গেছে সুমির দিকে ! এখনও
বন্ধুদের
সাথে হাসাহাসিতে ব্যস্ত !
আচ্ছা ওর কি কোন বয়ফ্রেন্ড আছে ?
নিশ্চয়ই আছে ! কোন ডাক্তার বয়ফ্রেন্ড
হবে
হয়তো ! আমাকে তো তাই বলেছিল !
যখন সিলেটে ছিলাম তখনই সুমিকে
চিনি । ও যখন
কলেজে পড়ে তখন থেকেই ওর সাথে
একটা
মিষ্টি সম্পর্ক ছিল ! প্রায়ই দিনে আমি
ভার্সিটির ক্লাস
কামাই দিয়ে ওর কলেজের সামনে
এসে দাড়িয়ে
থাকতাম । ও ঠিক কয়েকটা ক্লাস মিস
দিয়ে বের হয়ে
আসতো ! তারপর ঘন্টা হিসাব করে
রিক্সায়
ঘোরাঘুরি ! কোন দিন কাছের কোন চা
বাগানে
সময় কাটানো !
সুমির ডাক্তার হওয়ার বড় ইচ্ছা ছিল !
স্বপ্ন দেখতো
বড় একজন ডাক্তার হবে । এই জন্য সব কিছু
সে
বিষর্জন দিতে প্রস্তুত ! এই সব কিছুর
ভিতর যে আমি
নিজেও ছিলাম এটা বুঝতে পারি নি !
-কি ভাবছেন ?
-কিছু না ! কিছু খাবেন না ? লাঞ্চের
সময় হয়ে
যাচ্ছে ।
অহীন একট হেসে বলল
-আম তো বলেছি আমি খাওয়াবো !
টেনশন
নিয়েন না !
-আরে আমি টেনশন নিচ্ছি না ! আর
আমার কোন
কাজও নাই । আমি সারাদিনই এখানে
থাকতে পারবো !
-তাই ? থাকবেন আজকে আমার সাথে
সারা টা দিন ?
বসুন্ধরার পাশে যে লেইকটা আছে না !
ওটা আমার
খুব পছন্দের জায়গা ! এখানের পরে
ওখানে
যাবেন ?
-হুম ! যাওয়া যায় !
আরো কথা হতে থাকে আমাদের
ভিতর ! কিন্তু মনটা
কেন জানি সুমির দিকেই পরে থাকে !
সুমির হাসির
আওয়াজ কেন জানি কানে বাজতে
থাকে ! তারমানে
ও খুব সুখে আছে ?
আমি ?
আমিও ভাল আছি !
হুম ! আছিই তো ! কোন দুঃখ নাই ! ও যেমন
আমাকে ছেড়ে থাকতে পেরেছে
আমিও
পারবো না কেন ? ওর কথা মনে করাই
উচিৎ না !
অহীন বলল
-কি হল ? আপনার মন অন্য দিকে কেন ?
আমার সাথে
কথা বলতে ভাল লাগছে না !
-আরে কি বলেন ! আমার মন অন্য দিকে
না !
-আচ্ছা বুঝেছি ! আসুন আগে লাঞ্চ করা
যাক !
অহীন অর্ডার দিতে দিতে আমি এক
ওয়াস রুম দিকে
পা বাড়ালাম !
ওয়াস রুম থেকে বের হব এমন সময় সুমির
সাথে
দেখা হয়ে গেল ! সুমি ওয়াস রুমের ঠিক
সামনেই ও
দাড়িয়ে ছিল ! আমার কেন জানি
মনে হল ও আমার
জন্যই দাড়িয়ে ছিল ! প্রথম দেখা হলে
একটা অবাক
হওয়ার ভাব থাকে সুমি চেহারায়
সেটা ছিল না । তারমানে
আমি যেমন ওকে দেখেছি ঠিক সুমিও
আমাকে
দেখেছে আগেই !
আমি ওকে দেখেও না দেখার ভান
করে চলে
যেতে চাইলাম !
-অপু ?
নামটা এখনও মনে আছে দেখছি !!
যেদিন সুমির মেডিক্যাল ভর্তির
রেজাল্ট দিল সেদিন
ওর আনন্দ দেখে কে ! একদম মেধা
তালিকার
প্রথম দিকে !
আমার সাথে ওর আর দুই দিন পরে দেখা
হল ! এই
কয় দিন ও একটুও সময় বের করতে পারে
নাই !
আমরা রুপরংর টি স্টলের ভিতর
হাটছিলাম ! সুমিকে একটু
গম্ভীর মনে হচ্ছিল ! আমি হাটতে
হাটতে বললাম
-আজিব তো ! মানুষ রেজাল্টের আগে
টেনশন
করে আর তুমি রেজাল্টের পরে টেনশন
করতেছ ? কি ব্যাপার ? এতো গম্ভীর
কেন ?
সুমি প্রথমে কিছু না বললেও একটা
জায়গায় চুপ করে
বসে রইলো কিছুক্ষন ! ওর মুখ দেখে মনে
হল
কিছু একটা যেন বলতে চায় আমাকে !
কিন্তু বলতে
পরছে না ! আমি বললাম
-কিছু বলবা আমাকে ?
-হুম !
-বল !
-তুমি তো জানো আমি আমার
ডাক্তারীর পেশার
জন্য কতটা সিরিয়াস ?
-হুম ! জানি তো !
-আমার আর ডাক্তারীর মাঝে যেটাই
আসুক না কেন
আমি সব সময় ডাক্তারীকেই বেছে
নিবো !
-হুম আমি জানি ! সমস্যা কি ?
-অপু ! তুমি এখন আমার পথের বাঁধা হয়ে
আছো !
আমি প্রথমে কিছুক্ষন বুঝতে পারলাম
না কি
বলবো ! আমি ঠিক মত বুঝতেও পারলাম
না যে আমি
কিভাবে বাঁধা হয়ে দাড়াচ্ছি !
সুমি বলল
-দেখো, আমার মনে হয় তোমার সাথে
আমার
আর সম্পর্ক রাখা সম্ভব হবে ! একে তো
পড়া
লেখার চাপ তার উপর তুমি তো জানো,
ডাক্তাদের
সব সময় ডাক্তাদের সাথেই বিয়ে করা
উচিৎ ! তা না
হলে পরে অনেক সমস্যা হয় । আমি চাই
না এমন
সমস্যা হোক আমাদের ! তার চেয়ে ....
সুমি আরো কিছু বলছিল আমার কেন
জানি আর কিছু
কানে গেল না !
কেবল একটা কথাই ! আমি নাকি ওর
পথে বাঁধা ! ওর
লক্ষ্যের পথে বাঁধা !
তারপর সুমির সাথে আমার আর দেখা হয়
নি ! মোবাইল
থেকে ওর নাম্বার আর মেসেজ সব মুছে
দিয়েছি ! নাম্বারও বদলে ফেলেছি !
সম্ভাব্য যার যার
সাথে যোগাযোগ রাখলে ওর সাথে
আবার দেখা
হবার সম্ভাবনা ছিল এমন সবাইকেই বর্জন
করেছি !
এই চার বছর ভালই ছিলাম ! একটা বারও
ওর সাথে দেখা
হয় নাই !
আমি তবুও না শোনার ভান করে চলে
আসতে
চাইলাম !
-অপু ?
-আপনি আমাকে কিছু বলছেন ?
সুমি কিছুক্ষন একটু অবাক হল ! আসলে ও
ঠিক আমার
কাছ থেকে এমন আচরন আশা করে নাই !
সুক্ষ
একটা অপমান বোধের রেখা দেখতে
পেলাম
-অপু ! আমি ?
-আপনি ?
সুমি কথা হারিয়ে ফেলল !
-কিছু বলবেন ? বললে তাড়াতাড়ি বলুন !
আমার
গার্লফ্রেন্ড ওয়েট করছে !
-গার্লফ্রেন্ড ! তোমার গার্লফ্রেন্ড ?
-কেন ? কোন সমস্যা ?
সুমি এই কথার জবাব দিল না !
-দেখুন আমি ডাক্তার না হতে পারি
তবে আমি কম টাকা
ইনকাম করি না !
আমি ..........
আরো কিছু বলতে গিয়েও থেমে
গেলাম ।
নিজেকে একটু সামলালাম ! কিন্তু
অবাক হয়ে লক্ষ্য
করলাম সুমি কে দেখে কেন জানি
আমার খুব রাগ
হচ্ছে !
আমি বললাম
-আমি আসি !
-কি ব্যপার ? এতো গম্ভীর কেন ?
আমি হাসার চেষ্টা রকলাম ! কেন
জানি রাগটা এখনও
কমছে না ! কি করলে কমবে ?
আমি অহীনের দিকে সরাসরি
তাকিয়ে বললাম
-আপনি আমাকে বিয়ে করবেন ?
বলেই মনে হল কি বললাম !!
কেন বললাম ?
আসলে হুস হারিয়ে ফেলেছি ! কি
বলছি ঠিক বুঝতে
পারছি না !
অহীন কেবল আমার দিকে অবাক হয়ে
তাকিয়ে
রইলো কিছুক্ষন ! মুখে একটা অবাক হওয়ার
চিহ্ন !
-কি হল ?
-আপনি কি সিরিয়াস ?
-জি সিরিয়াস ! কররেন ? আজই ?
-আজই ?
-রাজি না থাকলেও বলতে পারেন
কোন সস্যা নাই !
অহীন আমার দিকে সত্যি বেশ অবাক
হয়ে তাকিয়ে
রইলো ! আমাকে যেন চিন্তে পারছে
না বা
বহুদিনের পরিচিত আমাকে যেন ঠিক
চিনতে পারছে
না ! আমি অহীনের দিকে তাকিয়ে
বললাম
-কি রাজি না ?
-আমি কি বলেছি আমি রাজি না ?
-তাহলে চলুন লাঞ্চ করেই বিয়ে করে
ফেলি !
তবে একটা শর্ত !
-কি !
-এই লাঞ্চের বিল কিন্তু আমি দিবো
না ! এটা কিন্তু
তোমাকেই দিতে হবে !
-আচ্ছা !
অহীন হেসে ফেলল ! বলল
-ঠিক আছে দিচ্ছি ! তারপর কাল
থেকে সব কড়ায়
গন্ডায় উসুল করবো কিন্তু !!
যখন রিক্সাটা কাজী অফিসের দিকে
যাচ্ছিল আমি
কেবল অনুভুব করলাম অহীন আমার হাত
ধরে
রেখেছে ! ওর চোখে একটা অজানা
আনন্দ !
হঠাৎ করেই আমাকে পাওয়ার আনন্দ !
আমার বুকের ভিতরেও একটা অজানা
ভাল লাগা ছিল !
এতো দিন কেবল মনে হয়েছে আমি
সুমি ভালবাসি !
আজকে আমার সেই ভুল ভেঙ্গেছে !
আমি
ওকে ভালবাসি না । আমার ভালবাসা
পাওয়ার যোগ্যতা ওর
নেই, আসলেই নেই !
.
#যান্ত্রিক_প্রহেলিকা

এক মেয়ে প্রেমিকের হাত ধরে বাসা থেকে পালিয়ে গেলো ।

১)
এক মেয়ে প্রেমিকের হাত ধরে বাসা থেকে পালিয়ে গেলো । কাউকে না জানিয়ে তারা বিয়েও করে ফেলল । বিয়ের প্রথম দিনগুলো খুব ভালো কাটছিল । এক সময় মেয়েটা কনসিভ করলো । স্বামীকে ঘটনা জানালো । স্বামী মেয়েটির মতের বিরুদ্ধে গিয়ে জোর করে তাকে এবোরশন করালো । আসলে তার প্রেমিকটি ছিল পতিতার দালাল । প্রেমের সময় মেয়েটা এই ব্যাপার জানতে পারেনি । তার প্রেমিকটির আসল কাজ হচ্ছে প্রেমের নামে মেয়েদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া । এই মেয়েটিকেও তার স্বামী পতিতালয়ে বিক্রি করে দিলো । মেয়েটিকে পাবলিক প্রপার্টি বানিয়ে ছাড়লো । স্বপ্নের ভালোবাসার রং পতিতালয়ের স্যাঁতস্যাঁতে দেয়ালে মিশে গেলো । একটা মেয়ের সহজ সরল ভালোবাসা, জগতের সব থেকে অন্ধকার জায়গার কালো গহ্বরে মিশে গেলো । ঘটনাটি ছিল ভারতের কোন একটা প্রদেশের । ভালোবাসার প্রতি ঘৃণা ধরে গেলো , তাই না ?
২)
আমেরিকার একটা দম্পতির কথা বলছি । 
এই দম্পতি ৯২ বছর বয়সে এক সাথে পরলোকগমন করেন । কিছুদিন আগেই এসেছিল খবরে । স্বামী ট্রেন্ট ২০ বছর বয়স থেকেই স্ত্রী এলিনাকে ভালোবাসে । ৫ বছর প্রেম করার পর তারা বিয়ে করলো । প্রেম করার সময় ট্রেন্ট প্রতিদিন একটা করে চিঠি লিখতো তার প্রেমিকা এলিনাকে । গভীর ভালোবাসা পূর্ণ সেই চিঠিগুলো পড়েই পটে যান এলিনা । এরপর যথারীতি সংসার । টানা ৬৭ বছর একসাথে সংসার করেছেন তারা । একদিন ট্রেন্ট অসুস্থ হয়ে পড়েন । বার্ধক্য জনিত অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে । তাকে আইসিইউ তে রাখা হয় । স্বামীর এই অবস্থা দেখে বৃদ্ধা এলিনা স্থির থাকতে পারেন নি । তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন । তার ব্রেন স্ট্রোক হয় । একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকেও । জ্ঞান হারানোর আগে এলিনা বলে যান তাকে যেন তার স্বামীর পাশের বিছানায় রাখার ব্যাবস্থা করা হয় । কারন ট্রেন্ট একা থাকতে ভয় পায় । এদিকে ট্রেন্টের অবস্থার উন্নতি হতে থাকে আর এলিনার অবস্থা খারাপ হতে থাকে । এই অবস্থায় স্বামীর ঠিক পাশের বিছানায় মারা যান এলিনা । মৃত্যুটা সইতে পারেন নি ট্রেন্ট । এর ঠিক ৩ মিনিট পর তিনিও মারা যান । মারা যাওয়ার আগে স্ত্রীর কপালে শেষ চুমু এঁকে দিয়েছিলেন ট্রেন্ট । এটাও ছিল একটা ভালোবাসার গল্প । এখনো কি ভালোবাসার প্রতি ঘৃণা আছে ? নতুন করে ভালবাসতে ইচ্ছে করে না ?
৩)
আসলে ভালোবাসার মাঝে কোন সমস্যা নাই । সমস্যা হইলো মানুষের মাঝে । মানুষই ভালোবাসার নামে প্রতারণা করে ,আবার এই মানুষই সত্যিকারের ভালোবাসার উদাহরন তৈরি করে । আমরা মানুষ চিনতে ভুল করি বিধায় ভালোবাসার মর্মটাও মাঝে মাঝে বদলে যায় । বদলে যায় জীবনের গল্পটাও । নচেৎ ভালোবাসায় কোন ভুল নাই :-)

#Bristi_patuiary

হ্যালো সোনাপাখি, তুমি কোথায়?

#রুমডেট

--হ্যালো সোনাপাখি, তুমি কোথায়?
--এই মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম আবির,সকাল সকাল ফোন কেন?
--তোমাকে মিস করছি জেরিন। অনেক বেশি।
--কেন,কাল সারারাতই তো কথা বললাম তোমার সাথে, সকাল না হতেই মিস করছো!!!
--হুম, কি করবো বলো। তোমাকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারছি না।
--ইশ রে,আমার বাবুটা!!! এই নাও, উ..ম্মা..হ। আদর করে দিলাম।
--সোনাপাখি, আজ একটু তাড়াতাড়ি বের হতে পারবে? বাসা একদম খালি। সবাই একটা অনুষ্ঠানে গেছে।সন্ধ্যার আগে কেউ ফিরবেনা।
--আমার আজ পরীক্ষা আছে আবির, তাছাড়া আম্মু টের পেলে মেরেই ফেলবে।
--জেরিন,তুমি আমাকে ভালবাসো না?
--এই,আম্মু আসছে। রাখি রাখি...
মিথ্যে বলে ফোনটা রেখে দিলো জেরিন। আবিরের সাথে ছয়মাস ধরে প্রেম করছে জেরিন। 
ধনী পরিবারের একমাত্র সন্তান আবির। খুব স্মার্ট আর পরিবারের একমাত্র সন্তান হওয়ায় দুহাতে টাকা খরচ করে আবির। জেরিনের কলেজে যাওয়ার পথে আবির একটা চায়ের দোকানের পাশে তার মোটরবাইক রেখে চা খেতে খেতে দাঁড়িয়ে থাকতো আর জেরিনের দিকে তাকিয়ে থাকতো। সেই থেকে আস্তে আস্তে পরিচয়, ফোন নাম্বার আদানপ্রদান, কথা, প্রেম ভালবাসার শুরু হয়।
জেরিনের আকস্মিকভাবে ফোন রেখে দেয়ায়,আবির আবার ফোন করলো-
--কি হলো জেরিন, তুমি কি আমায় ভালবাসো না?
--হুম,তোমাকে আমি অনেক বেশি ভালবাসি। তোমার চাইতেও বেশি।
--সত্যি তো?
--হুম,ভালবাসি,ভালবাসি,ভালবাসি!!!
--যদি তুমি আমাকে ভালবেসে থাক,তাইলে আজ আমার বাসায় আসতে হবে,একদম খালি বাসা, কেউ নেই। খুব একা একা লাগছে।
--আবির, আম্মু টের পেলে একদম মেরেই ফেলবে। 
--বুঝেছি, তুমি আমায় একটুও ভালবাসো না। যাও তোমার আসা লাগবে না।
এই বলে আবির ফোন রেখে দিলো। ফোন রেখে দেয়ায় জেরিন খুব কষ্ট পেতে লাগলো।
ভাবছে, আবিরকে মুখের এভাবে উপর না বলে দেয়া উচিত হয়নি। এই প্রথমইতো ডাকছিলো ওর বাসায়। বাসাও খালি ছিলো। সেতো ভালবাসে আমাকে। না বলা উচিত হয়নি।
আবার ফোন দিলো জেরিন-
--হ্যালো, আবির আমি আসছি। রমনাপার্কে এসে অপেক্ষা করবো। তারপর এখান থেকে তুমি এসে নিয়ে যাবে আমাকে। তবে এক ঘন্টার বেশি থাকতে পারবো না তোমার বাসায়।
--প্লিজ,দুই ঘন্টা থেকো সোনাপাখি।
--আচ্ছা, দেড় ঘন্টার এক মিনিটও বেশি নাহ।
--ওকে তুমি আসো, আমি রওয়ানা দিচ্ছি।
কপালে ছোট কাল টিপ, আর চোখে কাজল পড়লো জেরিন। আবিরের দেওয়া পিংক কালারের থ্রিপিছটা পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে। এই প্রথম সে রুমডেটে যাচ্ছে জেরিন। মোটা প্রলেপ দেওয়া কসমেটিক ভেদ করে ঘাম বেরিয়ে আসছে। থ্রিপিছের উপরে বোরকা পড়লো জেরিন, প্রতিদিন যেভাবে সে কলেজে যাবার জন্য বের হয়,সেভাবেই বেড়োচ্ছে। জেরিনের এমন তাড়াহুড়ো দেখে তার মা বললোঃ
--কিরে জেরিন, আজ এতো তাড়াতাড়ি কলেজে যাচ্ছিস কেন?
--আম্মু, আজ একটু কাজ আছে কলেজে, গ্রুপ স্টাডি করতে হবে আজকে, তাই স্যার তাড়াতাড়ি যেতে বলছে আজকে।
--ঘামছিস কেন এভাবে তুই?
--না, ইয়ে মানে... একটু তাড়াহুড়ো করেছি তো, তাই আরকি!!!
কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি করে রিক্সা করে বেড়িয়ে পড়লো জেরিন। রমনাপার্কে এসে বসে আছে, এখনো আবির আসেনি, আবির কে ফোন দিলো জেরিনঃ
--তুমি কোথায়, আমি রমনাপার্কে এসে বসে আছি।
--এইতো সোনাপাখি, আসছি আমি। একটু জ্যামে আছি, কিছুক্ষনের মধ্যেই পৌছে যাবো।
--আজ প্রথম রুমডেট, খুব ভয় হচ্ছে আমার। আম্মুকে মিথ্যা বলে বোকা বানিয়ে আসলাম। তাড়াতাড়ি করে এসে নিয়ে যাও আমাকে।
--ভয় পেয়ো না,এক্ষুনী আসছি আমি।
একটা গাছের নিচে থাকা বেঞ্চে বসে ফোনে কথা বলছিলো জেরিন। হঠাত করে পেছন থেকে ১৩/১৪ বছর বয়সী একটা মেয়ে আসলো। হাতে কিছু ফুলের মালা,আর ছোট ছোট কিছু ফুলের তোড়া!!!
--আফা, একটা ফুলের মালা নেন।
--এই সর,যাহ। আমি মালা-টালা কিনবো নাহ।
--একটা নেন না আফা!!
--তোকে যেতে বলছিনা, আমি মালা কিনবো না। আমি অপেক্ষা করছি একজনের জন্য।
--তাইলে দুইটা মালা নেন আফা। দুইজনের জন্য দুইটা।
--আজব তো!!! আমি একটা মালাই নিতে চাচ্ছি না, আর এখন বলতেছিস দুইটা নিতে!!! 
--আফা এমন করেন ক্যান, আপনেরা না কিনলে আমরা কি করে খামু। কি করে চলুম!!! 
--ক্যান, তোর বাপ মা নাই? 
--বাপ মা থাকলে কি আর আপনাগো পেছনে দৌড়াইয়া ফুল বেচি? জারজ বলতে পারেন,বাপ-মা চিনিনা। আফা তাইলে একটা পেকেট নেন, পঞ্চাশ টাহা দিয়েন।
--কিসের পেকেট? 
--আফা, ভাব নেন ক্যান? জানেন না বুঝি!!! আপনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন,তখন আমি পিছন থাইক্কা দাঁড়াইয়া সব শুনছি, রুমডেটে যাইবেন আইজ। এইসব কাহিনী প্রতিদিনই দেহি এইখানে।
--এই, তুই যাতো আমার কাছ থেকে। এ বয়সে অনেক পেকে গেছিস। 
--আপা পার্কে, রাস্তায়, ট্রাফিক সিগন্যালে ঘুরে ঘুরে ফুল বেচি। রংবেরঙ এর জোড়া জোড়া পাখি দেহি। পাকুম না তো কি!!! পেকেট নেন আর না নেন,একটা কথা বলি শুনবেন?
--না শুনবোনা,তুই যাহ এখান থেকে।
--বইলাই চইলা যাইমু, আর বিরক্ত করুম না।
--বল, বলে বিদায় হ।
--আফা, পেকেট না নেন সমইস্যা নাই। অনাকাঙ্ক্ষিত যে সন্তান আইবো,পিলিজ, ঐডারে নষ্ট(Abortion)না করে কোন আশ্রমে দিয়া দিয়েন। কিছুডা বড় হইয়া আমার মতো রাস্তায়,ট্রাফিক সিগন্যালে,পার্কে ঘুইরা ঘুইরা ফুল আর পেকেট বেচবো।
হওক না জারজ, তাতে কি!!!
জীবনের চেয়ে মূইল্যবান কিচ্ছু নাই।
ফুলওয়ালি এসব বলে চলে গেলো। জেরিন, মেয়েটার কথা শুনে ঝিম মেরে বসে আছে,আর ভাবছে কি বললো মেয়েটা!!! এসব কি করতে যাচ্ছি আমি।
আবির কি আমাকে ভালবাসে? না আমার.....
নাহ, আবির আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে চাচ্ছে, ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং...
ভালবাসি কি বা বাসিনা, তার প্রমান দিতে যদি রুম ডেটে যেতে হয় তবে সে কেমন ভালবাসে আমাকে?
আবিরের ফোনঃ
--সোনাপাখি, তুমি কোথায়?
--চলে যাচ্ছি আমি। তুমি ভালো থেকো...
--মানে কি জেরিন?
--আবির, যে ভালবাসার প্রমান দিতে আমাকে রুমডেট করতে হবে, সে ভালবাসা আমি চাই না।
--এই জেরিন তোমার কি হলো এখন?
হ্যালো... এই জেরিন... হ্যালো... হ্যালো.....



>>এই শুনতে পাচ্ছ? ঘড়ে লবণ নেই রান্না করবো কিভাবে?

>>এই শুনতে পাচ্ছ? ঘড়ে লবণ নেই রান্না
করবো কিভাবে?
--লবণ না থাকলে চিনি দিয়ে রান্না করো?
>>একদম ফাজলামো করবা না, যাও বাজার
থেকে লবণ নিয়ে আসো?
--আমি পারবো না,, এত সকালে শীতের
মধ্যে বাজারে যেতে পারব না।
>>বাজারে যেতে হবে না, দোকান
থেকে নিয়ে আসো?
---আমি পারব না?
>>কি বললা ,,তুমি আরেকবার বলো তো
জানু?
---না মানে,,আচ্ছা যাচ্ছি টাকা দেও?
>>টাকা আমি দিবো কেন হুমম
-তো আমার কাছে তো নাই?
<>সামান্য লবণ কেনার টাকা নাই,, তাহলে
বিয়ে করছো কেন হুমম??
--আচ্ছা যাচ্ছি। মেয়ে মানেই ঝগড়া।
<>কি..বললা শুভ?
--না কিছু না... তোমাকে অনেক সুন্দর
লাগছে আজ।
<> হইছে..পাম দিতে হবে না, যাও
দোকানে যাও.কোনরকম সিগারেট
খেলে ডিরেক্ট ডিবোর্স দিয়ে দিবো।
সোজা লবণ নিয়ে, নিজ দিকে চেয়ে
আসবা,,রাস্তায় কোন মেয়ের দিকে
তাকাবা না -মনে যেন থাকে।
--আচ্ছা মহারানী,যাহা হুকুম।
""
""
<>এই পাগলটাকে নিয়ে আর পাচ্ছি না।
কোন কাজ করতে চায় না,, একদম আলসে।
তবে এই পাগলটাকে রাগাতে আমার
হেব্বি মজা লাগে,, ঘড়ে লবণ আছে তবুও
তাকে দোকানে পাঠালাম,,এমন সকালে
কেও ঘুমিয়ে থাকে নাকি,,বউ টা কষ্ট করে
একলা একলা রান্না করতেছে সে দিকে
কোন খেয়ালি নেই।
আজিব ছেলে একটা-বিয়ের আগে কত্ত
রুমান্টিক কথা বলতো,, আর বিয়ের পর আস্ত
একটা সয়তান হইছে।
কোন রকম রুমান্টিকতা নেই তার বিতরে।
""
""
<> এত সময় লবণ আনতে লাগে?
-দোকান বন্ধ ছিলো জানু?
<>আহারে এত ভালবাসা,, মতলব কি?
--জানু তোমিও না, ভালবাসলেও দোষ না
ভাসলেও দোষ।
<>আচ্ছা হইছে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে
আসো
--বাবুনি একটা কথা বলি?
<> কি..?
--না মানে, মাত্র তো ৭ টা বাজে একটু
ঘুমিয়ে আসি প্লিজ?
<> আচ্ছা ঠিক ৮টার সময় যেন নাস্তার
টেবিলে দেখতে পাই।মনে থাকবে
তো? অন্যথায় পানিতে চোবাবো।
--হ্যা-১০০% মনে থাকবে।
:- তাহলে ঠিক আছে-যাও ঘুমাতে যাও।
.
.
--এই আমার কোলবালিশটা কই?
<>হি হি মনে মনে যা ভাবছি তাই হলো।
-- কি হলো?
<> ফেলে দিয়েছি।
- ফেলে দিয়েছো মানে?
<>হ্যা, ফেলে দিয়েছি।
কারনআমি সতীনের ঘড়
করতে পারবো না!
- এখানে সতীন আসলো কোথা থেকে?
<> (কলার ঝাপটে ধরে)
কোথা থেকে আসলো, তাই না???
এইতুমি সকালে এমন
কি স্বপ্নদেখছিলে যে কোলবালিশটা
জড়িয়ে ঘুমেরঘোরে মিটিমিটি
হাসছিলে? আর সেই জন্যই লবণ ঘড়ে থাকার
পরও দোকানে পাঠাইছি।
যেভাবে কোলবালিশকে জড়ায় ধরছো
সেভাবে তো কখনো আমাকেওজড়ায়
ধরোনি!
- হাহাহাহাহা, কি স্বপ্ন
দেখছিলাম তাতো জানি না,
তবে তোমার কথা শুনে খুব
হাসি পাচ্ছে। কোথায় কোলবালিশ
আর কোথায় বউ?
<> কি??????? এখন
আমারচেয়ে কোলবালিশ বড়
হয়ে গেলো?
- আমি কি সেটা বলেছি নাকি?
<> চুপ করো। আর
কোলবালিশের দরকার নাই।
- কি বলছো?
তাহলে ঘুমাবো কি করে?
তুমি তো জানো আমি এমনিতে
ঘুমাতে পারি না।
-
<>আমি থাকতে কোলবালিশের কি
দরকার শুনি? তোমার বুকে শুধুআমি
থাকবো।
- তাই বুঝি?
<> হুম।
- পাগলী বউ আমার!!কেমন
মেয়ে রে বাবা,কোলবালিশরেও
হিংসা করে!!
.